নিষ্ঠুরতা এড়াবো কী করে
পুঁজিবাদের নির্লজ্জ বর্বরতার প্রমাণ এখন যত্রতত্র পাওয়া যাচ্ছে। মিয়ানমারে যেমন প্যালেস্টাইনেও তেমনি। ইহুদিরা একদা নাৎসিদের হাতে ভয়াবহ গণহত্যার এক কর্মসূচির শিকার হয়েছিল। স্মরণ করলে গা শিউরে ওঠে। পুঁজিবাদী বিশ্ব ইচ্ছা করলে ইহুদিদের নিজেদের বিস্তৃত সাম্রাজ্যের যে কোনো একটা এলাকায় পুনর্বাসিত করতে পারত। ইহুদিরা কোনো এক জায়গাতে ছিল না, ছড়িয়ে-ছিটিয়েই ছিল। কিন্তু পুঁজিবাদী বিশ্ব ঠিক করল তাদের এনে রাখবে আরবভূমিতে। সে জন্য প্যালেস্টাইনের নিরীহ মানুষরা উৎখাত হলো এবং ইসরায়েল সেখানে আস্ত একটি রাষ্ট্র কায়েম করে ফেলল। প্যালেস্টাইনবাসী কোনো অপরাধ করেনি, কিন্তু তারা যে তাদের ভূমিতে আছে সেটাই হয়ে দাঁড়াল তাদের জন্য মস্ত বড় অপরাধ; অবিকল সেই অপরাধ যা মেষশাবকটি করেছিল। অভাগা প্যালেস্টাইনবাসী দখলদার ইসরায়েলকে প্রথমটায় রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকার করতে চায়নি, না-চাওয়াটা ছিল খুবই স্বাভাবিক। তারা যুদ্ধ করেছে। কিন্তু পুঁজিবাদীরা সবাই ইসরায়েলের পক্ষে; বেচারা প্যালেস্টাইনবাসী পারবে কেন? নিরুপায় হয়ে ইসরায়েলকে তারা মেনে নিয়েছে; বলেছে, ঠিক আছে, তোমরাও থাকো, আমরাও থাকি। দুটো রাষ্ট্রই থাক। মনের ভেতরে যাই থাকুক না কেন আমেরিকাও মুখে ওই ব্যবস্থাকেই সমাধান বলে জানিয়েছিল। কিন্তু ইসরায়েল তা মানবে কেন? সে কম কীসে? পুঁজিবাদী তো! সবসময়েই তার ইচ্ছা ছিল একচ্ছত্র রাষ্ট্র কায়েম করা, প্রয়োজনে প্যালেস্টাইনিদের নিজ ভূমিতে দাসে পরিণত করা। এখন ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সে পেয়ে গেছে বন্ধু হিসেবে। বন্ধু বলেছেন তেলআবিব নয়, জেরুজালেমই হবে ইসরায়েলের রাজধানী। অন্য কোনো আমেরিকান প্রেসিডেন্টই এত দূর অগ্রসর হননি। পুঁজিবাদ এগুচ্ছে বৈকি। মধ্যপ্রাচ্য কতটা উত্তপ্ত হবে, তার তাপে মানুষের কতটা ক্ষতি হবে, বর্ণবাদ ও ধর্মীয় মৌলবাদ কতটা উৎসাহ পাবে পুঁজিবাদের জন্য এসব কোনো বিবেচনার বিষয়ই নয়। ওদিকে পুঁজিবাদী ইসরায়েলিরা যে কতটুকু পূতপবিত্র বোঝা যায় তাদের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বেনজামিন নেতানিয়াহুর আচরণ থেকে। দুর্নীতির দায়ে তার বিচার হচ্ছে, তার দেশীয় আদালতেই।