
দেশজুড়ে এখন বৈশাখের দাবদাহ। গ্রামেগঞ্জে শিশুদের এই সময় ‘আয় আয়’ করে ডাকে জলাশয়। পঞ্চগড়ের কিশোর রাহুলচন্দ্র বণিককেও ডেকেছিল। তাই তো সে সোমবার দুপুরে কোচিং থেকে ফিরেই দুই প্রতিবেশী বন্ধুকে নিয়ে করতোয়ায় ঝাঁপ দিয়েছিল। ওরা জানত না, খননের কারণে নদী এখন অনেক গভীর। ফলে তিনজনই গভীর পানিতে তলিয়ে যেতে থাকে। পাশে কর্মরত শ্রমিকেরা দ্রুতই তিনজনকে উদ্ধার করেন। কিন্তু রাহুলকে বাঁচানো যায়নি।
এ দেশে প্রতিবছর গড়ে ১৪ হাজার শিশু পানিতে ডুবে মারা যায়। প্রতিদিন ৩৮ থেকে ৪০ জন। ইন্টারন্যাশনাল ড্রাউনিং রিসার্চ সেন্টার (আইডিআরসি) বাংলাদেশের ডিরেক্টর আমিনুর রহমান ক্ষতিটা আমাদের অন্যভাবে বোঝানোর চেষ্টা করেছেন, ‘ধরুন, একটি ক্লাসে ৪০ জন শিক্ষার্থী পড়ে। প্রতিদিন এমন একেকটি ক্লাসরুম খালি হয়ে যাচ্ছে।’
ভাবুন দেখি, স্কুলের দালান ধসে কাল যদি একটি শ্রেণিকক্ষের সব শিশু মারা যায়, তাহলে তার প্রতিক্রিয়াটা কী হবে? তোলপাড় শুরু হয়ে যাবে না? অথচ বছরের পর বছর পানিতে ডুবে প্রতিদিন প্রচুর শিশু মারা যাচ্ছে। অধিকাংশ মৃত্যুরই থানায় কোনো রিপোর্ট হয় না, ফলে পত্রিকাতেও আসে না। পত্রিকায় যে আসে না, তার চমৎকার একটা উদাহরণ বেসরকারি সংগঠন ‘সমষ্টি’র এক প্রতিবেদন। এতে বলা হয়েছে, গত ১৫ মাসে ৮০৮টি শিশু পানিতে ডুবে মারা গেছে, অর্থাৎ দিনে ২ জনের কম। এই হিসাব তারা বিভিন্ন পত্রিকায় গত এক বছরে প্রকাশিত খবর এক করে বের করেছে। তার মানে বাকি ৩৮ জনের খবর পত্রিকায় আসছেই না।
- ট্যাগ:
- মতামত
- পানিতে ডুবে মৃত্যু
- এনজিও
- সাঁতার