অসুস্থ রাজনীতির কবলে বাংলাদেশ
অসুস্থ রাজনীতির মহামারি অনেককেই ভারাক্রান্ত করেছে। দেশের রাজনীতির বর্তমান চেহারা-সুরত দেখে এরচেয়ে ভালো কোনো বিশেষণ এ মুহূর্ত মনে আসছে না। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীকে কেন্দ্র করে যেসব ঘটনা ঘটে গেল, তা আর যাই হোক সুস্থ রাজনীতির পরিচায়ক যে নয়, তা বিবেকবান মানুষদের বলে দিতে হবে না। অস্বীকার করা যাবে না, এই অসুস্থ রাজনীতির কবলে পড়ে আমাদের মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উৎসব অনেকটাই ম্লান হয়েছে। একদিকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের প্রকোপ বৃদ্ধি, অন্যদিকে হেফাজতে ইসলামের তাণ্ডবের কারণে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন সুষ্ঠুভাবে হতে পারেনি।
যে কোনো জাতির জন্য স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর একটি গৌরবময় ঘটনা। আমাদের জন্যও তাই। বিশেষত আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধের প্রত্যক্ষ সাক্ষী, তাদের কাছে এর তাৎপর্য একটু ভিন্ন মাত্রার। আবেগটাও একটু অন্যরকম। এক জনমে একটি জাতিরাষ্ট্রের জন্ম হতে দেখা এবং তার পঞ্চাশ বছরপূর্তি প্রত্যক্ষ করা কম সৌভাগ্যের নয়।
অনেক মুক্তিযোদ্ধা, স্বাধীনতা সংগ্রামী, প্রত্যক্ষদর্শীর ইতোমধ্যে জীবনাবসান হয়েছে। তারা দেশটি স্বাধীন করেছেন, স্বাধীন হতে দেখেছেন। কিন্তু সে স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পূর্ণ হওয়ার গৌরবময় ক্ষণটি প্রত্যক্ষ করতে পারলেন না। পঞ্চাশ বছরপূর্তির ক্ষণটিকে আড়ম্বরপূর্ণ ও আনন্দঘন পরিবেশে উদযাপনের আশা করেছিলাম। সব ভেদাভেদ ভুলে বাংলাদেশ পরিণত হবে মিলনমেলায়- এমন প্রত্যাশা ছিল সবার। কিন্তু দুর্ভাগ্য আমাদের, সে প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। রাজনৈতিক বিভেদ যে এর জন্য সর্বাংশে দায়ী তা বোধ করি বলার প্রয়োজন পড়ে না।