চিরনিদ্রায় শায়িত কবরী, লাল-সবুজে ঢাকলো সমাধি
রাজধানীর বনানী কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন বরেণ্য অভিনেত্রী সারাহ বেগম কবরীকে। শনিবার (১৭ এপ্রিল) দুপুর ২টার দিকে বনানী কবরস্থানে জানাজা ও গার্ড অব অনার প্রদান শেষে তাকে সমাহিত করা হয়।
এর আগে দুপুর ১২টার দিকে বাসায় নেওয়া হয় সারাহ বেগম কবরীকে। সেখানে কিছুক্ষণ রাখা হয় তাকে। পরে বাদ জোহর তার মরদেহ নেওয়া হয় বনানী কবরস্থানে। সেখানে নামাজে জানাজা শেষে তাকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। এ সময় সেখানে উপস্থিত হন তার দীর্ঘদিনের সহকর্মী, আত্মীয়-স্বজন, পরিবারের সদস্য ও শুভানুধ্যায়ীরা। এরপর সমাহিত করা হয় দেশের চলচ্চিত্রের এই উজ্জ্বল নক্ষত্রকে।
গার্ড অব অনার দেয়া হলো বীর মুক্তিযোদ্ধা কবরীকে
ঢাকাই সিনেমার মিষ্টি মেয়ে কবরীর মরদেহ এখন বনানী কবরস্থানে৷ সেখানেই চিরনিদ্রায় শায়িত হবেন তিনি৷ করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করা এ তারকার দাফনকাজে মানা হচ্ছে কড়া স্বাস্থ্যবিধি।
১৭ এপ্রিল দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কবরীর মরদেহ বনানী কবরস্থানে নিয়ে আসা হয়৷ সেখানে বাদ জোহর রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হবে কবরীকে। তার আগে মুক্তিযুদ্ধে এ নায়িকার অসামান্য অবদানকে স্মরণ করে তাকে গার্ড অব অনার দেয়া হয়েছে৷
কিংবদন্তী অভিনেত্রী কবরীর চিরবিদায়
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কিংবদন্তী অভিনেত্রী, চলচ্চিত্র নির্মাতা, সাবেক সাংসদ সারাহ বেগম কবরী পৃথিবীর রঙ্গমঞ্চ ছেড়ে চিরবিদায় নিলেন। রাজধানীর শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. ফারুক আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কবরী লাইফ সাপোর্টে ছিলেন। কিছুক্ষণ আগে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়েছে।”
তাঁর সাফল্যের শুরুটা হয়েছিল ‘সুতরাং’ ছবি দিয়ে। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকানোর প্রয়োজন পড়েনি। ‘ময়নামতি’, ‘তিতাস একটি নদীর নাম’, ‘সারেং বৌ’, ‘নীল আকাশের নীচে’, ‘সুজন সখী’র মতো ছবিগুলোয় দর্শকেরা অবাক বিস্ময়ে দেখেছেন বাংলাদেশের চিত্রজগতের অসামান্য এক তারকার তারকা হয়ে ওঠা। অভিনয়ে, প্রযোজনায়, পরিচালনায়—তাঁর সাত দশকের জীবনটা যেন আশ্চর্য সফলতার গল্প। তারপর সব ফেলে গতকাল শুক্রবার রাতে চলে যান না–ফেরার দেশে। তাঁকে স্মরণ করে আজ শনিবার আবার শুনি বাংলা চলচ্চিত্রে তাঁর আবিষ্কার–গল্প।
‘সুতরাং’ ছবির ‘জরিনা’ চরিত্রের জন্য একটি মেয়ে খুঁজছিলেন অভিনেতা সুভাষ দত্ত। এমন একটি মেয়ে, যিনি নায়িকা হবেন স্বয়ং সুভাষ দত্তেরই বিপরীতে। ছবির সংগীত পরিচালক সত্য সাহা কবরীর সন্ধান দিলেন সুভাষ দত্তকে। সত্য সাহা সে সময় সুভাষ দত্তকে বলেছিলেন, চট্টগ্রামে একটি মেয়ে আছে, নাম মীনা পাল। তাঁর উচ্চতাও বেশি না। মঞ্চে কাজ করে। সুভাষ দত্ত এরপরই সত্য সাহাকে নিয়ে বিমানে চট্টগ্রামে গেলেন। চট্টগ্রামের ডা. কামালের সঙ্গে কবরীর বাবার পরিচয় ছিল। ডা. কামালকে নিয়েই কবরীদের বাড়িতে গেলেন সুভাষ দত্ত।
‘দেশের চলচ্চিত্রে কবরী এক উজ্জ্বল নক্ষত্র’
বাংলা চলচ্চিত্রের বিখ্যাত অভিনেত্রী, নির্মাতা ও সাবেক সাংসদ সারাহ বেগম কবরীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এক শোকবার্তায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এ দেশের চলচ্চিত্রে কবরী এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। অভিনয়ের পাশাপাশি রাজনীতি ও সংস্কৃতি অঙ্গনে তাঁর অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
বাঙালির হৃদয়ে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন কবরী : পরিকল্পনামন্ত্রী
কিংবদন্তি অভিনেত্রী, চলচ্চিত্র নির্মাতা ও সাবেক এমপি সারাহ বেগম কবরীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। এক শোকবার্তায় পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘কবরী অনবদ্য অভিনয় ও সৃজনশীল কর্মের মাধ্যমে বাঙালির হৃদয়ে যে স্থান করে নিয়েছেন তা চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।’