প্রথম প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের সুবর্ণ জয়ন্তী
৫০ বছর আগে একাত্তরের ১১ এপ্রিল ছিল গণহত্যা, ধ্বংসযজ্ঞ, পাশবিকতা, লুট, ধর্ষণ, যুদ্ধ আর নারকীয়তার বিপরীতে বাঙালি জাতির জাগরণের, উত্তরণের, প্রতিরোধের, প্রতিশোধের, শত্রু হননের এক রক্ত-বারুদে মাখা দিন। দখলদার পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বাঙালি নিধনে এক দিন আগে ১০ এপ্রিল বাঙালি বংশোদ্ভূত পাকিস্তানিবাদী সমন্বয়ে ‘শান্তি কমিটি’ নামক গেস্টাপো বাহিনী গঠন করে এবং দেশব্যাপী তাদের সহায়তায় ধরপাকড়, ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও হত্যাকাণ্ড সংঘটনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। আর এই ১০ এপ্রিল কুষ্টিয়া সীমান্তে গঠিত হয় বাঙালি জাতির প্রথম স্বাধীন রাষ্ট্র গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ এবং তার প্রথম সরকার। সত্তরের নির্বাচনে বিজয়ী এমএনএ ও এমপিএদের সমন্বয়ে বাংলাদেশের গণপরিষদের প্রথম বৈঠক বসে। এই বৈঠকে রাষ্ট্র ও সরকার গঠন এবং বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র অনুমোদন করা হয়। বিশ্বের গণমাধ্যমগুলোতে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার গঠন এবং এর নেতৃত্বে নয়া রাষ্ট্রকে শত্রুমুক্ত করতে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার সংবাদ প্রচারিত হয়। বিশ্ববাসী সেদিন জেনে যায়, ‘যুদ্ধক্ষেত্রাস্তীর্ণ ধ্বংসাবশেষের মধ্য দিয়ে ধূলি-কাদা আর রক্তের ছাপ মুছে এক নতুন বাঙালি জাতি জন্ম নিল।’
আর এর এক দিন পর ১১ এপ্রিল জাতির উদ্দেশে প্রথম ভাষণ দিলেন বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ। আকাশবাণী শিলিগুড়ি ও কার্সিয়ং থেকে প্রচারিত এই ভাষণটি পরদিন আকাশবাণী কলকাতা প্রচার করেছিল। বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় ভাষণের অনুলিপি সাংবাদিকদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছিল। আর এই ১১ এপ্রিল ঢাকায় দখলদার পাকিস্তানি বাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডের কমান্ডার পদে দায়িত্ব নেয় খুনি জেনারেল নিয়াজি।