নাম হবে মাওলানা মামুনুল হক রিসোর্ট !

সারাক্ষণ মুহম্মদ শফিকুর রহমান প্রকাশিত: ১০ এপ্রিল ২০২১, ১১:০৩

একজন আলেম সমাজের ধর্মীয় নেতা। তিনি মুসলিম জনগোষ্ঠীকে ধর্মের পথে জীবনযাপন এবং পরকালের মুক্তির পথ দেখান। যে কারণে তাদের নবীর ওয়ারিশ বা বংশধর বলা হয়। আল-উলামাউ ওরাসাতুল আম্বিয়া। একজন উম্মি বা ধর্মীয় জ্ঞানবিহীন সাধারণ মানুষ পবিত্র কোরআন, হজরত মুহাম্মদ মোস্তফা (সা.)-এর হাদিস তথা ইসলাম সম্পর্কে যেটুকু জানেন, তাও একজন আলেমের কাছে শুনেই। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জন্ম হয় আরবে তথা আরবি ভাষাভাষী অঞ্চলে। যে কারণে পবিত্র কোরআন বা হাদিসের ভাষাও হয় আরবি। একইভাবে ইসলামের অন্য গ্রন্থাবলির ভাষাও বেশিভাগই হয় আরবি। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ফারসি, উর্দুও রয়েছে। অবশ্য বর্ষ পরিক্রমায় আজ কোরআন-হাদিস বাংলায় অনুবাদ হচ্ছে। একইভাবে ইসলামের অন্য গ্রন্থাবলিও এখন বাংলা ভাষায় পাওয়া যাচ্ছে। সেই সুবাদে একজন সাধারণ স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া মুসলমানও চাইলে সহজেই ইসলামিক জ্ঞান আহরণ করতে পারেন। তবে এখনো যেহেতু মাদ্রাসার ডিগ্রি নিয়ে সরকারি অফিস-আদালত কিংবা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে চাকরি পাওয়া যায় না, তাই খুব কম বাবা-মা সন্তানকে মাদ্রাসায় পাঠাচ্ছেন। একটা সময় ছিল পরিবারের সবচেয়ে ঢাল সন্তানটিকেই মাদ্রাসায় পাঠানো হতো। অথবা যারা মনে করতেন স্কুলে-কলেজে লেখাপড়ার খরচ চালানো কষ্টকর, তারা তাদের সন্তানদের মাদ্রাসায় পাঠাতেন। তখন মাদ্রাসা-শিক্ষিত বা আলেমদের চাকরি ছিল বড়জোর মাদ্রাসার শিক্ষক, মসজিদের ইমাম আর হাইস্কুলের ধর্মীয় শিক্ষক। যে কারণে অসচ্ছল পরিবারের মা-বাবারা মনে করতেন, মাদ্রাসায় পড়ালে প্রথমত, লজিং পাবে এবং এভাবে পেটটা বাঁচবে; দ্বিতীয়ত, মিলাদ পড়ে ওয়াজ করে যা পাবে, তাতে তার পড়ার খরচ হয়ে যাবে। বাবা-মাকে আর খরচ বহন করতে হবে না। আগে পাঁচ-দশ গ্রামের মাথায় একটা মাদ্রাসা থাকত। ছাত্রদের পাঁচ-ছয় মাইল হেঁটে একগাদা কিতাব কাঁধে করে মাদ্রাসায় যেতে হতো। লজিং ছাড়া উপায় ছিল না। আজ পরিস্থিতি পাল্টাচ্ছে। গ্রামে গ্রামে মাদ্রাসা এখন। বিশেষ করে স্বাধীনতার পর কোথাও কোথাও আওয়ামী লীগ নেতারা মাদ্রাসা গড়ে তোলেন। তাদের লক্ষ্য যতটা আল্লাহ-রাসুলের (সা.) নৈকট্য হাসিল, তার চেয়ে বেশি ছিল সামাজিকভাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে হত্যার পর মিলিটারি জিয়া ক্ষমতা দখল করে যখন বাংলাদেশেকে আবার পাকিস্তানি ভাবধারায় নেয়ার ষড়যন্ত্র করে, তখন মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত পাকিস্তান এবং পাকিস্তানের পাশাপাশি সৌদি আরব, কুয়েত, কাতারসহ বিভিন্ন ধনী দেশ বাংলাদেশে বস্তায় বস্তায় টাকা ঢালতে শুরু করে। মিলিটারি জিয়ার মানি ইজ নো প্রবলেম-এর সুবিধা পায় ওই সব মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠায়। আগে যেখানে এক থানায় ১-২টা কওমি, ৬-৭টা আলিয়া মাদ্রাসা দেখা যেত, এখন সেখানে গ্রামে গ্রামে, বাজারে-গঞ্জে মাদ্রাসা গড়ে উঠেছে। বাড়ি বাড়ি মসজিদ। এখন আর লজিংও থাকতে হয় না, লিল্লাহ বর্ডিং রয়েছে। অর্থের জোগান দেয় পেট্রোডলারের মালিকরা। কদিন আগে এক সাংবাদিক-বন্ধু বলছিলেন, হানিফ ফ্লাইওভারের পর থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ৭৭টি মাদ্রাসা গড়ে উঠেছে। ওই সব মাদ্রাসা গড়ে ওঠার পেছনে ওয়ান-ট্যাক শিক্ষিত মোল্লা-মাওলানাদের কর্মসংস্থানের বিষয়টিও রয়েছে। তাই একটা মসজিদ বানাতে পারলে অন্তত দুজন ইমাম, একজন মুয়াজ্জিন, একজন খাদেম বা রক্ষণাবেক্ষণকারীর চাকরি হবে। একটি দাখিল ও আলিম মাদ্রাসা বানানো গেলে অন্তত ১৪ জন শিক্ষক ও একজন দপ্তরি, একজন ক্লার্কের চাকরি হয়ে যায়। ফাজিল-কামিল মাদ্রাসা বানানো গেলে শিক্ষক-কর্মচারীর সংখ্যা আরো বেড়ে যাবে। তা ছাড়া একজন বিত্তবান মুসলমান মনে করেন, একটি মসজিদ বানাতে পারলে তিনি বেহেশতে যাবেন; একটি মাদ্রাসা বানাতে পারলেও পরকালে মুক্তি পাবেন। অর্থাৎ এসবই হলো ইসলামের খেদমত আর ইসলামের খেদমত করা মানে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন ও মহানবী (সা.)-এর প্রিয় হওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করা। কে না চাইবে আল্লাহ-রাসুলের নৈকট্য লাভ করতে। দুনিয়া কত দিন? বড়জোর ৬০, ৭০, ৮০, ৯০, ১০০ বছর; তারপর তো অনন্তকাল।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

এই সম্পর্কিত

আরও