ভয় করিনি জয় করেছি করোনাকে
অবশেষে মনে হচ্ছে মস্তিষ্কের কোষগুলো সক্রিয় হতে শুরু করেছে। হাত-পা-মাথা ও শরীরের বাকি সব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গও যেন আড়মোড়া ভেঙে জেগে উঠছে। জাগবে না কেন? আর কত ঘুমানো যায়। সেই গত বছরের নভেম্বর মাসের ২৬ তারিখ ভোর সোয়া পাঁচটায় করোনা-ভূতটা হঠাৎ আচমকা এক ঘুসিতে আমাকে ধরাশায়ী করে দিল। আমি মোটামুটি সুস্থ-সবল মানুষটা অন্যান্য দিনের মতো ভোরবেলা শয্যা ত্যাগ করে প্রক্ষালনাদি সারতে কেবল পা বাড়িয়েছি গোসলখানার ভেতর, এমন সময় অদৃশ্য করোনা-ভূতের আচমকা আক্রমণে আমি ছোটবেলার সেই মোহন সিরিজের ভাষায় যাকে বলে একেবারে পপাত ধরণিতল।
আমি ভাবলাম আমার বোধ হয় হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকজাতীয় কিছু হয়েছে। কিন্তু কই সে রকম কোনো উপসর্গ তো দেখতে পাচ্ছি না। বুকের বাঁ পাশ, ডান পাশ বা ‘আমার বুকের মধ্যিখানে মন যেখানে হৃদয় যেখানে’ কোথাও তো কোনো ব্যথা-ট্যথা নেই। স্ট্রোক করলে তো আমার জ্ঞান হারাবার কথা। আমি তো জ্ঞান হারাইনি। সব সময় যেমন জ্ঞানবুদ্ধি বিচার-বিবেচনার ঘাটতি ছিল আমার তেমনি আছে। আমি জোরে চিৎকার দিয়ে মশামাছি-তেলাপোকা-টিকটিকি ব্যতীত এই ফ্ল্যাটের অন্য অধিবাসী আমার একমেবাদ্বিতীয়ম সহধর্মিণীকে ডাক দিলাম। কিন্তু স্যরি, আমার স্বরযন্ত্রের সাউন্ড সিস্টেম কাজ করল না, গলা দিয়ে কেবল পাতিহাঁসের মতো ফ্যাঁঁসফ্যাঁস আওয়াজ বের হলো। পরক্ষণেই টের পেলাম এটা লোকাল নয়, গ্রিড সমস্যা। আমার সারা শরীরেই পাওয়ার ফেইলিওর হয়ে গেছে।