ফেসবুক পোস্টে এখনো জ্বলজ্বলে বিয়ের ছবি। বর-কনের হাস্যোজ্জ্বল মুখ। সময় গড়ালেও সেই সুখ-স্মৃতির আবেশ মুছে যায়নি। স্বপ্ন ডানা মেলছিল একটু একটু করে। জীবন-সংসার সাজানোর নানা পরিকল্পনা। সবে জীবন শুরুর এই সময়ই নেমে এলো অমানিশার অন্ধকার। শরীরে বাসা বাঁধে মরণব্যাধি। সুখের জীবন থেকে ছিটকে পড়ে একটি ফুল। থেমে যায় মেধাদীপ্ত এক তরুণীর জীবন চলা। প্রায় ৫ মাস ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করে অবশেষে হার মানেন ডাক্তার সানিরা হক। বৃহস্পতিবার বিকাল ৪টা ১০ মিনিটে ঢাকায় বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। এই হাসপাতালেরই চিকিৎসক ছিলেন তিনি। বিএডিসির অবসরপ্রাপ্ত আঞ্চলিক হিসাব নিয়ন্ত্রক ফজলুল হক খান দুলাল ও তাহমীনা বেগম লাভলীর দুই কন্যাসন্তানের মধ্যে বড় সানিরা। সানিরার একমাত্র মামা জাবেদ রহিম বিজন দৈনিক মানবজমিন-এর স্টাফ রিপোর্টার ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক। সানিরার জন্ম ১৯৮৮ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে। ঢাকার ভিকারুন নিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজ থেকে লেখাপড়া শেষ করে ভর্তি হন কুমুদিনী উইম্যান্স মেডিকেল কলেজে। ২০১৫ সালে ডাক্তারি পাস করেন। এরপরই বিয়ে হয় তার। স্বামী ডাক্তার নাসিম মোশারফ হোসেন রাজীব। বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে কর্মরত। তাদের সুখের সংসারের বয়স হয়েছিল মাত্র ৫ বছর। এর মধ্যে শোনা হয়নি মা ডাকও। জুন মাসের শেষে সানিরার ওভারীতে প্রথম টিউমারের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। যেখানে ক্যান্সারের জীবাণু মিলে। সেখান থেকে লিভারে ক্যান্সারের বিস্তার হয়। ক্রমেই জটিল হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। করোনার কারণে চিকিৎসাও ছিল কষ্টসাধ্য। শুরুতে ভারতের মুম্বাইয়ে নিয়ে যাওয়ার চিন্তা বাদ দিতে হয় ভিসা ও ফ্লাইট বন্ধ থাকায়। ঢাকাতে শুরু হয় চিকিৎসা। এর মধ্যে করোনার সঙ্গেও যুদ্ধ করতে হয় তাকে। সানিরাকে বাঁচিয়ে রাখার এক প্রাণান্ত লড়াইয়ে অবতীর্ণ হন তার ডাক্তার স্বামী, পরিবারের সদস্যরা। গত ৯ই নভেম্বর তাকে নিয়ে যাওয়া হয় মুম্বইয়ে। সেখান থেকে ২১শে নভেম্বর ঢাকায় ফিরে স্বামীগৃহে ২ দিন থেকে চলে আসেন পিতামাতার কাছে। পরিবারের সঙ্গে জীবনের শেষ ৪-৫টি দিন অতিবাহিত করেন। ১লা ডিসেম্বর শরীরের অবস্থায় তারতম্য হলে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। পরদিন দুপুরের পর থেকে দ্রুতই অবনতি ঘটতে থাকে তার অবস্থার। সিসিইউ থেকে লাইফ সাপোর্টে। কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে হাসিমাখা মুখে চেপে বসে ভীষণ যন্ত্রণা আর কষ্ট। বেঁচে থাকার সে কি প্রাণান্ত চেষ্টা। অন্তিম এ লড়াইয়ে হেরে যান সানিরা। সবাইকে কাঁদিয়ে ঢলে পড়লেন মৃত্যুর কোলে। ৩২ বছর বয়সী সানিরার মৃত্যু কাঁদিয়েছে হাজারো মানুষকে। আত্মীয়-পরিজন সবাই ভেঙ্গে পড়েছেন। শোকে এখন পাথর পরিবারের সদস্যরা।
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
We use cookies to ensure you get the best experience on our website.