পোশাক খাত ও টেকসই উন্নয়ন
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস আজ শুধু একটি বৈশ্বিক অতিমারিই নয়, বরং দ্রুত এটি অর্থনৈতিক মহামারিতে রূপ নিয়েছে, যার অন্যতম প্রধান শিকার তৈরি পোশাক খাত। করোনার প্রভাব দেশের সব শিল্প খাত ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকেই কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত করেছে, তবে এই দুর্যোগের ফলে আমাদের তৈরি পোশাক খাত যতটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তা বোধ করি এ শিল্পে এর আগে কখনো ঘটেনি।
করোনা মহামারির আগে থেকেই পোশাকশিল্প নানামুখী চ্যালেঞ্জের মধ্যে ছিল, পরে আরও খারাপ হয়। চলতি বছরের শুরুতে চীনে সংক্রমণ শুরু হলে কাঁচামালের অপর্যাপ্ততায় শিল্প হোঁচট খায়। তবে মূল আঘাত আসে মার্চের মাঝামাঝিতে, যখন আন্তর্জাতিক ক্রেতারা অর্ডার বাতিল করতে শুরু করেন। পোশাক খাতের শ্রমিকের স্বাস্থ্যগত নিরাপত্তার বিষয়টি অনুধাবন করে এবং সরকারের নির্দেশ অনুসরণ করে আমরা প্রায় দীর্ঘ দেড় মাস কারখানা বন্ধ রাখি। ফলে মার্চ, এপ্রিল ও মে মাসে প্রবৃদ্ধি (-) ২০ শতাংশ, (-) ৮৫ শতাংশ ও (-) ৬৩ শতাংশে নেমে এসেছিল। দীর্ঘ বিরতির পর ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের খুচরা পোশাক বিক্রয়ে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসতে থাকায় চাহিদা কিছুটা বাড়ে। তবে করোনার সময়ে বাতিল করা ৩১৮ কোটি ডলার মূল্যের অর্ডারের প্রায় ৯০ শতাংশ পুনর্বহালের মাধ্যমে রপ্তানিতে আপাতদৃষ্টে একটি গতি সঞ্চার হয়েছে বলে মনে হলেও তা কতটুকু টেকসই হবে, সে বিষয়ে যথেষ্ট অনিশ্চয়তা রয়েছে।