মেধাশূন্য হচ্ছে বাংলাদেশ!

সারাক্ষণ জাকারিয়া স্বপন প্রকাশিত: ২৫ অক্টোবর ২০২০, ১৪:০৭

বাংলাদেশ থেকে হঠাৎ করেই অনেক শিল্পী আমেরিকায় চলে গেছেন সাম্প্রতিক সময়ে। বিষয়টি হয়তো অনেকেই জানেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ ক্যাটাগরিতে তাদের গ্রিনকার্ড দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশের অনেক সেলিব্রিটি সেই সুযোগটা নিয়েছেন এবং অনেকেই ইতোমধ্যেই সেখানে বসবাস করতে শুরু করেছেন।

আমি এটার সমালোচনা করার জন্য লিখতে বসিনি। আমি শুধু বোঝার চেষ্টা করছি, তাদের ব্রেইনে নিশ্চয়ই এমন একটি লজিক এসেছে, যেই পয়েন্টে তারা মনে করেছেন, এই দেশে তাদের থাকাটা কিংবা তাদের বাচ্চাদের বেড়ে ওঠাটা কোনো অর্থ বহন করে না। এবং সেই যুক্তি নিশ্চয়ই এমন শক্তিশালী, যে কারণে তারা তাদের সমস্ত জীবনের শেকড়কে উপড়ে ফেলে এই বয়সে অন্য আরেকটি রাষ্ট্রে গিয়ে বসতি গড়ছেন।

আমি শুধু তাদের যুক্তিটুকু বোঝার চেষ্টা করছি। যৌবনে দেশ ছাড়া, আর প্রতিষ্ঠিত জীবনে দেশ ছাড়ার ভেতর অনেক পার্থক্য। যৌবনে সে জানে না, কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে সে। কিন্তু যখন আপনি দাঁড়িয়ে গেছেন, আপনি বেশ শক্তভাবে প্রতিষ্ঠিত, সমাজে বিশেষ অবস্থান রয়েছে এবং কোটি কোটি মানুষ যাদের ভক্ত- তারা যখন ভিন দেশে দলবেঁধে চলে যাচ্ছেন, তখন সেটাকে কর্নারকেস বলে উড়িয়ে দেয়া যাবে না। এটা দেশের ভেতরের কোনো সমস্যার আউটব্রাস্ট। কই কলকাতা থেকে এভাবে দলবেঁধে চলে গেছে শুনিনি তো। বলিউডের তারকারা দলবেঁধে দেশ ছেড়েছেন শুনেছেন আপনারা? নিশ্চয় কোথাও না কোথাও একটা ঝামেলা রয়েছে।

তারা কোনো না কোনোভাবে হতাশ। কিংবা এই সিস্টেমের ওপর আস্থা হারিয়ে ফেলেছেন। তাদের সন্তানদের এই সিস্টেমের কাছে রেখে যেতে চাননি। তারা এই সিস্টেম থেকে শেষ বয়সে এসে সরে পড়েছেন। কিন্তু কেন?


দুই.

সম্প্রতি সম্পাদক নাঈমুল ইসলাম খান তার কিছু এনালাইসিস সিরিজ আকারে প্রকাশ করছেন। আমি তার একটি এনালাইসিস হুবহু তুলে দিচ্ছি। আশা করছি, নাঈম ভাই রাগ করবেন না।

শিরোনাম: বাংলাদেশে সম্পাদকের মর্যাদা আশঙ্কাজনকভাবে কমছে।

[১] আমি এমনই সম্পাদক, যিনি সংবাদপত্রকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে আয়-রোজগার করেন। এমন কেউ কেউ করেন, কিন্তু মর্যাদা হারায় সকলে।

[২] বাংলাদেশে সম্পাদক চাঁদাবাজি করি, অসম্মানের কালো ছায়া পড়ে সকল সম্পাদকের ওপর।

[৩] বাংলাদেশের আমি একজন সম্পাদক বিভিন্ন ব্যবসায়ীর পক্ষে তদবির করি মন্ত্রী, সচিবের কাছে। মর্যাদা ভূলুণ্ঠিত হয় গোটা সম্পাদক সমাজের।

[৪] বাংলাদেশে আমি সম্পাদক নিজে এবং আমার সাংবাদিকদের দিয়ে ব্ল্যাকমেইলিং করে অর্থ উপার্জন করি। সম্পাদক হিসেবে আমাদের সকলের মাথা হেঁট হয়ে যায়।

[৫] আমার মতো কিছু সম্পাদক/সাংবাদিক মানুষ বা প্রতিষ্ঠানের চরিত্র হননে লিপ্ত হন, ভুক্তভোগীর কাছে অপরাধী হন নির্বিচারে সব সম্পাদক/সাংবাদিক।

[৬] বাংলাদেশে আমার মতো এমন সম্পাদকও আছেন যিনি এবং যার সাংবাদিকরা ইংরেজিতেও এক ঘণ্টা বলতে পারবেন না, লিখতেও পারবেন না এক পৃষ্ঠার ইংরেজি, কিন্তু তারা জাতীয় ইংরেজি দৈনিক প্রকাশ করেন এবং সরকারের মিডিয়া লিস্টে উচ্চ স্থান পেয়ে যান। গোটা সংবাদপত্রশিল্পের জন্যই এটা লজ্জাজনক।

[৭] টেলিভিশন কিংবা সংবাদপত্রে আমি এবং আমার মতোই সম্পাদক, এই সাংবাদিকতার পরিচয় দিয়ে বিদেশি দূতাবাস, দেশের মন্ত্রী কিংবা সচিবের ঘরে প্রবেশ করে সাংবাদিকতা বা সংবাদপত্র নিয়ে কোনো আলোচনায় বা আবদার জানাই না। তোষামোদি আর গাল-গল্পের ফাঁকে নিজের ব্যক্তিগত বা বেনামী বাণিজ্য বা অন্যের ব্যবসা আদায়ের জন্য তদবির করেন। এভাবে সম্পাদকের সম্মান থাকে কী?

[৮] সম্মানের জন্য দামি বাড়ি, গাড়ি, অফিস পাইক-পেয়াদা প্রয়োজন হয় না। অনেকের জানাশোনা যোগাযোগ, অনেকের খাতির, অনেকের আনুগত্যকে সম্মান বলে না। অনৈতিক সমর্থন সম্মান পরিপন্থী। আবার অনেকের অপছন্দ হওয়া মানেও অসম্মান নয়।

(এই প্রতিবেদনের অনুলেখক: ফাহমিদা তিশা)

একজন সিনিয়র সাংবাদিক যখন এই এনালাইসিস দেন, এর অর্থ হলো সংবাদমাধ্যম এবং সাংবাদিকতা শেষ। পিরিয়ড। বিগত ৫০ বছরে এটা ভালো হয়নি, উল্টো শেষ হয়েছে। আগে যে মানের এবং মেধাবীরা এই ক্ষেত্রে আসতেন, এখন ঠিক উল্টো। মেধাবীরা এই ক্ষেত্র ছেড়ে গেছেন, কিংবা দেশে আর মেধা নেই, যারা এই ক্ষেত্রটির হাল ধরতে পারতেন। কিংবা হাল ধরার অবস্থাটুকুও নেই।

এই কথাটুকু যারা মানতে পারবে না, তারা ওপরের ওই গোষ্ঠীর। ধন্যবাদ নাঈম ভাই, এভাবে বিষয়টা তুলে আনার জন্য। আমাদের যেহেতু আত্মসম্মান লোপ পেয়েছে, আপনার এবং আমার এই লেখা খুব সামান্যই কারো গায়ে লাগবে। একজন সাংবাদিকের যখন মর্যাদাটুকু শেষ, তখন তার আসলে সবই শেষ!

তিন.

বাংলাদেশে সাংবাদিকরা যেভাবে মর্যাদা হারিয়েছেন, তার চেয়েও বেশি হারিয়েছেন শিক্ষকরা। মর্যাদা যে একটা বিষয়, এটাই যখন কারো ভেতর কাজ করে না, তার পক্ষে তো সেটা বোঝা অসম্ভব। যেমন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার পক্ষে কি বোঝা সম্ভব আত্মসম্মান কী জিনিস?

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও