কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

সহজলভ্য হওয়া মাত্রই বাংলাদেশকে ভ্যাকসিন দেবে চীন

মানবজমিন প্রকাশিত: ২৪ অক্টোবর ২০২০, ০০:০০

চীনের উদ্ভাবিত করোনা ভ্যাকসিন যখনই সহজলভ্য হবে তা বাংলাদেশকে দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে টেলিফোন আলোচনায় ওয়াং ই এ কথা বলেন। তিনি এও জানান, ভ্যাকসিন দিয়ে বাংলাদেশের প্রয়োজনে পাশে থাকার সিদ্ধান্ত রয়েছে বেইজিংয়ের। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ফোনালাপে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়েও কথা বলেন তারা। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী ওই টেলিফোন আলাপে মিয়ানমারের নির্বাচনের পর অর্থাৎ নতুন সরকার গঠনের পরপরই বেইজিংয়ের মধ্যস্থতায় বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে বৈঠক (ত্রিদেশীয় বৈঠক) আয়োজনের কথা জানান চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। আগামী ডিসেম্বরে বেইজিংয়ে ওই বৈঠক হতে পারে বলে আভাস পেয়েছে ঢাকা। বাংলাদেশে অবস্থিত চীনের দূতাবাস এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পৃথক বিবৃতিতে ফোনালাপের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। সেগুনবাগিচার একটি সূত্র জানায়, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে আরো কার্যকর ভূমিকা রাখার জন্য চীনকে অনুরোধ করেছে বাংলাদেশ। বেইজিংয়ের বৈঠকে মিয়ানমারের কার্যকর নেতা অং সান সুচির অংশগ্রহণও চেয়েছে ঢাকা। উল্লেখ্য, রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক সহায়তা তহবিল সংগ্রহের বৈঠকে চীনকে রাখা হয়নি। অন্যদিকে ওই অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর যোগদানের কথা থাকলেও তার পরিবর্তে প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এমপি বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিয়েছেন।টেলিফোন আলাপ নিয়ে চীনের ভাষ্য: ঢাকাস্থ চীনা দূতাবাসের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে ফোনালাপ বিষয়ে প্রচারিত বিবৃতি মতে, চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই মন্ত্রী মোমেনকে বলেন, এটি চীন-বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্কের ৪৫ বছরপূর্তির বছর। এই বছরে দুই দেশের নেতারা পারস্পরিক যোগাযোগ এবং বোঝাপড়ার মধ্যে রয়েছেন। তারা বেইজিং প্রস্তাবিত উন্নয়ন উদ্যোগ বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ এগিয়ে নিতে সম্মত আছেন, যার মধ্য দিয়ে একে অন্যের আরো মজবুত সহযোগিতা এবং অভিন্ন উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন সম্ভব। চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ঢাকা-বেইজিং সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে অনেক আগেই। করোনার বিরুদ্ধে চলমান লড়াইয়ে এই সম্পর্ক আরো গাঢ় হয়েছে। চীনের উদ্ভাবিত (এখনও ট্রায়ালে আছে) করোনা ভ্যাকসিন যখনই সহজলভ্য হবে তা বাংলাদেশকে দিয়ে প্রয়োজনে পাশে থাকার সিদ্ধান্ত রয়েছে বেইজিংয়ের। চীনা বিবৃতি মতে, মন্ত্রী ওয়াং ই’কে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেন, গত ৪৫ বছরে বাংলাদেশ-চীন বন্ধুত্ব নিরবচ্ছিন্নভাবে বেড়ে এটি এখন অত্যন্ত গভীর হয়েছে। বাংলাদেশ ওয়ান চায়না পলিসি বা এক চীন নীতিতে বিশ্বাসী জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ-চীন পাশাপাশি দাঁড়াতে চায়। দুই দেশের পারস্পরিক সহযোগিতায় বাংলাদেশে যেসব বড় উন্নয়ন প্রকল্প চলমান তা ত্বরান্বিত করতে চায়। চীনা বিবৃতি মতে, দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী দ্রুত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিশ্চিতে গঠিত বাংলাদেশ-চীন-মিয়ানমার ত্রিদেশীয় ওয়ার্কিং গ্রুপ ম্যাকানিজমের সর্বোচ্চ ব্যবহারের বিষয়ে একমত হয়েছেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আনুষ্ঠানিকভাবে যা বলেছে: এদিকে ফোনালাপ বিষয়ে শুক্রবার একটি বিবৃতি প্রচার করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সিনিয়র তথ্য অফিসার মো. তৌহিদুল ইসলামের পাঠানো ওই বিজ্ঞপ্তির শিরোনাম ছিল “রোহিঙ্গাদের ফেরত নেয়া হবে বলে সমপ্রতি চীনকে মিয়ানমার আশ্বস্ত করেছে”। চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্টেট কাউন্সিলর ওয়াং ই’কে উদ্ধৃত করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয় মন্ত্রী বলেছেন, বাস্ত্ত্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে মিয়ানমারে ফেরত নেয়া হবে বলে সমপ্রতি  মিয়ানমার আবারো চীনকে আশ্বস্ত করেছে। চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বৃহস্পতিবার  সন্ধ্যায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেনের সঙ্গে টেলিফোনে আলাপকালে এ কথা বলেন। ওয়াং ই বলেন, চীন রোহিঙ্গা বিষয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে বিভিন্ন পর্যায়ে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছে। করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলে রোহিঙ্গাদের যাতে ফেরত নেয়া যায় সে লক্ষ্যে মিয়ানমার কাজ করবে বলে চীনকে তারা জানিয়েছে। মন্ত্রী বলেন, চীনকে মিয়ানমার জানিয়েছে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিষয়ে তারা বাংলাদেশের সঙ্গে দ্রুত আলোচনা শুরু করবে। মিয়ানমারের নির্বাচনের পর প্রথমত রাষ্ট্রদূত পর্যায়ে এবং পরবর্তীতে বাংলাদেশ, চীন ও মিয়ানমারের মন্ত্রী পর্যায়ের ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের উদ্যোগ নেয়া হবে বলে ওয়াং ই ড. মোমেনকে আশ্বস্ত করেন। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিষয়ে ঢাকায় প্রস্তুতিমূলক সিনিয়র কর্মকর্তা পর্যায়ের ত্রিপক্ষীয় বৈঠক দ্রুত শুরু করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।চীনের টিকা এবং অন্যান্য প্রসঙ্গ: ঢাকার সংবাদ বিজ্ঞপ্তি মতে চীনের টীকা বাংলাদেশ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পাবে বলে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেনকে অবহিত করেন। করোনা পরবর্তীকালে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে বাংলাদেশ ও চীন একসঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী বলে উল্লেখ করেন ওয়াং ই। করোনা মহামারি মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এ বিষয়ে বাংলাদেশের প্রতি চীনের সাহায্য অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি। করোনা মহামারির কারণে চীনের যেসব প্রকল্প স্থগিত বা ধীরগতি হয়েছে সেগুলো করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলে দ্রুত শেষ করা হবে বলে জানান ওয়াং ই। পিরোজপুরে চীনের নাগরিক হত্যার বিষয়ে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এ হত্যার দ্রুত বিচারের পাশাপাশি চীনের নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে বাংলাদেশ সরকারের পদক্ষেপে চীন আস্থাশীল। এ সময় ড. মোমেন উল্লেখ করেন, এ ঘটনায় প্রধান আসামিসহ দু’জন গ্রেপ্তার হয়েছে। দ্রুত বিচার নিশ্চিতে সরকার সচেষ্ট। চীনে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি ছাত্রছাত্রী ও গবেষকদের ভিসা নবায়নের বিষয়ে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে অনুরোধ জানান ড. মোমেন। এ বিষয়ে ওয়াং ই জানান, বিদেশিদের ফেরার বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি। সিদ্ধান্ত হলে বাংলাদেশিরা অগ্রাধিকার পাবে। বাংলাদেশিদের চীনের ভিসাপ্রাপ্তি এবং অন্যান্য সমস্যা দ্রুত সমাধানেরও আশ্বাস মিলেছে। এ সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রচিত  “আমার দেখা নয়াচীন” বইটি চীনা ভাষায় অনুবাদের জন্য চীন সরকারকে ধন্যবাদ জানান ড. মোমেন।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

এই সম্পর্কিত