কাননঘেরা বাড়ি
আমজাদের ধারণা স্মৃতি সত্যকে পূর্ণ ও স্থায়ীরূপে ধারণ করতে সক্ষম নয়। বরং নিয়ত পরিবর্তনশীল এই জগতে পুরাতন সত্যরা ক্রমশ নতুন সত্যের আড়ালে ঢাকা পড়ে যায়। যুদ্ধে পরাজিত সৈন্যদলের মত। যাদের বীরত্বগাঁথা ক্রমেই ইতিহাস থেকে হারিয়ে যায় বিজয়ী বাহিনীর বীর্যগাঁথার আড়ালে। অথবা বিস্মৃতিই স্মৃতিগুলোকে রেখে আসে রূপকথার সাত সমুদ্দুর, তেরো নদীর ওপারে। অন্তহীন কোন জলাশয়ের তলার গহীন অন্ধ কুঠুরিতে। সেখান থেকে অতীতের খণ্ডাংশ বা সংযোগহীন কোন চিহ্ন ছাড়া আর কোন কিছুকেই বর্তমানে তুলে আনা সম্ভব হয় না। তারপরেও চন্দনবাইশার যমুনার তীরে বসলেই আমজাদের ভেতরে একটি প্রবল অতীতমুখীতা ভর করে। অতীতের খণ্ডাংশ বা সংযোগহীন চিহ্নগুলো তখন খোলস ভেঙে এক এক করে হাজির হতে থাকে তার চোখের সামনে। এই সময়ে কেউ যদি আমজাদের সামনে এসে দাঁড়াত, তাহলে আমি নিশ্চিত যে, আমজাদকে তার কাছে মনে হত ভিন্ন কোন পৃথিবীর মানুষ!