দক্ষিণ সুদানে যুদ্ধপীড়িত নারী ও শিশুদের পাশে বাংলাদেশি নারী শান্তিরক্ষীরা

মানবজমিন দক্ষিণ সুদান প্রকাশিত: ২৭ আগস্ট ২০২০, ০০:০০

দক্ষিণ সুদানে যুদ্ধপীড়িত নারী ও শিশুদের পাশে থেকে নিবিড়ভাবে কাজ করছেন বাংলাদেশি নারী শান্তিরক্ষীরা। তাদের কাছে আস্থা ও ভরসার আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছেন তারা। পাশাপাশি মিশনে অস্থায়ী ক্যাম্প পরিচালনা, সীমানা নিরাপত্তা এবং নিরাপত্তা টহলসহ সকল ধরনের অপারেশনাল কর্মকাণ্ডেও অংশ নিচ্ছেন নারী শান্তিরক্ষীরা। দীর্ঘদিন যুদ্ধের ভয়াবহতা ও নির্মমতা নব্য প্রতিষ্ঠিত দক্ষিণ সুদানের আপামর জনগণের জীবনের প্রাণোচ্ছলতাকে ম্লান করে দিয়েছিল। তারা বাংলাদেশি নারী শান্তিরক্ষীদের কাছে পেয়ে প্রাণ খুলে সুখ দুঃখের কথা বলতে পারছেন। নারী শান্তিরক্ষীগণ আগ্রহ ভরে তাদের সমস্যাদি শুনে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছেন। সংশ্লিষ্টরা জানান, কন্টিনজেন্ট কমান্ডারের নিবিড় তত্ত্বাবধানে পরিচালিত নারী শান্তিরক্ষীদের এ দলে মেডিকেল অফিসার লে. কর্নেল মাসুমা তাসনিম, নারী শান্তিরক্ষীদের কমান্ডার মেজর আফরোজা এবং লজিস্টিক অফিসার মেজর তাজরিনসহ ১৬ জন নারী সদস্য কাজ করছেন। দক্ষিণ সুদানে মোতায়েনের আগে ইউনিট এবং বিপসটের (বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পিস সাপোর্ট অপারেশন ট্রেনিং) নিবিড় তত্ত্বাবধানে দক্ষতা উন্নয়ন ও শান্তিরক্ষা মিশন সংশ্লিষ্ট নানামুখী উন্নততর প্রশিক্ষণ নিয়েছেন তারা। নারী দলটিকে দায়িত্ব পালনের জন্য পরিপূর্ণভাবে উপযোগী করে গড়ে তোলা হয়েছে। তাদের ভূমিকায় ইতিমধ্যেই দক্ষিণ সুদানের জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে নিয়োজিত সদর দপ্তর, সেক্টর সদর দপ্তর ও ফিল্ড অফিসসহ সবার মনোযোগ আকর্ষণ করেছে। স্থানীয় প্রশাসন ও জনগণ বাংলাদেশি নারী শান্তিরক্ষীদের শুধু সাদরেই গ্রহণ করেননি বরং বাংলাদেশি এই নারী দলের কার্যক্রমকে উদাহরণ হিসাবে তুলে ধরা হচ্ছে। তারা নিজেদের নারী জনগোষ্ঠীকে সচেতন করে তুলছেন। দক্ষিণ সুদানের শান্তিরক্ষা মিশন থেকে জানানো হয়েছে, বিশ্বের যুদ্ধপীড়িত দেশগুলোতে শান্তিস্থাপনের বৈশ্বিক প্রচেষ্টার সমন্বিত উদ্যোগের অংশ হিসেবে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের সুনাম অনেক আগে থেকেই রয়েছে। এবার যোগ হয়েছে, বাংলাদেশের নারী শান্তিরক্ষীদের নাম। তারা দেশটিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে যাচ্ছেন। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর চিফ অব জেনারেল স্টাফ সম্প্রতি দক্ষিণ সুদান পরিদর্শন করেন। সেখানে তিনি বাংলাদেশি নারী শান্তিরক্ষীদের প্রদর্শিত দক্ষতা এবং অর্জিত সুনামের প্রশংসা করেন। সংশ্লিষ্টরা জানান, বিভিন্ন সময়ে আনমিস, এসআরএসজি, ফোর্স কমান্ডার এবং ডেপুটি ফোর্স কমান্ডারসহ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাগণও তাদের পরিদর্শনের সময় বাংলাদেশি নারী শান্তিরক্ষীদের ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেন। বাংলাদেশি নারী শান্তিরক্ষীদের তৎপরতা      পৃষ্ঠা ৫ কলাম ১আনমিস মিডিয়া যেমন ওয়েবসাইট, ফেসবুক, বেতার এবং সংবাদপত্র ইত্যাদিতে নিয়মিতভাবে প্রকাশিত হচ্ছে। দক্ষিণ সুদানে শান্তিরক্ষা মিশন সূত্র জানিয়েছে, ক্যাথলিক রেডিও নেটওয়ার্ক এ মাজক নামক স্থানে বাংলাদেশি নারী শান্তিরক্ষীদের সহায়তায় গবাদি পশু চিকিৎসা বিষয়ক প্রকাশিত সংবাদে চিকিৎসা গ্রহণকারী একজন স্থানীয় নারী পশুপালককে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, আমি এতদিন জানতাম না কেন আমাদের অসংখ্য গবাদি পশু মারা যায়। আজ আমাদের চক্ষু উন্মোচিত হয়েছে, আমরা ব্যানব্যাটের নারীদের নিকট থেকে যে ওষুধ এবং পরামর্শ পেয়েছি সেগুলো আমাদের জন্য অবশ্যই সহায়ক হচ্ছে। নারীদের সমতা নিয়ে আন্দোলনরত স্থানীয় নারী নেত্রীগণ বাংলাদেশি নারী শান্তিরক্ষীদের কর্মকাণ্ডে উদ্বুদ্ধ হয়ে ওয়াও আইনসভার ডেপুটি স্পিকার ও স্থানীয় নারী নেত্রী মিস আলেং ভিওলার নেতৃত্বাধীন নারী সংগঠনসমূহ বাংলাদেশি নারী শান্তিরক্ষী দলের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন সহযোগিতামূলক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। তারা বাংলাদেশি নারীদের সৈনিক পেশার মতো এমন কঠিন পেশায় দক্ষতা অর্জনের পাশাপাশি দক্ষিণ সুদানের মতো যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে দায়িত্ব পালনে অর্জিত সফলতা দেখে উদ্বুদ্ধ হন। তারা স্থানীয় নারীদের বাংলাদেশি নারীদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে দক্ষিণ সুদানের সেনাবাহিনীতে যোগদানে উদ্বুদ্ধ করেন। সংশ্লিষ্টরা জানান, দক্ষিণ সুদানের যুদ্ধক্লান্ত ও বিপর্যস্ত সমাজে যেখানে নারী ও শিশুরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেখানে বাংলাদেশি নারী শান্তিরক্ষীরা তাদের জন্য আশীর্বাদ হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে। তাদের সমন্বিত কর্মদক্ষতা দক্ষিণ সুদানের শান্তিরক্ষা কার্যক্রম পরিচালনায় সার্বিক কৌশল নির্ধারণসহ ক্ষতিগ্রস্ত নারী ও শিশুদের সমস্যা সমাধানের উপায় নির্ধারণে একটি সেতুবন্ধন রচনায় সক্ষম হয়েছে। দক্ষিণ সুদানে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে বৃহত্তর এবং টেকসই শান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের নারী কর্মকর্তারা অবদান রাখছেন।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

এই সম্পর্কিত