২০০৪ সালের ২১শে আগস্ট সন্ত্রাসবিরোধী জনসভায় অংশগ্রহণ করেন সাভারের মাহাবুবা পারভীন। সেদিন প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য শেষ হওয়া মাত্রই জয় বাংলা বলে স্লোগান দেবেন ঠিক সেই মুহূর্তেই প্রাণঘাতী গ্রেনেড বিস্ফোরিত হতে থাকে। চলে গুলিবর্ষণও। আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে নির্মিত অস্থায়ী মঞ্চে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও দুর্নীতিবিরোধী সমাবেশে চালানো হামলায় প্রয়াত প্রেসিডেন্ট জিল্লুর রহমানের স্ত্রী নারী নেত্রী আইভী রহমানসহ ২৬ জন নিহত হন। আহত হন কয়েকশ’ মানুষ। আহতদের মধ্যে যারা বেঁচে আছেন শরীরে অসংখ্য গ্রেনেডের স্প্রিন্টার নিয়ে প্রতিনিয়ত মৃত্যু যন্ত্রণায় ছটফট করছেন তারা। অনেকেই আবার চিরদিনের মতো পঙ্গু হয়ে গেছেন। ভাগ্যক্রমে বেঁচে যাওয়া সাভারের মাহাবুবা পারভীন শরীরে অসংখ্য স্প্রিন্টার নিয়ে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন। তার বাঁ হাত এখনো অচল, চোখে কম দেখেন, ডান কানে কম শোনেন, তার শরীরের চামড়ার ভেতরে ঘা হয়ে গেছে। কষ্ট হলেও মাহাবুবা পারভীন এখনো মাঝে মধ্যেই দলীয় বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে কন্যার মতো ভালোবাসেন। অথচ সাভারের বর্তমান কিংবা সাবেক সংসদ সদস্য এবং দলীয় নেতাকর্মীরা কেউই সহযোগিতা তো দূরের কথা ফোন করে খবরও নেন না। কান্নাজড়িত কণ্ঠে আহত মাহাবুবা পারভীন বলেন, আমি রাজনীতি করতে গিয়ে সাভারের নেতাকর্মীদের ভালোবাসা না পেলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আপার ভালোবাসা পেয়েছি। তিনি দুইবার দশ লাখ করে বিশ লাখ টাকা অনুদান দিয়েছেন এবং প্রতিমাসে চিকিৎসার জন্য দশ হাজার করে টাকা দিলেও আমার দলের নেতাকর্মীরা আমার জন্য কোনো ফান্ড তৈরি করেননি। বর্তমানে সাভার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল আলম রাজীব মাঝে মধ্যে আমার খোঁজখবর নেন। তাছাড়া, অন্য কেউ আমার খোঁজ নেন না। তিনি আরো বলেন, গ্রেনেড হামলায় আহত হয়ে মাটিতে পড়ে থাকার সময় শত শত লোক প্রাণ বাঁচাতে ছুটোছুটি করে তার শরীরের উপর দিয়ে গিয়েছে। বেঁচে থাকার কারণে আজও সেই ব্যথা তাকে দুঃসহ যন্ত্রণা দেয়। মাঝে মধ্যেই ব্যথার কারণে চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করলে আশেপাশের লোকজন জড়ো হয়ে যায়। এ জন্য গত মঙ্গলবারও পায়ের ব্যথার কারণে সিআরপি’তে গিয়ে টেস্ট করিয়ে চিকিৎসকের কাছ থেকে পরামর্শ ও থেরাপি নিয়ে এসেছেন। চিকিৎসক বলেছেনÑ তার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ব্যথার জন্য থেরাপি দিয়ে যেতে হবে। আমি বর্তমানে ঢাকা জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি। বিভিন্ন মিটিং, মিছিল ও দলীয় কর্মকা-ে অংশ নেয়ার জন্য আমাকে ঢাকা যেতে হয়। সাভারের নেতাকর্মীদের অনেকেরই একাধিক গাড়ি থাকলেও আমার কোনো গাড়ি নেই। তাদের কাছে আমি এতোই অবহেলিত যে, কেউ আমার খবর পর্যন্ত নেননি এবং কোনো ফান্ডও তৈরি করেননি। অথচ অসুস্থ হওয়ার আগে দলীয় সকল কর্মকা-ে আমি সবার আগে ছিলাম। আমি দুর্নীতি করবো না, ঘুষ খাবো না, কারণ প্রধানমন্ত্রীর বুকে আমার ছবি। দুর্নীতি, ঘুষ এগুলো আমাকে মানায় না। আমি ইতিহাসের পাতায় শ্রেষ্ঠ কর্মী হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য কোটি কোটি টাকার তদবির ফিরিয়ে দিয়েছি। আমি গ্রেনেড হামলা মামলার সাক্ষী। দলীয় কর্মসূচিতে যাওয়ার জন্য আমার কোনো গাড়ি নেই। তিনি আরো বলেন, আমার যতটুকু হায়াত আছে তা আমার নেত্রী শেখ হাসিনা আপার জন্য উৎসর্গ করলাম। আমার সুন্দর জীবনটা দেশ এবং দেশের মানুষের জন্য উৎসর্গ করে দিলাম। আমার চলাচলের ব্যবস্থা চাই। দলের সিনিয়র নেতাকর্মীদের কাছে সহযোগিতা আশা করি।
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
We use cookies to ensure you get the best experience on our website.