কালাইয়ে ডুবে আছে দেড়শ’ বিঘা কৃষিজমি

মানবজমিন কালাই প্রকাশিত: ১৯ আগস্ট ২০২০, ০০:০০

জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার আহম্মেদাবাদ ইউনিয়নের হারুনজ্ঞাগ্রামের প্রায় দেড়শ’ বিঘা কৃষিজমি এখন পানির নিচে ডুবে আছে। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় প্রায় তিন বছর ধরে ওই গ্রামের জমিগুলো পানিতে তলে থাকার কারণে কৃষকরা ফসল উৎপাদন করতে পারছেন না। এর মাঝেও অনেক কষ্ট করে ওইসব জমিতে ধানের চারা রোপণ করলেও তা পচে নষ্ট হচ্ছে। এছাড়াও থেমে থেমে আসা বৃষ্টির পানি জমে থাকার ফলে আগে থেকে রোপণকৃত ধানের চারাগুলো পানির নিচে ডুবে গিয়ে পচে নষ্ট হয়ে বিপাকে পড়ছেন গ্রামের অনেক কৃষক। তাদের চোখের সামনেই নষ্ট হয়ে গেছে শত শত বিঘা জমির ধানের চারা। ফলে কৃষকের বুকে জমছে চাপা আর্তনাদ। তাদের চোখে-মুখে ফসল হারানো শঙ্কার ছাপ। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, বর্ষা মৌসুমে উপজেলার হারুনজ্ঞাগ্রামের ছয়পাড়ার বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ করে দিয়েছে স্থানীয় প্রভাবশালীরা। তারা অপরিকল্পিতভাবে পুকুর খনন, যেখানে-সেখানে যে যার মতো বাড়ি-ঘর নির্মাণ আর এলাকার বিভিন্ন ব্রিজ ও কালভার্টের মুখ বন্ধ করে দেয়ার পর থেকে এলাকার কৃষিজমিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।সরজমিন জানা গেছে, উপজেলার আহম্মেদাবাদ ইউনিয়নের হারুনজ্ঞাগ্রামের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ফকিরপাড়া, সাগিদাপাড়া, সর্দারপাড়া, পুন্ডিতপাড়া, মন্ডরপাড়া ও খানপাড়ার আশেপাশে প্রায় দেড়শ বিঘা কৃষি জমি রয়েছে। ওই ছয়পাড়ার কৃষি জামির পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ থাকায় জমিগুলো বর্তমান পানির নিচে বছরের পর বছর ধরে ডুবে আছে। জমির পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকার ফলে প্রায় তিন বছর ধরে ওই গ্রামের কৃষকরা তাদের জমিতে ফসল উৎপাদন করতে পাড়ছেন না। এর মাঝেও অন্যের কাছ থেকে ধার-দেনা ও আশা নিয়ে কষ্ট করে ওইসব জমিতে ধানের চারা রোপণ করলেও রোপণকৃত চারাগুলো পানির নিচে তলে গিয়ে তা পচে নষ্ট হচ্ছে। পানিবন্দি থাকার ফলে ওই ৬ পাড়ার আশেপাশে বিভিন্ন প্রজাতির গাছও মারা যাচ্ছে। এছাড়া বর্ষা মৌসুমে একটু বৃষ্টি হলেই গ্রামের ভিতরে পানি ঢুকে দীর্ঘ সময় ধরে পানির নিচে তলিয়ে থাকে ওইসব পাড়ার রাস্তাগুলো। এর ফলে কৃষকদের উৎপাদিত ধান, আলু ও অন্যান্য কৃষিপণ্য হাট-বাজারে নিয়ে যেতে নানা সমস্যায় পড়তে হয় সেখানকার কৃষকদের। এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে ৬ পাড়ার বাসিন্দারা স্থানীয় প্রশাসনের দ্বারে ধরনা দিলেও এখনো কোনো সমাধান মেলেনি তাদের।উপজেলার হারুনজ্ঞাগ্রামের সর্দারপাড়া পলাশ ও পুণ্ডিতপাড়া সিরাজুলসহ অনেকেই বলেন, ছয়পাড়ার পানি নিষ্কাশনের জন্য সরকার নতুন করে ব্রিজ ও কালভার্ট নির্মাণ করেছেন। স্থানীয় প্রভাবশালীরা সেই ব্রিজ ও কালভার্টের মুখে মাটি দিয়ে বন্ধ করে দেয়ার পর থেকে এলাকার কৃষি জমিগুলো জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।এসব সত্যতা স্বীকার করে উপজেলার আহম্মেদাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার আজগর আলী বলেন, এই এলাকার ভুক্তভোগীরা কয়েক মাস আগে দরখাস্তের মাধ্যমে কালাই উপজেলা নির্বাহী অফিসকে বিষয়টি জানিয়েছিলেন। কিন্তু এখনো কোনো সমাধান মেলেনি।কালাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নীলিমা জাহান বলেন, ওই এলাকার জমিগুলো নিচু। একটু বৃষ্টি হলেই বৃষ্টির পানিতে জমিগুলো ডুবে যায়। জমি থেকে পানি বের হওয়ার জায়গাগুলো সব বন্ধ করে দেয়ার ফলে কিছু জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।কালাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মোবারক হোসেন পারভেজ মুঠোফোনে বলেন, ওই বিষয়টি জানার পর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে সেখানে পাঠিয়েছি। তিনি বিষয়টি দেখে-শুনে আসার পর, তার সঙ্গে কথা বলেই বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও