
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত জামালপুরের রাস্তাঘাট
এবারের বন্যায় জামালপুরের ৭ উপজেলা ও ৮ পৌরসভার বিভিন্ন রাস্তাঘাট লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। দীর্ঘ সময় বন্যার পানিতে ডুবে থাকা বিভিন্ন স্থানের পাকা-কাঁচা সড়কসহ ব্রিজ কালভার্ট ও বাঁধ ভেঙে জনদুর্ভোগ আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। বন্যার পানি নেমে গেলেও বন্যার ভয়াবহতার চিহ্ন এখনও রয়ে গেছে জনপথগুলোতে। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসণ অফিস সূত্রে জানা যায় এবারের বন্যায় জেলার মোট ৬৮টি ইউনিয়নের মধ্যে ৫৯টি ইউনিয়নের ৬৭৭টি গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যায় জেলার মোট পাঁচ লাখ ৬৩ হাজার ৩৬৭টি পরিবারের মধ্যে দুই লাখ ৪৮ হাজার ৬৩৪টি পরিবার বন্যায় আক্রান্ত হয়েছিল। এছাড়াও এবারের বন্যায় জেলায় ৩৮৬টি বাড়ি সম্পূর্ণভাবে ও ১৩ হাজার ৭৩৮টি বাড়ি আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যায় জেলার প্রায় সবগুলো সড়কেরই বেহাল দশা। কোথাও পুরো সড়ক আবার কোথাও বা আংশিক। খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, জেলার কোন উপজেলারই সড়ক অক্ষত অবস্থায় নেই। এবারের বন্যায় জেলার সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত উপজেলা দুটি হচ্ছে ইসলামপুর ও দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা। উপজেলা দু’টিতেই বন্যা দীর্ঘ সময় অবস্থান করায় এখানে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও বেশি। ইসলামপুর এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী মো. আমিনুল হক বলেন, এবারের বন্যা দীর্ঘ সময় অবস্থান করায় এ উপজেলায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমান খুব বেশি হয়েছে। তিনি বলেন, বন্যায় এ উপজেলার নোয়ারপাড়া, চিনাডুলী, পাথর্শী, কুলকান্দি ও বেলগাছা ইউনিয়ন সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যায় উপজেলায় মোট ২৩৮ কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে ১২০ কিলোমিটার বেশি আর বাকিটা আংশিক। এই ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলো সংস্কার করতে প্রায় এক’শ কোটি টাকা প্রয়োজন হবে বলেও তিনি জানান। এছাড়াও বন্যার কারনে এ উপজেলায় ২৭টি ব্রিজ ও কালভার্টের মধ্যে ৭টি ব্রিজ ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বাকিগুলো আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এগুলো সংস্কার করতে প্রায় ২০ কোটি টাকার প্রয়োজন হবে বলেও তিনি জানান। অপরদিকে, দেওয়ানগঞ্জ এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী মো. শাহেদ হোসেন জানান,ত ার উপজেলায় গেল বন্যায় ৮০ কিলোমিটার পাকা ও ৪০ কিলোমিটার কাঁচা সড়ক ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্র হয়েছে। এ ছাড়াও বন্যায় এ উপজেলায় ৩টি ব্রিজ ও ৭টি কালভার্টও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক সংস্কারের জন্য ৩০ কোটি টাকা আর ব্রিজ-কালভার্ট সংস্কারের জন্য আরো প্রায় ১০ কোটি টাকা প্রয়োজন হবে বলে তিনি জানান।ইসলামপুর পৌরসভার মেয়র আব্দুল কাদের সেখ বলেন, এবারের বন্যায় আমার পৌরসভার প্রায় ১০ কিলোমিটার পাকা ও কাঁচা সড়ক ভেঙে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত এই সড়কগুলো মেরামত করতে প্রায় ৫ কোটি টাকার প্রয়োজন হবে বলে তিনি জানান।