অর্থের সদ্ব্যবহার ও কাজের যথাযথ মান নিশ্চিত করা জরুরি

দৈনিক আজাদী সম্পাদকীয় প্রকাশিত: ১৮ আগস্ট ২০২০, ০৭:১৩

.tdi_2_b9a.td-a-rec-img{text-align:left}.tdi_2_b9a.td-a-rec-img img{margin:0 auto 0 0} (adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নে বাংলাদেশ চিরাচরিত ধারা থেকে বের হতে পারছে না। অর্থবছরের শুরু থেকে ঢিমেতালে শেষের দিকে কোনমতে তাড়াহুড়ো করে প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করার চেষ্টা এটিই যেন সাংবাৎসরিক নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। সদ্য বিদায়ী অর্থ বছরেও তার কোন ব্যতিক্রম হয়নি। এর ঠিক আগের অর্থ বছরে এডিপি বাস্তবায়ন হারও ব্যয়ে সরকার রেকর্ড করলেও গত অর্থবছরে এক্ষেত্রে বড় ধরনের ছেদ ঘটেছে। এটা অপ্রত্যাশিত ছিল না। কারণ, নভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব এডিপি বাস্তবায়ন হার কিছুটা কম করবেই। কিন্তু তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, বাস্তবায়ন হার সর্বোচ্চ ৪৫ শতাংশ থেকে এপ্রিলে বেড়ে হয়েছে ৪৯ শতাংশ। অর্থাৎ এক মাসে মাত্র ৪ শতাংশ বাস্তবায়ন হয়েছিল। মে মাসে এডিপি বাস্তবায়নের হার ৫৭ শতাংশে উন্নীত হয়। বছর শেষে এডিপি বাস্তবায়ন হয় ৮০ শতাংশ। সে হিসাবে এক মাসে ২৩ শতাংশ টাকা খরচ হয়েছে। এর অর্থ শেষ মাসেই এডিপির এক-চতুর্থাংশ ব্যয় হয়েছে। এটি অর্থের অপচয় ও কাজের নিম্নমানের বিষয়টি আবারও নতুন করে সামনে এনেছে। প্রায়ই দেখা যায়, নানা অজুহাতে সময়ক্ষেপণ চার অর্থ বছরের শেষের দিকে তড়িঘড়ি করে সরকারি কর্মসূচি ও প্রকল্পগুলোর কাজ শেষ করা হয়। ঠিকাদার ও সরবরাহকারীরা তখন অল্প সময়ে যেনতেন প্রকারে কাজ শেষ করেন বা কাজ পুরোটা না করেই বিল নিয়ে চলে যান। কাজের গুণগত মানও তখন নিশ্চিত করা যায় না। সবচেয়ে বড় ব্যাপারটা হলো, এতে ঠিকাদার, ব্যবসায়ী ও সংশ্লিষ্টদের দিক থেকে বড় ধরনের দুর্নীতির সুযোগ থেকে যায়। এডিপি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে ২০১৯-২০ অর্থ বছরেও একই রকম ঘটনারই প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে। সারা বছর কাজের কোন গতি নেই, হঠাৎ করে শেষের দিকে লক্ষণীয় মাত্রায় গতি বেড়ে গেছে। এক্ষেত্রে যথাযথ মান ও পেশাদারত্ব কতটা বজায় থেকেছে জনমনে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কাজেই আর্থিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে পুরো অর্থ বছর, বিশেষ করে শেষের দিকে কাজের পেশাদার অডিট হওয়া জরুরি। দেশে এডিপি বাস্তবায়নে শেষ মুহূর্তের তাড়াহুড়োর জন্য কিছু প্রাতিষ্ঠানিক ও পদ্ধতিগত দুর্বলতা বিরাজমান। এর একটি হলো ক্রয়সংক্রান্ত দীর্ঘসূত্রতা। অন্য উন্নয়নশীল দেশগুলোর মতো বিভিন্ন প্রকল্পে বাংলাদেশের ক্রয়ের একটি প্রধান অংশ সম্পন্ন হয় আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগিদের অনুমোদনকৃত ঋণ, অনুদান বা সহায়তার মাধ্যমে। কোনো কারণে ক্রয়প্রক্রিয়া এবং দাতাদের সঙ্গে চুক্তি সম্পাদনে দেরি হলে প্রকল্প বাস্তবায়ন পিছিয়ে পড়ে। আরেকটি পদ্ধতিগত বাধা হলো, ভূমি অধিগ্রহণ ও স্থান নির্বাচনে সৃষ্ট জটিলতা। কোন নির্মাণ কাজ ভূমি পাওয়া না গেলে শুরু করা যায় না। আর ভূমি অধিগ্রহণ উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর। তাছাড়া ভূমি অধিগ্রহণ একটি জটিল ইস্যুও। এর সঙ্গে আইনগত বিষয় যুক্ত থাকায় অনেক ক্ষেত্রে অনভিপ্রেত দেরি হয়। দক্ষ ও পর্যাপ্ত সংখ্যক প্রকল্প পরিচালক না পাওয়াও প্রকল্প বাস্তবায়নে অন্যতম বড় সমস্যা। অনেক ক্ষেত্রে বিভিন্ন জেলায় বাস্তবায়িত আধা ডজন বা আরো বেশি প্রকল্পের তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব দেওয়া হয় একজন প্রকল্প পরিচালককে। তার ওপর প্রকল্প পরিচালক পদে বারবার আনা হয় পরিবর্তন। স্বাভাবিকভাবে এভাবে যোগ্য প্রকল্প পরিচালকের ঘাটতি এবং তাদের উপর্যুপরি বদলি প্রকল্প বাস্তবায়নের গতি ব্যাহত করে। আরেকটি সমস্যা হলো, প্রভাবশালীদের প্রভাবে প্রয়োজনীয় সম্ভাব্যতা যাচাই না করে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক প্রকল্প গ্রহণ। বাস্তবায়নে ধীরগতি দূর করতে রাজনৈতিক বিবেচনা নয়, জনগণের চাহিদা চালিত প্রকল্প অনুমোদনের পরামর্শ দিয়েছে বিশেষজ্ঞরা। বাস্তবায়নজনিত দেরির ক্ষেত্রে অর্থবছর সংক্রান্ত একটি নীতিগত বিষয়ও যুক্ত। বাংলাদেশ অর্থবছর শুরু হয় জুলাইতে তখন বর্ষার মওসুম শুরু হয়ে যায়। ফলে অর্থ বছরের প্রথম দিকে কাজ শুরু করা কঠিন। ভারতে অর্থবছর হিসাব করা হয় ফেব্রুয়ারি-মার্চ থেকে। নিজস্ব আবহাওয়া জলবায়ুর সঙ্গে সংগতি রেখে আমাদের দেশেও অর্থবছর এগিয়ে আনা যায়। কাজেই এডিপি বাস্তবায়নে উপর্যুপরি দীর্ঘসূত্রতা দূরে পূর্বোক্ত বিষয়গুলোর সুষ্ঠু সুরাহা আবশ্যক। এতে কাজের মান, আর্থিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে বলে আমাদের বিশ্বাস।.tdi_3_5f6.td-a-rec-img{text-align:left}.tdi_3_5f6.td-a-rec-img img{margin:0 auto 0 0} (adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও