পুলিশের মামলায় আওয়ামী লীগের ১৩ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার

মানবজমিন আড়াইহাজার প্রকাশিত: ১৮ আগস্ট ২০২০, ০০:০০

আড়াইহাজারে পুলিশের কর্তব্য কাজে বাধা দেয়ার মামলায় সোমবার এক ইউপি সদস্য সহ স্থানীয় আওয়ামী লীগের ১৩ নেতাকর্মীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- খাগকান্দা ইউনিয়নের বাহেরচর এলাকার মৃত করিম প্রধানের ছেলে তোফাজ্জল হোসেন (৪৭)। তিনি স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা। মৃত আবুল কাসেমের ছেলে লোকমান (৪৫)। তিনি ৫নং ওয়ার্ড সদস্য। মৃত মোহাম্মদ আলীর ছেলে আবু সিদ্দিক ওরফে খোকন (৫০), সিদ্দিকের ছেলে শাহিন (২০), কাইরাইল মোড়া এলাকার রশীদের ছেলে পিয়ারিস (২৩), মৃত বাতেনের ছেলে মুকবল হোসেন (৪৯), নুরুল ইসলামের ছেলে গিয়াসউদ্দিন (৩২), সোবানের ছেলে মোশারফ হোসেন (৩২), কাকরাইল মোড়া এলাকার আলমাসের ছেলে নাঈম (২০) ও মৃত আউয়ালের ছেলে জাকারিয়া (৪২), বাহেরচর এলাকার মজিবুর রহমানের ছেলে ইসমাইল (২৫), শাহাবউদ্দিনের ছেলে আবু তাহের (৩৫), একই এলাকার আউয়ালের ছেলে হযরত আলী (৪০)। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গ্রেপ্তারকৃতরা সবাই আওয়ামী লীগের সমর্থক ও বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী। এর আগে চার শতাধিক অজ্ঞাত ব্যক্তির বিরুদ্ধে পুলিশ বাদি হয়ে একটি মামলা করে। মামলায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা তোফাজ্জল হোসেনকে প্রধান আসামি করা সহ আরও ১০ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। মামলায়  ৩০০ থেকে ৪০০ অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করা হয়। আড়াইহাজার থানার এসআই পলাশ কান্তি রায় বাদি হয়ে ১৬ আগস্ট রাতে মামলাটি করেন। আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনার সময় পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। এ সময় ধৃত আসামিরা পুলিশের কর্তব্য কাজে বাধা প্রদান করে। ১৭ই আগস্ট সকালে ফের দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। ১৬ই আগস্ট দুই গ্রুপের সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে পুলিশ শটগানের ৩২ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে। পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। ঘটনার পর থেকে ঘটনাস্থলে এখনো থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। উপজেলার খাগকান্দা ইউনিয়নের কাকরাইলমোড়া এলাকায় ৫নং ওয়ার্ডের সাধারণ সদস্য লোকমান ও একই ওয়ার্ডের সম্ভাব্য ইউপি সাধারণ সদস্য প্রার্থী জোলহাসের গ্রুপের মধ্যে দিনভর এই ঘটনা ঘটেছিল। প্রসঙ্গত. সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ‘ফেসবুকে’ এক গৃহবধূর নামে মানহানিকর স্ট্যাটাস দেয়াকে কেন্দ্র করে ১৬ই আগস্ট দুইগ্রুপের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বেলা ৯টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলা দফায় দফায় সংঘর্ষের সময় পরম্পরের ছোঁড়া ইটপাটকেল ও দেশীয় অস্ত্রের আঘাতে উভয় পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে অনেকেই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছেন। অনেকেই স্থানীয় বিভিন্ন সেবাকেন্দ্রে চিকিৎসা গ্রহণ করছেন। এ সময় উভয় পক্ষের অন্তত ২০০ শতাধিক বসতবাড়ি ও একটি মুদিদোকান ভাংচুর করা সহ লোটপাট করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। সংঘর্ষের সময় প্রতিপক্ষের হামলায় টেঁটাবিদ্ধ সবুজ, আবু ও নাঈমকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। আবুর অবস্থা আশঙ্কা জনক।  আহত আইনউদ্দিনের ভাতিজা সুমন নামে এক যুবক জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসুবকে ঘটনার দুই দিন আগে এক গৃহবধূর নামে রাজন নামে এক যুবক মানহারিকর স্টাটাস দেয়। পরে এনিয়ে প্রতিবাদ করা হয়। এরই জেরে ওই গৃহবধূর ছোট ছেলে আবু ছিদ্দিক (১৫) কে মারধর করা হয়। সে হোসেন আলীর ছেলে। রাস্তায় একা পেয়ে মারধর করে। এনিয়ে রোববার সকাল ৯টার দিকে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় জোলহাসের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে লোকমান মেম্বার ও তার লোকজনের বাড়িতে হামলা চালায়। এ সময় ৫০টি বসত ঘর ভাংচুর করা হয় এবং একটি মুদি দোকান লুটপাট করা হয়। অপরদিকে জোলহাসের ভাতিজা দুলাল বলেন, লোকমান মেম্বারের ১০০ থেকে ১৫০ জন লোক ১৪ই আগস্ট দিনভর অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মহড়া দেয়। এক পর্যায়ে তারা একটি ফলের বাগান কষ্ট করে। এতে প্রায় ২০ লাখ টাকার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিনি আরো বলেন, ১৬ই আগস্ট বিকালে লোকমান মেম্বারের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়ে আমাদের লোকজনের প্রায় শতাধিক বসতঘর ভাঙচুর করেছে। তিনি বলেন, সম্প্রতি গার্মেন্টের এক নারী কর্মীকে গণধর্ষণের পর থানায় মামলা হয়েছে। ধর্ষণকারীদের বিচার দাবি করায় জোলহাস ও তার লোকজন লোকজনের সঙ্গে লোকমান মেম্বার ও তার লোকজনের বিরোধের সৃষ্টি হয়। এরই জেরে তারা আমাদের বাড়িতে হামলা চালায়।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

এই সম্পর্কিত

আরও