করোনার প্রকোপে ব্যবসা নেই। অনেকে চাকরিতে থেকে ঠিকঠাক বেতনও পাচ্ছেন না। কিন্তু এর মধ্যেই গাজীপুরে ভুতুড়ে বিলের অভিযোগ উঠেছে বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বিরুদ্ধে। আগের চেয়ে কয়েকগুণ অতিরিক্ত বিল আদায় করা হচ্ছে। চলছে নৈরাজ্য আর গাফিলতি। ফলে বিদ্যুৎ বিলের চাপে দিশাহারা হয়ে পড়েছেন অনেক মানুষ। বাধ্য হয়েই এরই মাঝে কোথাও কোথাও মানববন্ধন ও বিক্ষোভ হয়েছে। অনেকেরই অভিযোগ বিদ্যুৎ ব্যবহার কম হয়। তবু দ্বিগুণ থেকে চার গুণ পর্যন্ত বিল এসেছে। গ্রাহকরা অতিরিক্ত বিলের বোঝা কমাতে সমপ্রতি বোর্ড বাজার এলাকার পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন। গ্রাহকদের দাবি এসব বিষয় বিবেচনা করে দ্রুত সমাধান করা উচিত। বন্ধ হওয়া দরকার গাজীপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির স্বেচ্ছাচারিতা। এমনকি মহানগরে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বিতরণ ব্যবস্থা মানতেও রাজি নয় অধিকাংশ মানুষ।গাজীপুর মহানগরের বাইমাইল এলাকার বাসিন্দা কৃষক লীগ নেতা দেলোয়ার হোসেন মুন্না। তিনি সংসার চালান ছোট ছোট টিনশেডের ঘর তৈরি করে ভাড়া দিয়ে। আগে যেখানে প্রতি মাসে বিদ্যুৎ বিল আসতো ৯ হাজার টাকা, এখন সেখানে এসেছে ২৫ হাজার টাকার মতো। বাসা ভাড়ার অধিকাংশ টাকা বিদ্যুৎ বিল পরিশোধে শেষ হয়ে যাবে, তাই তার সংসার চালানো কষ্টদায়ক হয়ে পড়েছে। এই পরিস্থিতি শুধু ওই কৃষকলীগ নেতারই নয়। নগরজুড়ে হাজার হাজার মানুষের একই চিত্র। গত তিন মাস ধরেই বাড়তি বিলের এই ধকল পোহাতে হচ্ছে অনেককেই। যারা বিত্তবান, তাদের সংকট না হলেও বিপাকে পড়েছেন আর্থিক টানাপড়েনে থাকা মানুষগুলো। তারা বলছেন, মহামারির মধ্যে যে সুবিবেচনা করা দরকার, তা করা হচ্ছে না। বরং হচ্ছে উল্টোটা। গাজীপুর শহরের পূর্ব ভুরুলিয়া এলাকার বাসিন্দা গাজীপুর টিআইবি এর সদস্য উন্নয়নকর্মী ফয়জুন্নেসা জানান, তারা বাসার একটি ফ্লোরে মাত্র দু’জন মানুষ বসবাস করেন। সেখানে তাদের এ মাসে বিদ্যুৎ বিল এসেছে প্রায় ১০ হাজার টাকা। স্কুল শিক্ষিকা আসমা আফরোজ জানান, তাদের একটি বাসায় গত মাসে কোনো বিদ্যুৎ ব্যবহার হয়নি, বাসায় কোনো লোকও ছিল না। তবুও ওই বাসার মিটারে বিদ্যুৎ বিল এসেছে ১ হাজার ১৪২ টাকা। এসব দেখার যেন কেউ নেই। চাকরিজীবী তারেক ইসলাম জানান, জেলার তারাগঞ্জ, মোক্তারপুর, নাশেরা এলাকার একই অবস্থা। আগে যেখানে মাসে বিদ্যুৎ বিল আসতো পাঁচশ’ টাকা, সেখানে এখন বিদ্যুৎ বিল আসছে ১৬০০-১৭০০ টাকা। নগরের ছায়াবিথী এলাকার বাসিন্দা শামসুন্নাহার বিথী জানান, তিনি পল্লী বিদ্যুতের প্রিপেইড মিটারে টাকা ঢুকিয়েছেন, মাত্র দু’দিনে ৫০০ টাকা শেষ হয়ে গেছে। দক্ষিণ ছায়াবিথী এলাকার বাসিন্দা মুলান ভূঁইয়া জানান, তার বাসায় আগে যেখানে ২,৩০০ টাকা বিল এসেছে, সেখানে গত মাসে এসেছে ১১,০০০ টাকা। বাড়তি বিলের বিষয়ে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন তিনি। এরকম অভিযোগ আরো অনেক মানুষের। তারা মনে করছেন, এই বাড়তি বিল ভুতুড়ে বিল। অসঙ্গত বিল। এর প্রতিকার হওয়া জরুরি।বাড়তি বিলের বিষয়ে গাজীপুর পল্লী বিদ্যুৎ বিভাগের সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার যুবরাজ চন্দ্র পাল বলেন, বিদ্যুৎ বিল আসলে বেশি আসছে না। করোনাকালীন সময়ে প্রায় সবাই বিদ্যুৎ বেশি ব্যবহার হয়েছে। আর বাড়তি বিল করেও পল্লী বিদ্যুতের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ব্যক্তিগত কোনো সুবিধা নেই। তাই অহেতুক বাড়তি বিল করার প্রশ্নই আসে না। এরপরও কোনো অভিযোগ পেলে সঙ্গে সঙ্গেই তার সমাধান করার চেষ্টা করছেন। এ নিয়ে গ্রাহকদের কোনো ভুল বোঝার সুযোগ নেই।
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
We use cookies to ensure you get the best experience on our website.