আড়াইহাজারে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপে সংঘর্ষ, নিহত ১
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে আওয়ামী লীগের স্থানীয় দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় আনোয়ার হোসেন (৪৭) নামে এক কৃষক নিহত হয়েছেন। তিনি উপজেলার কাদিরদিয়া পূর্বপাড়া এলাকার মৃত আবেদ আলীর ছেলে। এ ছাড়াও একই ঘটনায় আহত হয়েছেন নারী সহ অন্তত ১৫জন। আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সহ বিভিন্ন সেবা কেন্দ্রে ভর্তি করো হয়েছে। উচিতপুরা ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের সাধারণ সদস্য হানিফ ও ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি জাফর গ্রুপের সঙ্গে সংঘর্ষের এই ঘটনা ঘটেছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। খবর পেয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (আলফা-৩), টিএম মোশারফ, সিনিয়র (সি-সার্কেল) এএসপি মাহিন ফরাজি ও আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ঘটনার পর এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। উভয় পক্ষের মধ্যে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। নিহতের বড় ভাই আলী হোসেন জানান, ৫নং ওয়ার্ডের মেম্বার হানিফের সঙ্গে তার ভাই ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি জাফরের সঙ্গে রাজনৈতিক বিরোধ রয়েছে। এরই জেরে ৫ আগস্ট সন্ধ্যায় হানিফ মেম্বার তার দলবল নিয়ে তাদের বাড়িতে হামলা চালায়। এ সময় বসত ঘর ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন। ৬ আগস্ট ভোর সাড়ে ৫টার দিকে ফের হামলা চালানো হয়। এ সময় বাড়ির লোকজন বাড়িতে ছিল না। তিনি আরো বলেন, আমার ভাই আনোয়ারকে বাড়িতে একা পেয়ে বেধড়ক পেটানো হয়। পরে তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি করা হয়। এক পর্যায়ে তার মৃত্যু হয়। তিনি পেশায় কৃষক ছিলেন। তার দুই ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। তবে অভিযুক্ত হানিফ মেম্বার বলেন, ‘মৃত আনোয়ারের বাড়িতে কিছু লোক হামলা করেছে, এটা সত্য। তবে আনোয়ারকে আমি বা আমার কোনো লোকই মারধর করেনি। হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তার মৃত্যু হয়েছে। তিনি আরো বলেন, হামলায় আনোয়ারের বাড়িতে দুই থেকে চারটি বসত ঘর ভাঙচুর করা হয়েছে। আমার বাড়িতেও আনোয়ারের লোকজন হামলা চালিয়ে প্রায় ২৫ থেকে ৩০টি বসত ঘর ভাঙচুর করেছে।’ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে কত্যর্বরত ডাক্তার সারফুল আনোয়ার হোসেনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, নিহতের মাথায় আঘাত জনিত চিহ্ন রয়েছে। আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি আরো বলেন, খবর পাওয়ার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। পরিস্থিতি আপাতত শান্ত রয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। এ রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত মামলার প্রস্তুতি চলছে।