তিন প্রস্তাব নিয়ে সরকারের দ্বারস্থ কওমি মাদ্রাসাগুলো
তিনটি প্রস্তাব নিয়ে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছে দেশের কওমি মাদ্রাসাগুলো। করোনাভাইরাসের কারণে বন্ধ থাকা কোরআন শরীর মুখস্তকরণ কোর্স (হেফজ বিভাগ) চালু, শিক্ষার্থীদের কেন্দ্রীয় পরীক্ষাগ্রহণ ও আসন্ন ঈদুল আযহায় কোরবানির পশুর জবাই-সেবা ও চামড়াসংগ্রহ কার্যক্রম পরিচালনা করতে সরকারের অনুমতির অপেক্ষায় আছে বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া (বাংলাদেশ কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড-বেফাক)। ইতোমধ্যে সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনা ও কথা বলার পর পুরো বিষয়টি এখন সরকারপ্রধানের সম্মতির ওপর নির্ভর করছে বলে জানিয়েছেন কওমি মাদ্রাসার সিনিয়র কয়েকজন দায়িত্বশীল।
বেফাক ও অন্যান্য বোর্ডের একাধিক দায়িত্বশীলের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে কওমি মাদ্রাসা খুলে দেওয়ার বিষয়ে সরকারের অনুমতি নিয়ে দফায়-দফায় কয়েকজন সচিব, একাধিক মন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেছেন আলেমরা। এরই মধ্যে গত বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে দেখা করেছেন কয়েকজন আলেম।বেফাকের সূত্রে জানা গেছে, গত শনিবার রাজধানীর কাজলায় বেফাকের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে (৪ জুলাই) বোর্ডের নির্বাহী পরিষদের (মজলিসে আমেলা) বৈঠক হয়েছে। আর্থিকভাবে দুর্বল কওমি মাদ্রাসাগুলোকে সর্বমোট ৫ কোটি টাকা অনুদান দেওয়ার প্রস্তাব গৃহীত হয় সভায়।
পুরো অর্থই বেফাকের ফান্ড থেকে ব্যয় করা হবে বলে নির্বাহী পরিষদের অনুমোদনের প্রয়োজন থাকায় শনিবার বৈঠক হয়। এই বৈঠকে কওমি মাদ্রাসাগুলোর পরীক্ষা ও কোরবানির ঈদে পশু জবাই-সেবা ও চামড়া সংগ্রহের বিষয়টি সামনে রেখে তিন সদস্যের একটি কমিটিও গঠন করেছে বেফাক। বিশেষ এই কমিটির সদস্যরা হলেন- মাওলানা নূরুল আমীন, মাওলানা বাহাউদ্দিন জাকারিয়া ও মাওলানা মাহফুজুল হক।বেফাকের সহ সভাপতি মাওলানা বাহাউদ্দিন জাকারিয়া বাংলা ট্রিবিউনের সঙ্গে বিস্তারিত আলাপ করেন।
তিনি বলেন, ‘রমজানের আগে থেকে কওমি মাদ্রাসাগুলো বন্ধ অবস্থায় রয়েছে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে হেফজখানার জন্য। কোরআন শরীফ তো বারবার পড়ে শিখতে হয়, মুখস্ত করতে হয়, সিলেবাসের পেছনের পড়া বারবার পড়তে হয়, সে কারণে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকলে শিক্ষার্থীদের ওপর চাপ তৈরি হচ্ছে।’‘এ কারণে হেফজখানাগুলো খুলে দেওয়ার জন্য আমরা সরকারের কাছে আবেদন করেছি। সম্পূর্ণ স্বাস্থ্যবিধি মেনে এই কার্যক্রমটি আমরা পরিচালনা করতে চাই।’ বলেও জানান ঢাকার আরজাবাদ মাদ্রাসার প্রবীণ এই শিক্ষক।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পরিচালক ড. সৈয়দ শাহএমরানের একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, সারাদেশে ১২ হাজারের ওপরে হেফজখানা রয়েছে।মাওলানা জাকারিয়া আরও বলেন, ‘কেন্দ্রীয় পরীক্ষাগ্রহণ প্রক্রিয়া গত রমজানের আগে নেওয়া সম্ভব হয়নি। আর যেহেতু বোর্ডে সীমিত সংখ্যক ক্লাসের পরীক্ষা হয়, সেক্ষেত্রে স্থগিত থাকা পরীক্ষাগুলো আমরা নিতে চাই। এজন্যও মাদ্রাসা খোলার প্রয়োজন।’তিনি আরও বলছিলেন, ‘করোনাভাইরাসের কারণে কার্যক্রম গত কয়েক মাস ধরে বন্ধ থাকায় মাদ্রাসাগুলো আর্থিক সংকটের মুখোমুখি হয়ে পড়েছে।
ফলে আগামী কোরবানির সময় যদি মাদ্রাসাগুলো চামড়াসংগ্রহ করতে না পারে, তাহলে আর্থিক সংকট প্রকট হবে। একইসঙ্গে কোরবানির পশু জবাই করে দেওয়ার মধ্য দিয়ে কওমি মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা মানুষের সেবাও করে থাকেন।’ সবমিলিয়ে এই তিনটি বিষয় নিয়েই তারা সরকারের কাছে অনুমতি চেয়েছেন বলে জানান মাওলানা বাহাউদ্দিন জাকারিয়া।
বেফাকের ঊর্ধ্বতন একাধিক কর্মকর্তা জানান, ইতোমধ্যে সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। সর্বশেষ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে বিষয়টি সরকারপ্রধান সিদ্ধান্ত দেবেন বলে আলেমদেরকে জানানো হয়েছে। এরআগে, গত ১ জুন কওমি মাদ্রাসাগুলোকে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করে অফিস খোলার অনুমতি দেয় ইসলামিক ফাউন্ডেশন।
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
We use cookies to ensure you get the best experience on our website.