সাক্ষ্য দিতে এনবিআরে চার জাতীয় শ্যুটার
মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে স্থবির পুরো বিশ্ব। এ ভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নেমেছে দেশের ১৭ কোটি মানুষ। খুব প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বের হতেও অনুৎসাহী করা হচ্ছে সরকার থেকে। অথচ এমন অবস্থায় কোন এক আবদুল কাদেরের দেয়া উড়ো চিঠির কারণেই জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) অফিসে দৌঁড়াতে হচ্ছে দেশের শ্যুটারদের। রোববার চার শ্যুটার আবদুল্লাহেল বাকী, অর্নব শারার লাদিফ, রাব্বি হাসান মুন্না ও রিসালাতুল ইসলামকে এনবিআরে গিয়ে সাক্ষ্য দিতে হয়েছে।
অভিযোগ উঠেছে এর নেপথ্যে কাজ করছেন ফেডারেশনের এক শীর্ষ কর্মকর্তা। ২০১৭ সালে রাইফেল তৈরীর প্রতিষ্ঠান ওয়ালথার থেকে পাওয়া উপহার ৮টি রাইফেল নিয়ে দেশে ফিরেছিলেন শ্যুটাররা। অথচ আজ তিন বছর পর এক উড়ো চিঠির কারণে এনবিআরে সাক্ষ্য দিতে যেতে হয়েছে এ শ্যুটারদের। এ নিয়ে চরম বিব্রত শুটার অর্নব শারার লাদিফ। ‘মূলত ডেনমার্কের কোচ ক্লাভস ক্রিস্টেনসেনের সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকায় ওয়ালথার কোম্পানী আমাদের আটটি রাইফেল উপহার দেয়। যা আমরাই নিয়ে এসেছি। বিমান বন্দরে আমাদের রাইফেল দেখেছেন কর্মকর্তারা। তারা কিছুই বলেননি। আমরাও জানতাম না যে, এয়ার রাইফেলের জন্য ট্যাক্স দিতে হয়। অথচ আজ আমাদের বলা হচ্ছে চোরাকারবারি।
এটা একটি সুস্থ মানুষ কিভাবে বলতে পারে? আমরাতো দেশের তারকা ক্রীড়াবিদ। ১২ কেজি ওজনের চার ফুট লম্বা রাইফেল তো আর পকেটে পুরে আনা যায় না। উল্টো হ্যান্ডলিং চার্জ দিয়েছি। বিভিন্ন ট্রানজিট ঘুরেও এসেছি। অথচ কেউ কিছু বলেনি। আর এখন দেশের মাটিতে আমাদের ট্যাক্স দিতে হবে। দিতে হলে দিব। কিন্তু চোরাকারবারি কেন বলা হল। আমি ইয়ুথ অলিম্পিকে কোটা প্লেস করেছি এই রাইফেল দিয়ে খেলেই। দেশের জন্য এই সম্মানটা চোরাকারবারির মধ্যে পড়ে গেল না? এটা খুবই হতাশাজনক আমাদের জন্য’। তবে এনবিআরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কি কথা হয়েছে, তা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন শ্যুটাররা। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ শুটিং স্পোর্ট ফেডারেশনের মহাসচিব ইন্তেখাবুল হামিদ অপুকে হেয় করার উদ্দেশ্যে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয় এবং সেই কমিটি মনগড়া রিপোর্ট দেয় বলে জানা গেছে। সেখানে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে গুলি, অস্ত্র ক্রয়-বিক্রয়ের ব্যাপারে মহাসচিবের যোগসাজশ দেখানো হয়েছে। তদন্ত রিপোর্টের ব্যাপারে ইন্তেখাবুল হামিদ বলেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে আমি স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতার আদর্শ ধারণ করি ও সর্বোচ্চ চর্চা করি।
তদন্ত কমিটির কাজে আমি সর্বোচ্চ সহায়তা করেছি। তদন্ত কমিটিকে আমি একটি প্রতিবেদন দিয়েছি। আমার প্রতিবেদনের মূল বিষয়গুলোও সবাইকে জানানো উচিত। সেগুলো না জানিয়ে শুধু উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে কয়েকজন ব্যক্তি স্বার্থ রক্ষার্থে ১০টি পয়েন্টের পর্যবেক্ষণ ফলাও করে প্রচার করছে। যা সম্পূর্ণ অর্থে ব্যক্তি স্বার্থ হাছিলের জন্য এবং শুটিংয়ের স্বার্থ পরিপন্থী’। শুটিং সংশ্লিষ্টদের ধারণা, আগামী নির্বাচনে মহাসচিব পদে ইন্তেখাবুল হামিদ যেন না দাড়াতে পারেন, সে জন্যই এ রকম চক্রান্ত করা হচ্ছে। মহাসচিবের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে ফায়দা লুটার চেষ্টা করছে একটি সিন্ডিকেট। যে সিন্ডিকেটে রয়েছেন ফেডারেশনের এক প্রভাবশালী কর্মকর্তা ও তিন সাবেক শ্যুটার।