কর্মসংস্থানের উদ্যোগ ও কর্মরতদের দক্ষতা বৃদ্ধি দরকার
বৈশ্বিক করোনা মহামারির কারণে দেশে বিদেশে কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে টালমাটাল অবস্থা হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরম্ভ করে সব দেশেই বেকার সমস্যা দিনে দিনে বেড়েই চলেছে। বাংলাদেশ এর ব্যতিক্রম না হলেও সরকার কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করেছে। কর্মসংস্থান সৃষ্টির উদ্যোগ নিলেও করোনা মহামারি এটির বাস্তবায়নকে অনেকটা জটিল করে তুলেছে। ‘জীবন ও জীবিকা’ দুয়ের মধ্যে সমন্বয় সাধনের প্রয়াস সরকারপ্রধান গ্রহণ করেছেন। যারা বাস্তবায়ন করবেন তাদের অবশ্যই আন্তরিক হতে হবে।
এবারের বাজেট আলোচনায় গ্রামীণ এলাকায় উদ্যোক্তা তৈরির বিষয়টির ওপর বেশ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। উদ্যোক্তা উন্নয়নে ব্যাংকিং সুযোগ-সুবিধা গ্রামীণ এলাকা পর্যন্ত বিস্তৃত করা হয়েছে। এখন এই সুযোগ-সুবিধা কিভাবে পরিকল্পিত উপায়ে কাজে লাগানো যায়, সে জন্য আর্থিক ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাকে সরকারের প্রশাসনযন্ত্রের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে কাজ করতে হবে। ইতোমধ্যে শহর ছেড়ে গ্রামে আবার অনেকে স্থানান্তরিত হয়েছে।
স্থানীয় পর্যায়ে ডাটাবেজ তৈরি করে সেখানে যারা আবার পুনরায় ফেরত যাচ্ছেন, তাদের ডাটা সংরক্ষণের পাশাপাশি গ্রামীণ এলাকায় শিক্ষিত ও অশিক্ষিত বেকার এবং সদ্য যারা কর্ম হারাচ্ছেন তাদের ডাটাবেজ তৈরি করতে হবে। ডাটাবেজ তৈরির পাশাপাশি কর্মপ্রত্যাশীদের যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা এবং কি ধরনের কর্ম করতে ইচ্ছুক সে বিষয়ে একটি সম্যক ধারণা নিয়ে সুন্দর করে এনটিটি রিলেশনশিপ ডায়াগ্রাম তৈরি করে তাদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও কর্মসংস্থানের উদ্যোগ স্থানীয় পর্যায়ে গ্রহণ করতে হবে।
এক্ষেত্রে তৃণমূল পর্যায়ে যে সমস্ত রাজনৈতিক নেতা আছেন তারা যাতে তদারকি করতে পারেন সে জন্যও তাদের ক্যাপাসিটি তৈরির ব্যবস্থা করতে হবে। সরকার যেভাবে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়াতে চাচ্ছে সেটি প্রশংসনীয়। তবে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারী খাতকেও এগিয়ে আসতে হবে সততা, ন্যায়পরায়ণতা এবং জবাবদিহির আলোকে। এদেশে দুর্ভাগ্য হলো যে যায় লঙ্কায়, সেই রাবণ হয়। ফলে সরকারী ও বেসরকারী খাতেও অনেক ক্ষেত্রেই দুস্থ মানুষের প্রতি অমানবিক আচরণের বিষয়টি সাধারণ জনমানুষের দৃষ্টিগোচর হয়েছে।
সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় সংসদে মন্তব্য করেছেন যে, সামনে যে সঙ্কটই আসুক না কেন, সরকার তা শক্তভাবে মোকাবেলা এবং দেশের কোন মানুষকে অভুক্ত থাকতে দেবে না। আসলে প্রধানমন্ত্রী যে বিশাল দিকনির্দেশনা দেন, তা মানুষকে ভালবেসে অন্তরের অন্তস্তল থেকে দিয়ে থাকেন। আসলে যারা কোন নির্দেশ বাস্তবায়ন করবেন, তারা প্রতিটি স্তরে মডেল তৈরি করে একটির সঙ্গে আরেকটি সংযোগ স্থাপন করে স্থানীয় পর্যায়ে কৃষিনির্ভর কর্মসংস্থানের পাশাপাশি চুক্তিভিত্তিক খামার প্রতিষ্ঠা করা, অকৃষিজ কর্মকাণ্ডে শামিল হওয়া, মাছ-মুরগি, তরিতরকারি, ফুল-ফল, গবাদিপশু চাষেও মনোযোগী হওয়া এবং স্থানীয় পর্যায়ে কুটির শিল্প থেকে আরম্ভ করে মধ্যম পর্যায় পর্যন্ত শিল্প প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এক্ষেত্রে আর্থিক প্রতিষ্ঠান ব্যাংকের পাশাপাশি এনজিওগুলো রোল মডেল হিসেবে কাজ করতে পারে।
যে বয়সেরই হোক স্বাবলম্বী এবং আত্মনির্ভরশীল করে পুরুষ-নারীর সমতাভিত্তিক উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রীর যে উদ্দেশ্য, তা সফল করতে প্রশাসনকে ও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, ব্যাংকার, এনজিওকর্মীদের কাজে লাগানো যেতে পারে। গ্রামীণ পর্যায়ে বীমা ব্যবস্থাপনার অগ্রগতি গত ৪৯ বছরেও তেমন একটি হয়নি। বীমা কোম্পানিগুলোর উচিত মেধা, মনন ও ধীশক্তি দিয়ে নতুন নতুন বীমা স্কিম কমিউনিটি সার্ভিসের জন্য গ্রামীণ পর্যায়ে খোলা। ছোট ছোট মিল-কলকারখানা গ্রামীণ পর্যায়ে স্থাপনে ব্যাংকসমূহকে এগিয়ে আসতে হবে। আবার যে সমস্ত গ্রামে প্রবাসীরা বিদেশে ছিলেন, যারা কষ্ট করে এতদিন দেশে অর্থ পাঠিয়েছেন, তাদের মধ্যে যারা দেশে ফেরত আসবেন, তারাও যেন তাদের যোগ্যতা অনুযায়ী কর্মসংস্থান পান সে জন্য উদ্যোগী হতে হবে। কেননা আগের থেকে পরিকল্পনা প্রণয়ন করে সবাইকে অন্তর্ভুক্ত করে দেশের উন্নয়নকে এগিয়ে নিতে হবে।
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
We use cookies to ensure you get the best experience on our website.