মানবিক অর্থনীতির অগ্রদূত
নাম যেমন ব্যতিক্রমী, কর্মেও ছিলেন অতুলনীয়। টেকসই অর্থনীতি ও মানবিক অর্থ ব্যবস্থার বাতিঘরের ভূমিকা পালন করেছেন। দীর্ঘ এক যুগের বাংলাদেশ ব্যাংকের উপদেষ্টা। ৭১ বছরের জীবনের ৪৪ বছর কেটেছে বাংলাদেশ ব্যাংকেই। আকারে ছোট গড়নের মানুষটিকে দেখলেই শ্রদ্ধায় মন ভরে উঠত। দেশের বৈদেশিক লেনদেনের নীতিনির্ধারণী ভূমিকায় তার অবদান অনন্য উচ্চতায়। দেশ ও দেশের মানুষের প্রতি অগাধ ভালোবাসা ও দায়িত্ববোধ থেকে অর্থনৈতিক উন্নয়নে কাজ করেছেন আমরণ। দেশের আর্থিক খাতের এ মহান ব্যক্তির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি।
আর্থিক খাতের এ কিংবদন্তি দেশের বৈদেশিক বাজার, মুদ্রা ও তারল্য ব্যবস্থাপনা, মুদ্রানীতি প্রণয়নসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে রেখে গেছেন অসামান্য অবদান। পরিবর্তন ব্যবস্থাপনায় তার দিকনির্দেশনাগুলো ব্যাংকিং খাতের নীতিমালাকে করেছে সাবলীল। উজ্জ্বল নক্ষত্রের আলোয় প্রতিনিয়ত সমৃদ্ধ হয়েছে দেশ, আর্থিক খাত ও দেশের মানুষ। করোনার ভয়াল ছোবলে বিশ্ব যখন কঠিনতম চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছে, আল্লাহ মালিক কাজেমী চলে গেলেন না ফেরার দেশে। তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের চেঞ্জ ম্যানেজমেন্ট উপদেষ্টা আল্লাহ মালিক কাজেমী আমার দেখা মেধাবী কেন্দ্রীয় ব্যাংকারদের একজন। আমার তিন দশকের অধিক ব্যাংকিং ক্যারিয়ারে তার মতো মেধাবী লোক কম দেখেছি। নীতিগত সিদ্ধান্তের জায়গায় যেখানেই সংস্কার প্রয়োজন, সেখানেই তার সুদক্ষ নির্দেশনা ব্যাংকিং খাতকে সমৃদ্ধ করেছে। প্রচারবিমুখ এ মানুষ বাংলাদেশের মানুষের জীবনমান উন্নয়নে কেন্দ্রীয় নীতিনির্ধারণী জায়গায় থেকে অভ্যন্তরীণ রিপোর্টগুলোর চুলচেরা বিশ্লেষণ করেছেন। বিদেশী বিনিয়োগ আনতে তার সৃষ্টিশীল আয়োজন জাতীয় প্রবৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। প্রতিটি বিষয়ের গভীরে গিয়ে কাজ করতেন তিনি। যুক্তিযুক্ত কাজে তিনি ছিলেন সহজ। জটিলতার অবসানে ছিলেন ইস্পাত কঠিন।