কানাডার ১৫৩ তম জন্মদিন উদযাপন
বৈশ্বিক মহামারি করোনার কারণে বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনা না থাকলেও কানাডাবাসীর মধ্যে ছিল অকৃত্রিম ভালোবাসা দেশটির ১৫৩ তম জন্মদিনে। বছরের বেশির ভাগ সময় বরফাচ্ছন্ন থাকা কানাডার জন্মদিনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ প্রতিবছর অনাড়ম্বর ব্যাপক আয়োজনের মধ্য দিয়ে পালন করে ‘কানাডা ডে’ আর এর সঙ্গে যোগ হয় প্রবাসী বাঙ্গালীরাও। কিন্তু এ বছর ব্যতিক্রমভাবে পালিত হলো কানাডা দিবস।সেই চিরচেনা কানাডার ক্যালগেরির স্থানীয় জেনেসিস সেন্টার, প্রেইরি উন্ডসপার্ক, রকিভিউ এলাইন্স, ডাউন টাউনসহ ক্যালগেরির প্রায় প্রতিটি স্থানেই প্রতিবছর যে উপচে পড়া ভিড় থাকে তা সম্পূর্ণভাবেই অনুপস্থিত ছিল করোনাভাইরাসের কারণে।
কানাডার ক্যালগেরিতে বাংলাদেশ কানাডা অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে কানাডা দিবস উপলক্ষে কানাডাকে আরও সবুজ করতে নতুন প্রজন্ম এর মাঝে ‘চারা রোপণ’ কর্মসূচির মাধ্যমে বিভিন্ন গাছের বীজ ও চারা, সার, মাটি বিতরণ করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কানাডা অ্যাসোসিয়েশন অফ ক্যালগেরির সভাপতি মো. রশিদ রিপন, সাধারণ সম্পাদক জয়ন্ত বসু, সহ সভাপতি মো. কাদির ও সহ সভাপতি রিতা কর্মকার, যুগ্মসাধারণ সম্পাদক শুভ মজুমদার সহ অ্যাসোসিয়েশনের কর্মকর্তারা।
মো. রশিদ রিপন বলেন, কানাডা অন্য অনেক দেশের চাইতে সবুজ। আমাদের এই চারা রোপন কর্মসূচি কোমলমতি শিশুদেরকে সবুজের গুরুত্ব বুঝতে সাহায্য করবে এবং কানাডাকে আরো বেশি সবুজে ভরে তুলতে অনুপ্রেরণা দেবে। এটি একই সাথে প্রকৃতিপ্রেম ও দেশপ্রেমের সংমিশ্রণ। ফলে তারা সুনাগরিক হওয়ার পথে আরো এক ধাপ এগিয়ে যাবে।জয়ন্ত বসু বলেন, আমরা চাই আমাদের নতুন প্রজন্মের মানসিক ও শিক্ষা বিকাশের পাশাপাশি অন্যান্য কর্মকাণ্ডে ও দক্ষতা অর্জনে পারদর্শী হয়ে উঠুক আর সেই লক্ষ্যেই আমাদের আজকের এই কর্মসূচি।মো. কাদির বলেন, ভিন্নধর্মী এই উদ্যোগ আমাদের কোমলমতি শিশুদের আগামী দিনের পথচলায় বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখবে।
রিতা কর্মকার জানান, বৈশ্বিক মহামারির করোনাকালীন এই সময়ে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চারা বীজ বিতরণের এই কর্মসূচি ছোট ছোট শিশু কিশোরদের তাদের অবসর সময়টুকুকে আরও আনন্দময় করে তুলবে।দুই দেশের জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে মূল অনুষ্ঠান শুরু হয়। এরপর সংক্ষিপ্ত আলোচনায় অংশ নেন বাংলাদেশ কানাডা অ্যাসোসিয়েশন অফ ক্যালগেরির সদস্যরা।আয়োতনের দিক থেকে কানাডা ৯ হাজার ৯শ' ৮৫ মিলিয়ন কিলোমিটার হলেও জনসংখ্যা মাত্র ৩৬ মিলিয়ন।
যার রয়েছে ১০টি প্রভিন্স এবং ৩টি টেরিটোরিজ।১৯৭১ সালে কানাডাই বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে ঘোষণা দেয় মাল্টিকালচারিজমের, যার মূলমন্ত্র হলো সকল নাগরিকের থাকবে সমান অধিকার ও দায়িত্ব। যার ফলস্বরুপ দেশটির জন্মলগ্ন থেকে এ পর্যন্ত ১৭ মিলিয়নের বেশি লোক অভিবাসী হয়ে দেশটিতে এসে স্থায়ীভাবে বসবাস করছে। কানাডা শান্তি রক্ষায় সবসময় গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে আসছে। কানাডার ইমিগ্রেশন সংস্থার হিসেব অনুযায়ী প্রতিবছর প্রায় আড়াই লাখ অভিবাসন প্রত্যাশী পাড়ি দেয় কানাডায়।
এক সমীক্ষায় দেখা গেছে কানাডার বিচার ব্যবস্থা, নির্বাচনী প্রক্রিয়া, শিক্ষা ব্যবস্থা, চিকিৎসা যোগাযোগ ব্যবস্থা, জীবনের নিরাপত্তা, স্থীতিশীল অর্থনীতি, শক্তিশালী ব্যাংকিং ব্যবস্থার কারণে দেশ হিসেবে বিশ্বের সকলের কাছে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছে।দিবসটি উপলক্ষে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো এবং আলবার্টা প্রিমিয়ার জেসন কেনী পৃথক পৃথক শুভেচ্ছা বাণী দিয়েছেন।ক্যালগেরির এবিএম কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রেসিডেন্ট এবং বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী ড. মো. বাতেন বলেন, দূর প্রবাসে থাকলেও মাতৃভূমি আমাদের হৃদয়ে, দেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রা আমাদের আশার আলো দেখায়।