বড় কোনো পরিবর্তন ছাড়াই অর্থবিল পাস
বড় ধরনের কোনো পরিবর্তন ছাড়াই জাতীয় সংসদে অর্থবিল-২০২০ পাস হয়েছে। প্রস্তাবিত ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে বড় কোনো পরিবর্তন হয়নি, তাই অর্থ বিলেও কোনো পরিবর্তন আসেনি। এই প্রথম প্রস্তাবিত বাজেটে কোনো রকম পরিবর্তনের ঘোষণা না দিয়েই অর্থ বিল জাতীয় সংসদে পাসের জন্য অনুরোধ করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
গত ১১ জুন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য পাঁচ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকার বাজেটের সঙ্গে অর্থবিল ২০২০ জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করেছিলেন। সোমবার স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অর্থমন্ত্রী অর্থবিল পাসের প্রস্তাব করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়। আগামীকাল মঙ্গলবার পাস হবে মূল বাজেট। ১ জুলাই বুধবার থেকে শুরু হবে নতুন অর্থবছর।
কয়েকজন এমপির সংশোধনী প্রস্তাব গ্রহণের মধ্য দিয়ে সংসদে যে অর্থবিল পাস হয়েছে, তাতে বড় ধরনের কোনো পরিবর্তনের প্রস্তাব ছিলো না।মোবাইল সেবার ওপর সম্পূরক শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করার প্রস্তাব প্রত্যাহারের যে দাবি ছিলা, তাতেও কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি। তবে অপ্রদর্শিত আয়ের টাকা পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে শর্ত কিছুটা শিথিল করা হয়েছে।
অর্থমন্ত্রী তার প্রস্তাবিত বাজেটে পুঁজিবাজারে অর্থের প্রবাহ বাড়াতে ১০ শতাংশ কর দিয়ে ‘কালো টাকা সাদা’ করার সুযোগ দেয়ার কথা বলেছিলেন। তবে শর্ত ছিলো, সেই টাকা ৩ বছরে পুঁজিবাজার থেকে বের করা যাবে না। সংশোধনে তিন বছরের জায়গায় ‘লক ইন’ এর নিয়ম এক বছর করা হয়েছে।
এর আগের বিলের ওপর দেয়া জনমত যাচাইয়ের প্রস্তাব এলে তা কণ্ঠভোটে নাকচ করা হয়। অর্থ বিলে সরকারি, বিরোধী দল জাতীয় পার্টি এবং বিএনপির কয়েকজন সদস্য সংশোধনী প্রস্তাব আনেন, এসব প্রস্তাবের মধ্যে কিছু গ্রহণ করেন অর্থমন্ত্রী।
জাতীয় পার্টির পীর ফজলুর রহমান, কাজী ফিরোজ রশীদ, মুজিবুল হক চুন্নু, আওয়ামী লীগের আবুল হাসান মাহমুদ আলী, আলী আশরাফ অর্থ এবং বিরোধী দলীয় প্রধান হুইপ মসিউর রহমান রাঙ্গার কয়েকটি প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। পরে সেগুলো কণ্ঠভোটেও পাস হয়।
অর্থবিল পাসের আগে বাজেটের ওপর নিজের সমাপনী বক্তব্য দেন অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল। তার আগে বাজেট আলোচনায় অংশ নেন সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রথা অনুযায়ী, অর্থবিলে কোনো পরিবর্তন আনতে হলে অর্থমন্ত্রীর সমাপনী বক্তব্য এবং অর্থবিল পাসের আগে প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে অর্থমন্ত্রীকে সে বিষয়ে অনুরোধ করেন। এরপর অর্থমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর অনুরোধ আমলে নিয়ে সেসব বিষয়ে পরিবর্তন এনে অর্থবিল পাসের প্রস্তাব করেন। কিন্তু এবার প্রধানমন্ত্রী কোনো পরিবর্তন আনতে অর্থমন্ত্রীকে অনুরোধ করেননি।
বাজেটের উপর বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাজেট বাস্তবায়ন কঠিন কিছু নয়। অতীতের সব বাজেটই বাস্তবায়ন করেছে আওয়ামী লীগ সরকার। এবারের বাজেটও সরকার বাস্তবায়নে সক্ষম হবে।
পরে বাজেটের উপর সমাপনী বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী বলেন, করোনা মহামারির কারণে যারা কাজ হারিয়েছেন, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীসহ কৃষক, শ্রমিক, মজুর, কামার, কুমার, জেলে, তাঁতী, বেদে, স্বাস্থ্যকর্মী, ভ্যান চালক, রিকশাওয়ালাসহ সব পেশার মানুষ, পান দোকানি, চা দোকানি, মুদি দোকানি থেকে শুরু করে ক্ষুদ্র, কুটির ও ছোট-বড় সব ব্যবসায়ী, সব শ্রেণি ও নৃ-গোষ্ঠীর মানুষ, যারা কষ্টে আছেন তাদের সবার জন্য এবারের বাজেট।