৭০ বছর পূর্বে মৃত্যু, তার শরীরের ‘অমর কোষ’ আজো উৎপাদিত হচ্ছে!
আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানে অসংখ্য গবেষণা এবং আবিষ্কারে সঙ্গে ‘হেলা’কোষ ওতপ্রতোভাবে জড়িত। চিকিৎসা বিজ্ঞানের গবেষণার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে ‘হেলা’ কোষ। এই বিশেষ কোষটি অমর হিসেবে পরিচিত। তবে অবাক করা বিষয় হলো, এই কোষটি যার শরীরে পাওয়া যায় বেঁচে থাকতে তিনিও জানতেন না বিষয়টি। এমনকি তার মৃত্যুর কয়েক দশক পরে মিলেছিল এই অমূল্য অবদানের স্বীকৃতি। এক নারীর শরীরের মিলেছিল অমূল্য এই কোষ। এতে করে বদলে যায় আধুনিক চিকিৎসাব্যবস্থা।
সেই মহীয়সী নারীর অবদান নিয়েই এই লেখা।
হেনরিয়াটা একজন আফ্রিকান-আমেরিকান নারী ছিলেন। তিনি ১৯২০ সালে ভার্জিনিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে তার মৃত্যু হয় ১৯৫১ সালের ৪ অক্টোবর। তার কোষগুলো ‘হেলা’কোষ লাইনের উৎস। যা প্রথম অমর মানব কোষের লাইন। এটি চিকিৎসা গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ সেল লাইন। একটি অমর সেল লাইন নির্দিষ্ট অবস্থার অধীনে অনির্দিষ্টকালের জন্য পুনরুৎপাদন করে। ‘হেলা’ সেল লাইন আজ অবধি অমূল্য মেডিকেল ডেটার উৎস হিসেবে অবিরত রয়েছে। হেনরিয়েটা ল্যাকসের জন্ম এবং বেড়ে ওঠা ভার্জিনিয়াতে।
১৯২০ সালের ১লা আগস্ট তার জন্ম। প্রথমে তার নাম ছিল লরেটা প্লিজান্টা। পরবর্তীতে তার নাম হয় হেনরিয়াটা ল্যাকস। হেনরিয়াটার চার বছর বয়সের সময় তার মা মৃত্যুবরণ করে। তার বাবা এরপর অনেকটা উদাসীন হয়ে পড়েন। শিশু হেনরিয়াটার দেখাশুনা করা তার পক্ষে সম্ভব ছিল না। হেনরিয়াটাকে তিনি ক্লোভার শহরে দাদা টমি ল্যাকসের কাছে পাঠিয়ে দেন। তার দাদার একান্নবর্তী পরিবার ছিল। সেখানে তার অন্যান্য চাচাত ভাই বোনেরা বসবাস করত। ডেভিড ল্যাকস ছিলেন তার চাচাত ভাই। ভবিষ্যতে তার সঙ্গেই হেনরিয়েটার বিয়ে হয়। বিয়ের কয়েক বছর পর তারা ম্যারিল্যান্ডে বসবাস শুরু করে।
১৯৫০ সালের মধ্যেই হেনরিয়েটার পাঁচ সন্তানের জননী হন। তার শেষ সন্তান জন্ম নেয় ১৯৫০ সালে। এরপর তার অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয় এবং তার পেটে ব্যাথা বাড়তে থাকে। চিকিৎসকরা তাকে পরীক্ষা করার পরামর্শ দেয়। হেনরিয়েটা ম্যারিল্যান্ডের যে অঞ্চলে বসবাস করতেন সেখানে একমাত্র জন হপকিন্স হাসপাতাল কৃষ্ণাঙ্গদের চিকিৎসা সেবা প্রদান করত। ১৯৫১ সালের ২৯ জানুয়ারি হাসপাতালে গিয়েছিলেন। জন হপকিন্স হাসপাতালের চিকিৎসক হাওয়ার্ড জোন্স পরীক্ষার পর হেনরিয়েটাকে জানায় তিনি জরায়ুর ক্যান্সারে আক্রান্ত। তবে পরিবারের কাছে নিজের ক্যান্সারের কথা প্রথম অবস্থায় গোপন রেখেছিলেন এই নারী।
চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী, হেনরিয়েটা নিয়মিত হাসপাতালে যাওয়া শুরু করেন। সে সময় হাসপাতালে ক্যান্সার চিকিৎসার জন্য রেডিয়াম থেরাপি প্রয়োগ করা হতো। রেডিয়াম দেহে জন্ম নেয়া ক্যান্সার কোষ ক্ষয় করতে পারলেও তা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর ছিল। ফলে হেনরিয়েটার স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটতে থাকে।
কোষ বিজ্ঞানী জর্জ ওটো গে সে সময় জন হপকিন্স হাসপাতালে কোষ বিভাজন নিয়ে গবেষণা করছিলেন। এ বিষয়ে তিনি প্রায় ৩০ বছর গবেষণারত ছিলেন। তিনি গবেষণার মূল বিষয় ছিল, দীর্ঘস্থায়ী টিস্যু তৈরির চেষ্টা। জর্জ গে হেনরিয়েটার ক্যান্সারের খবর পেয়ে আগ্রহ নিয়ে তাকে দেখতে আসেন। তিনি হেনরিয়েটার ক্যান্সার কোষের নমুনা কেটে নিজের গবেষণাগারে সংরক্ষণ করেন। তবে তিনি হেনরিয়েটাকে না জানিয়েই এটা করেছিলেন।
জর্জ গে গবেষণাগারে হেনরিয়েটার কোষগুলো বিভাজিত হওয়ার সময় কিছু অস্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করলেন। অন্যান্য ক্যান্সার কোষ গবেষণাগারে সাধারণত কয়েক দিন পর্যন্ত বেঁচে থাকে। তবে হেনরিয়েটার নমুনা কোষগুলো বেশ কয়েক সপ্তাহ পর দেখা গেল তা বিভাজিত হচ্ছে।
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
We use cookies to ensure you get the best experience on our website.