৩৫০০ বছর ধরে গর্ভের সন্তানকে নিয়েই মমি হয়ে বসে আছেন নারী!

ডেইলি বাংলাদেশ প্রকাশিত: ২৭ জুন ২০২০, ১২:৪৩

প্রাচীন ঐতিহ্যের অনেক কিছুই এখন প্রত্নতাত্ত্বিকদের গবেষণায় উঠে এসেছে। হারিয়ে যাওয়া বিভিন্ন সভ্যতা, তাদের আচার, জীবনযাপন সম্পর্কে অনেক কিছুই জানা যায় এসব থেকে।  প্রত্নতাত্ত্বিকদের গবেষণার মধ্যে সবচেয়ে আকর্ষণীয় হচ্ছে বিভিন্ন মমি আর সমাধি। এর পেছনে রয়েছে নানা কাহিনী। যার অনেকটাই হৃদয় ছুঁয়ে যায়। শিশু সন্তানকে জড়িয়ে ধরে এক নারী সমাধিতে রয়েছেন হাজার হাজার বছর। আবার প্রিয়জনের বিয়োগ সহ্য করতে না পেরে সহমরণে গেছেন অনেকেই।

এসবই বিভিন্ন সময় খননকাজ করতে গিয়ে পেয়েছেন এসব সমাধি বা মমি করে রাখা দেহ। গবেষণার পর উঠে এসেছে নানা চাঞ্চল্যকর তথ্য।  মিশরের সুপ্রিম কাউন্সিল অব অ্যান্টিকিটিসের কয়েকজন প্রত্নতাত্ত্বিক মিশরের আসওয়ানে খনন কাজ করছিলেন। এই জায়গাটি নীল নদের পূর্ব দক্ষিণের শহর আসওয়ান থেকে ৩০ মাইল দূরে। সেখানে রয়েছে বিখ্যাত দ্বৈত মন্দির। সেটির কবরস্থানেই খনন কাজ করছিলেন তারা। খননকাজটি যৌথভাবে ইতালিয়ান-আমেরিকান প্রত্নতাত্ত্বিক দ্বারা পরিচালিত ছিল।

এসময় তারা একটি সমাধি খুঁজে পান।  ধারণা করা হয় এটি প্রথমে মমি করা হয়েছিল। যদিও সেটি অনেকটা নষ্ট হয়ে গিয়েছে। মমি করা হলেও তা খুব বেশি যত্ন নিয়ে হয়তো করা হয়নি। এই কঙ্কালটি ছিল একজন নারীর। কার্বন ডেটিংয়ের পর অনুমান করা হয় মৃত্যুর সময় তার বয়স ২৫ বা এর আশেপাশে ছিল। ওই নারীর পেটে তখন অনাগত সন্তান। সেই ভ্রূণের অস্তিত্বও পান তারা।   নিউজউইকের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ধারণা করা হয় ওই নারী খুন হয়েছিলেন। বেঁচে থাকলে অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই মা হতেন তিনি। তবে তা আর হয়নি।

অনাগত সন্তানকে সঙ্গী করে ৩৫০০ বছর তিনি সমাধিতে রয়েছেন। প্রথমে মমি করার চেষ্টা করা হলেও পরে হয়ত তাকে মাটি চাপা দেয়া হয়। অপরাধ মুছতে অপরাধীই কি তাকে মাটিচাপা দিয়েছিল কিনা, তা আজ প্রশ্নই রয়েছে! উত্তর হয়তো পাওয়া যাবে না কখনোই।  সমাধির ভেতরে এমনভাবে নারীর কঙ্কাল পাওয়া যায়, যেন তিনি বসে আছেন। সেন্ট্রাল ফ্লোরিডা বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞানী এবং অধ্যাপক সান্দ্রা হুইলার ন্যাশনাল জিওগ্রাফিককে বলেছেন, ভ্রূণসহ নারীর কঙ্কাল পাওয়া খুবই বিরল। এর আগে তিনি কখনো এমন কোনো কিছু দেখেননি।  গবেষকরা বলছেন ওই নারী অপুষ্টির কারণেও মারা যেতে পারে। তাহলে প্রশ্ন থাকে এভাবে সমাধি কেন দেয়া হয়েছিল। এরও ব্যাখ্যা দিয়েছেন গবেষকরা। তাদের মতে, জায়গা সল্পতার কারণে এভাবে সমাধি দেয়া হতে পারে। নাইজেল হেথারিংটন একজন মিশরীয় প্রত্নতাত্ত্বিক। তিনি এই নারীর কঙ্কাল গবেষণার কাজে ছিলেন। তিনি বলেন ভ্রূণের মাথা নিচের দিকে ছিল। অর্থাৎ তার প্রায় জন্মের সময় হয়ে গিয়েছিল।

নাইজেলের মতে, ওই নারী প্রসবের সময়ও মারা গিয়ে থাকতে পারেন।  এর আগে মিশরের বিভিন্ন জায়গায় অনেক সমাধিতে ভ্রূণের অস্তিত্ব পাওয়া গিয়েছে। এর থেকে ধারণা করা হয়, সেসময় অনেক নারী প্রসব সংক্রান্ত জটিলতার কারণে মারা যেতেন। সমাজের উচ্চ শ্রেণির লোকেরা তাদের দেহ মমি করে রাখতেন। তারা ভ্রূণসহই মমি করতেন। এটি তাদের কাছে বেশ সম্মানের ছিল বলেও জানান এই প্রত্নতাত্ত্বিক।     প্রত্নতাত্ত্বিকরা এই জায়গাটি খনন করার সময় আরো অনেক কিছুই খুঁজে পেয়েছিলেন। যা সেসময়কার অনেক কিছুই নির্দেশ করে।

মন্দিরের নিচে তারা গুপ্ত দুটি ঘর পেয়েছিলেন। তবে এর ভেতরে তেমন কিছুই পাওয়া যায়নি। ধারণা করা হয়, শহরে শত্রুরা আগমন করলে মন্দিরের পুরোহিত বা গণ্যমান্য ব্যক্তিরা এখানে লুকিয়ে থাকতেন। এছাড়াও সেখানে অনেক সমাধি পাওয়া গেছে।  মিশরের পুরাকীর্তি বিভাগ থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নারীর কঙ্কালটি অনেকটা পা ছড়িয়ে বসে বিশ্রাম নেয়া মতো অবস্থায় ছিল। তার মাথা চামড়ার তৈরি একটা কিছু দিয়ে মোড়ানো ছিল। এখানে চামড়ার কাফনে মোড়ানো একটি শিশুর কঙ্কালও পাওয়া গিয়েছিল।  সমাধির ভেতর ছিল দুটি মৃৎশিল্পের জাহাজ। এছাড়াও উট পাখির ডিমের খোসা ছিল। কেন এসন জিনিস সমাধির ভেতরে দেয়া হয়েছিল তা শুধু রহস্যই।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও