করোনার প্রভাব মোকাবিলায় কৃষিতে বড় প্রকল্প গ্রহণের নির্দেশ কৃষিমন্ত্রীর
কৃষিতে বড় প্রকল্প গ্রহণের জন্য কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক। কর্মকর্তাদের উদ্দেশে কৃষিমন্ত্রী বলেন, করোনার এই মহাদুর্যোগের প্রভাবে সম্ভাব্য খাদ্য সংকট মোকাবিলা করতে হলে কৃষিখাতে বাস্তবধর্মী সমন্বিত বড় প্রকল্প গ্রহণ করতে হবে। কৃষিমন্ত্রী বুধবার (২৪ জুন) সকালে তাঁর সরকারি বাসভবন থেকে মন্ত্রণালয়ের বার্ষিক উন্নয়ন প্রকল্পের (এডিপি) বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনায় অনলাইন সভায় এ কথা বলেন। সভাটি সঞ্চালনা করেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নাসিরুজ্জামান। এসময় মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, সংস্থাপ্রধানসহ প্রকল্প পরিচালকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। মন্ত্রী বলেন, মহামারি করোনার প্রভাবে মোকাবিলা করে কৃষিই সকলকে বাঁচিয়ে রাখতে পারে।
এ সময়ে অর্থনীতির যত ক্ষতিই হোক ঘরে খাবার থাকলে অন্তত জীবনটা বাঁচানো যাবে। আর সে লক্ষ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনানুযায়ী কৃষি মন্ত্রণালয় করোনার প্রকোপের শুরু থেকেই সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। মন্ত্রণালয় থেকে শুরু করে মাঠ পর্যন্ত সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কৃষকের পাশে থেকে কাজ করছে। আর এর ফলে কৃষিতে এ দুর্যোগের সময়ও সাফল্য ধরে রাখা গেছে। এসময় মন্ত্রী কৃষি মন্ত্রণালয় ও এর অধীন কর্মকর্তা-কর্মচারী সকলকে ধন্যবাদ জানান এবং ভবিষ্যতেও এ সাফল্য বজায় রাখার আশা প্রকাশ করেন। উদ্ভাবিত জাত বা প্রযুক্তি দ্রুত মাঠ পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশনা দিয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, নতুন নতুন প্রযুক্তি বা জাত উদ্ভাবন করে ফেলে রাখলে চলবে না। সময়াবদ্ধ পরিকল্পনা গ্রহণ করে যত দ্রুত সম্ভব সেসব জাতকে মাঠ পর্যায়ে কৃষকের কাছে নিয়ে যেতে হবে। এসময় তিনি লবণ-সহিষ্ণু ধানের জাতকে অতিদ্রুত দক্ষিণাঞ্চলের উপকূলীয় কৃষকের কাছে নিয়ে যাওয়ার তাগিদ দেন। মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নাসিরুজ্জামান সভায় কৃষি মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পসমূহের অগ্রগতি তুলে ধরে বলেন যে, বর্তমান অর্থ বছরে মে, ২০২০ পর্যন্ত অর্জিত জাতীয় গড় অগ্রগতি অপেক্ষা এ মন্ত্রণালয়ের প্রকল্প বাস্তবায়ন অগ্রগতি বেশী হয়েছে। তিনি এ ধারা অব্যাহত রাখার তাগাদা দেন।
সভায় জানানো হয়, ২০১৯-২০ অর্থ বছরের সংশোধিত এডিপিতে কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতায় মোট ৭৮টি প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন আছে। এসব প্রকল্পের অনুকূলে মোট বরাদ্দ আছে ১৭৬৩.৯৪ কোটি টাকা। এ অর্থ বছরে মে, ২০২০ পর্যন্ত সময়ে অর্থ অবমুক্ত হয়েছে ১২৮৯.৫৪ কোটি টাকা, যা মোট সংশোধিত বরাদ্দের ৭৩.০০ শতাংশ এবং অর্থ ব্যয় হয়েছে ১০৪২.৫৬ কোটি টাকা, যা বরাদ্দের ৫৯ শতাংশ। এছাড়া, করোনা উদ্ভূত পরিস্থিতিতে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার আলোকে বসতবাড়ি ও অনাবাদী পতিত জমির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিতকল্পে সবজি ও ফল চাষাবাদের লক্ষ্যে ১৭৪৯৮.০০ লক্ষ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে একটি প্রকল্প প্রণয়ন করা হয়েছে যা শীঘ্রই অনুমোদনের লক্ষ্যে পরিকল্পনা কমিশনে প্রেরণ করা হবে।