প্রতিবন্ধী কিশোরীকে ধর্ষণের ঘটনা ৯০ হাজার টাকায় আপস
রাজশাহীর দুর্গাপুরে এক প্রতিবন্ধী কিশোরীকে ধর্ষণের ঘটনা ৯০ হাজার টাকায় আপস করা হয়েছে। গ্রেপ্তার হওয়ার পর আজ মঙ্গলবার আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। ম্যাজিস্ট্রেট উজ্জ্বল মাহমুদ তার জবানবন্দি রেকর্ড করেছেন। এ সময় আসামি স্বীকার করেছেন ধর্ষণের মামলা আপস করার জন্য তিনি ৯০ হাজার টাকাও দিয়েছেন। এই টাকা স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছে রক্ষিত আছে। মামলা নিষ্পত্তি হলে ওই টাকা বাদীকে দেওয়ার কথা রয়েছে। আসামির নাম শহিদুল ইসলাম (৪৫)। তিনি ওই বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী মেয়েটির প্রতিবেশী। তাদের বাড়ি রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলায়।
মামলাটি তদন্ত করছে বাংলাদেশ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) রাজশাহী জেলা কার্যালয়ের উপপরিদর্শক (এসআই) মহিদুল ইসলাম। এই কর্মকর্তা জানান, ঘটনার শিকার কিশোরীর বয়স ১৫ বছর। বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী মেয়েটির বাবা নেই। মা একজন দিনমজুর। একই গ্রামে শহিদুল ইসলাম (৪৫) নামের এই ব্যক্তি গত ১২ ডিসেম্বর বিকেল তিনটার দিকে মেয়েটিকে স্থানীয় একটি পানের বরজে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করেন। ঘটনাটি মেয়েটির ছোট ভাই দেখে বাড়িতে এসে তার মাকে জানায়। তার মা স্থানীয় লোকজনের কাছে এ বিষয়ে বিচার চান, কিন্তু তাঁর কথা কেউ আমলে নেয়নি। ৬ জানুয়ারি তিনি রাজশাহীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন। মামলার আরজিতে বাদী দাবি করেছেন থানায় মামলা করতে গেলে মামলা নেওয়া হয়নি। বাধ্য হয়ে তিনি আদালতে মামলা করেছেন।
তবে দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খুরশিদা বানু দাবি করেছেন, ওই নারী থানায় মামলা করতে আসেননি। আদালত থেকে যখন মামলাটি থানায় পাঠানো হয়, তখন মামলার বাদীর কাছে তিনি বিষয়টি জানতে চেয়েছিলেন, বাদী তখন বলেছিলেন তাঁদের লোকজন থানায় মামলা করতে আসতে দেননি।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মহিদুল ইসলাম জানান, স্থানীয়ভাবে বিচার না পেয়ে মেয়ের মা গত ৬ জানুয়ারি বিশেষ ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন। গত ১৩ ফেব্রুয়ারি মামলাটি পিবিআইকে তদন্তের জন্য দেওয়া হয়। মামলা হওয়ার পরে আসামি শহিদুল ইসলাম স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিদের দিয়ে মেয়ের মাকে চাপ দিয়ে মামলাটি আপস মীমাংসা করার উদ্যোগ নেন। স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুল খালেকের বাসায় এই মীমাংসা বৈঠক হয়। বৈঠকে আসামি শহিদুল ইসলামের ৯০ হাজার টাকা জরিমানা ধার্য করা হয়। আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে শহিদুল ইসলাম বলেছেন, পুরো টাকাই শিক্ষক আবদুল খালেকের কাছে রাখা আছে। এ থেকে আবদুল খালেক ১০ হাজার টাকা খরচ করেছেন। এই ৯০ হাজার টাকা দেওয়ার প্রলোভন দিয়ে ইতিমধ্যে বাদীর কাছ থেকে একটি এফিডেভিট করে নিয়েছেন। সেটিও আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে আজ বিকেলে আবদুল খালেক প্রথম আলোকে বলেন, দুই পক্ষের ভুল–বোঝাবুঝি হয়েছিল, তা মীমাংসা করতে একটি বৈঠক তাঁর বাসাতেই হয়েছে। পরস্পরের মধ্যে ভুল–বোঝাবুঝির অবসান হওয়ার কথা শুনে তিনি খুশি হয়ে সালিসে থাকতে রাজি হয়েছেন। কী বিষয় নিয়ে সালিস তা তিনি জানেন না। তিনি দাবি করেন, জরিমানার টাকা তাঁর কাছে নেই। অন্য কারও কাছে থাকতে পারে।
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
We use cookies to ensure you get the best experience on our website.