ময়লার টাকাও খান কাউন্সিলররা!
বাসাবাড়ি থেকে বর্জ্য সংগ্রহকারীদের ভ্যান সার্ভিস দখল করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে বেশ কয়েকজন কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে। তাদের কর্মীবাহিনী দ্বারা বিভিন্ন এলাকায় হামলার শিকারও হয়েছেন পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা। চাঁদাবাজি থেকে শুরু করে বর্জ্য বহনকারী ভ্যান আটক করে রাখারও অভিযোগ রয়েছে কাউন্সিলরদের বিরুদ্ধে। এসব অভিযোগ নিয়ে করপোরেশনের কাছে একাধিক অভিযোগ করলেও কোনও প্রতিকার পাননি নগর পরিচ্ছন্নতায় নিয়োজিত পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা। বাংলা ট্রিবিউনের অনুসন্ধানে এমন তথ্য বেরিয়ে এসেছে।
গৃহস্থালির বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় প্রাইভেট প্রতিষ্ঠান
বর্জ্য ব্যবস্থাপনার শুরু থেকেই করপোরেশনের নিজস্ব কর্মীদের পাশাপাশি নগরীর বাসা বাড়ি থেকে ভ্যান সার্ভিসের মাধ্যমে ময়লা সংগ্রহ করে করপোরেশনের ডাস্টবিনে পাঠাচ্ছেন বিভিন্ন প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানের পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা। এরমধ্যে ২০০০ সাল থেকে প্রাইমারি ওয়েস্ট কালেকশন সার্ভিস প্রোভাইডার (পিডব্লিউসিএসপি) করপোরেশনের অনুমোদন নিয়েই সেবাটি দিয়ে যাচ্ছেন। এজন্য প্রতি বাড়ি থেকে মাসে ৩০ টাকা করে আদায় করার অনুমতি দেয় ডিএনসিসি। এই অর্থ দিয়ে কর্মীদের বেতন ও ভ্যান সার্ভিসের অন্যান খরচ বহন করা হতো। বর্তমানে সংগঠনটির অধীনে সাড়ে চার হাজার পরিচ্ছন্নতাকর্মী কাজ করছেন। আর ডিএনসিসির রয়েছে আড়াই হাজার কর্মী। যারা শুধু সড়ক পরিষ্কারের কাজ করেন। আর প্রাইভেট সার্ভিসের কর্মীরা বাসাবাড়ি থেকে বর্জ্য সংগ্রহ করে করপোরেশনের ডাস্টবিনে পৌঁছে দেন। সর্বশেষ ডিএনসিসির প্রয়াত মেয়র আনিসুল হক ডিএনসিসি এলাকার সব ভ্যান সার্ভিস মালিকদের সমন্বয় করতে পিডব্লিউসিএসপিকে ফাউন্ডেশন করে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা তদারকির দায়িত্ব দেন।
কর্মহীন হচ্ছে পিডব্লিউসিএসপির সাড়ে ৪ হাজার কর্মী
সম্প্রতি আনিসুল হকের দেওয়া সেই অনুমতি নবায়ন বন্ধ রাখে ডিএনসিসি। কাউন্সিলরদের সুবিধা দেওয়ার জন্যই এমনটা করা হয়েছে বলে অভিযোগ পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের। তারা বলছেন, প্রায় প্রতিটি ওয়ার্ডেই কাউন্সিলর ও তার লোকজন তাদের ময়লা সংগ্রহ করতে দিচ্ছে না। এরই মধ্যে অনেক ওয়ার্ডে কাউন্সিলরদের লোকেরা তাদেরকে ময়লা সংগ্রহের কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। ফলে ভ্যান সার্ভিসের সাড়ে চার হাজার কর্মী বেকার হচ্ছেন। পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের এমন অভিযোগের সত্যতাও পাওয়া গেছে।
নিজের সই ছাড়া লাইসেন্স না দিতে কাউন্সিলরের চিঠি
নির্বাচিত হওয়ার পর গত ৭ জুন ডিএনসিসির ৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবুল কাশেম আকাশ তার অনুমোদন ছাড়া এলাকায় বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকারীদের লাইসেন্স প্রদান বা নবায়ন না দিতে ডিএনসিসির আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাকে চিঠি দেন।
জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের কার্যবিধি অনুযায়ী ওয়ার্ডের যে কোনও কমিটিতে স্থানীয় কাউন্সিলর সভাপতি থাকবেন। আমার ওয়ার্ডে কাকে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে সেটা আমার জানা-শোনার দরকার আছে। কারণ তারা বিভিন্ন বাসা-বাড়িতে যায়। কোনও দুর্ঘটনা ঘটালে তার দায়িত্ব কে নেবে। আগের কাউন্সিলর তার নিজের লোক দিয়ে করতো। কারা ময়লা নিচ্ছে আমার তো জানা-শোনার দরকার আছে। জানা-শোনার মধ্যে থাকলে ভালো হয়। আর অনেক বাড়ি মালিক অভিযোগ করেন তাদের ময়লা নেয় না, টাকা বেশি নেয়। সে কারণেই চিঠি দিয়েছি।
বিধবা নারী থেকে আড়াই লাখ টাকা চাঁদা আদায়
ডিএনসিসির ৬ নং ওয়ার্ডে দীর্ঘদিন ধরে ভ্যান সার্ভিসের কাজ করে যাচ্ছেন স্বামীহারা নারী মুরজিনা। তিনি জানান, দীর্ঘ ২৫ বছর ধরেই এই এলাকার বাসাবাড়ির ময়লা সংগ্রহ করতেন তার স্বামী। কিন্তু করপোরেশনের কাউন্সিলর তায়জুল ইসলাম বাপ্পী তার ব্যক্তিগত সহকারী রাজুর মাধ্যমে তার কাছ থেকে ২ লাখ ৬০ হাজার টাকা নিয়েছেন। প্রতিমাসে তাকে আরও এক লাখ টাকা করে না দিলে কাজ বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেন বলে অভিযোগ করেন ওই নারী।
মুরজিনা জানান, স্বামীর মৃত্যুর পর তিনিই স্বামীর কাজটি পরিচালনা করে আসছেন। এ কাজ করেই দুই ছেলে ও এক মেয়ের সংসার চালাচ্ছেন তিনি। কিন্তু তার থেকে চাঁদা চাওয়ার পর তিনি গত রমজানের ঈদের আগে সুদের ওপর টাকা নিয়ে কাউন্সিলর তায়জুল ইসলাম বাপ্পীকে দুই লাখ ৬০ হাজার টাকা চাঁদা দিয়েছেন। সম্প্রতি তার কাছ থেকে প্রতিমাসে আরও চাঁদা দাবি করেন কাউন্সিলরের ব্যক্তিগত সহকারী রাজু।
তিনি আরও বলেন, এলাকার এক লোকের কাছ থেকে ৩শ টাকার স্ট্যাম্পে সই দিয়ে সুদের ওপর টাকা নিয়ে কমিশনারকে দিয়েছি। এখন আরও চাঁদা চায়। চাঁদার জন্য গত শুক্রবার (১৯ জুন) আমার কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়। অনেক চিৎকারের পরে বিকেলে কাউন্সিলরের পিএস ফোন করে বলেন ময়লা তুলতে। ময়লা না নিতে পারায় বাসা বাড়ির লোকজন ফোন করা শুরু ধরেছে। অভিযোগের বিষয়ে জানার জন্য একাধিকবার ফোন করলেও কাউন্সিলর ধরেননি। পরে খুদে বার্তা পাঠালেও সাড়া দেননি।
ময়লার টাকা ছিনিয়ে নিয়েছে কাউন্সিলরের লোক
৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর তফাজ্জল হোসেনের বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ উঠেছে। এই ওয়ার্ডে গত ৯ বছর ধরে ডিএনসিসির রূপনগর থানাধীন ৭ নং ওয়ার্ডের ময়লা অপসারণ করে আসছেন বর্জ্য অপসারণ কর্মী মো. আমির আলী। তিনি ডিএনসিসি থেকে বাৎসরিক অনুমোদন নিয়ে এই কাজটি পরিচালনা করে আসছেন। কিন্তু চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে স্থানীয় কাউন্সিলর তফাজ্জল হোসেন তার লোকজন দিয়ে তার কাছে প্রতি মাসে নির্দিষ্ট পরিমাণ চাঁদা দাবি করেন। টাকা দিতে অস্বীকার করলে বাসা বাড়ি থেকে ময়লা নেওয়ার কাজ বন্ধ করে দেন কাউন্সিলর। এসময় তার দুজন সুপারভাইজার থেকে জোর করে দুই লাখ ২৪ হাজার টাকাও নিয়ে যাওয়া হয় বলে অভিযোগ করেন তিনি। বিষয়টি উল্লেখ করে আমির আলী পুলিশের মিরপুর বিভাগের উপ-কমিশনারের কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ দেন। এরপর চলতি বছরের মার্চ থেকে ওয়ার্ডের নতুন কাউন্সিলর মো. তফাজ্জল হোসেনের লোকজন তার কর্মীদের তাড়িয়ে দিয়ে বাসা-বাড়ি থেকে ময়লা সংগ্রহ বাবদ যে টাকা পেতেন সেগুলো আদায় করে নেন।
আমির আলী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আমার সব দখল করে নিয়েছে। অনেক অভিযোগ করেছি। প্রতিকার পাইনি। এখন তারা বলে আমি তাদের সঙ্গে কাজ করতে। আমাকে বেতন দেবে। কিন্তু আমার আন্ডারে যেসব অসহায় মানুষ কাজ করেছে তারা কীভাবে চলবে?
জানতে চাইলে কাউন্সিলর তোফাজ্জল হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আমির আলী সন্ত্রাসী। এলাকায় তার জায়গা হবে না। তার বিষয়টি অন্য জিনিস।
১১টি ভ্যান দখল, ময়লা না নিতে হুমকি
একই ওয়ার্ডের ব্লক এ থেকে এফ পর্যন্ত বাসাবাড়িতে ময়লা আনার কাজ করছে নগর সেবা সমবায় সমিতি। সমিতির চেয়ারম্যান নাহিদ আক্তার লাকী অভিযোগ করে বলেন, বর্তমানে তার ১১টি ময়লা বহনের ভ্যান কমিশনারের দোহাই দিয়ে এলাকার হায়দার, তানভীর ও ওমর ফারুকসহ কিছু লোক আটক করে রাখে। সাদ্দাম হোসেন নামে দুজন কর্মচারীকে ময়লা না নিতেও হুমকি দেয়। বিষয়টি নিয়ে তিনি মিরপুর মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরিও করেন। পাশাপাশি ডিএনসিসির স্থানীয় আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা (অঞ্চল-২) এর কাছেও লিখিত অভিযোগ করেন।
তিনি আরও বলেন, মেয়র, সংসদ সদস্য, পুলিশ ও কাউন্সিলরসহ সবাইকে অভিযোগ করার পরেও কোনও প্রতিকার পাই না। মাঝে মধ্যে পুলিশের ভয়ে ভ্যানগুলো ছেড়ে দিলেও প্রতিদিন একইভাবে টাকার জন্য আটক করে রাখা হয়। বর্তমানেও তার গাড়িগুলো আটক করে রাখা হয়েছে। ফলে ময়লা অপসরণ করা যাচ্ছে না।
লাকী ডিএনসিসিতে ভ্যান সার্ভিসের মাধ্যমে ময়লা অপসারণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সমন্বয়ে গঠিত ফাউন্ডেশন প্রাইমারি ওয়েস্ট কালেকশন সার্ভিস প্রোভাইডারের (পিডব্লিউসিএসপি) সভাপতি। এই ফাউন্ডেশনের প্রত্যয়ন থাকলে ডিএনসিসি এলাকায় প্রাইভেটভাবে ভ্যান সার্ভিসের মাধ্যমে ময়লা অপসারণের অনুমতি দেয় ডিএনসিসি।
জানতে চাইলে কাউন্সিলর তোফাজ্জল হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, লাকী নামে যিনি অভিযোগ করেছেন আমি পুলিশকে বলে দিয়েছি তার কাগজপত্র যদি সঠিক হয়ে থাকে পুলিশ যাতে তাকে সহযোগিতা করে। আর কারও থেকে কোনও টাকায় পয়সা আমি নেইনি।
দখলদারদের পক্ষে কাউন্সিলর!
একই অভিযোগ করেন পরিবেশ বন্ধু ক্লিনিং সার্ভিস (ওয়ার্ড নং ৫৪) এর সভাপতি নাগর আলী ও সাধারণ সম্পাদক মো. কাসেম। তাদের অভিযোগ, ৫৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর হোসেন যুবরাজের দোহাই দিয়ে তার ক্যাডার লিটন ও নাসিরসহ বেশ কিছু লোক তাদের মারধর করে ময়লার ভ্যান ছিনিয়ে নিয়ে এলাকার ময়লার কাজ দখল করে নেয়। পরবর্তীতে ২০ হাজার টাকা দিয়ে ভ্যান ছাড়িয়ে আনা হয়। পাশাপাশি ময়লার টাকা থেকে মাসিক নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা দেওয়ার জন্য চাঁদা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। বিষয়টি কাউন্সিলরকে জানানো হলে তিনিও হামলাকারীদের পক্ষ নিয়ে কাজ ছেড়ে দিতে বলেন। বিষয়টি উল্লেখ করে গত বছরের ১৭ নভেম্বর মেয়রের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন নাগর আলী ও মো. কাসেম।
নাগর বলেন, ‘আমি ৩ মেয়ে নিয়ে কষ্টে আছি। তাদের বিয়েও দিতে পারছি না। এই কাজটি করে পরিবার পরিচালনা করতাম। ইউনিয়ন পরিষদ ও সিটি করপোরেশন থেকে আমার অনুমোদন থাকলেও তারা আমার কাজটি দখল করে নিয়েছে। কাউন্সিলরকে জানানোর পর তিনি বলেছেন অনেক খেয়েছ এখন আমার লোকজন খাবে।’ তবে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে ৫৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, নাগর আলীরা দুই তিন বছর আগে যখন ইউনিয়ন পরিষদ ছিল তখন ময়লা অপসারণ করতো। এরপর শুনেছি তারা এই কাজটি ৬০ হাজার টাকার বিনিময়ে বিক্রি করে দিয়েছে। লিটন ও নাগরদের মধ্যে দ্বন্দ্ব ছিল। এর বাইরে আমি আর কিছুই জানি না।
ময়লা তোলেন কাউন্সিলরের লোক
ডিএনসিসির ২৮ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. ফোরকান হোসেনের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ রয়েছে। এই ওয়ার্ডে দীর্ঘ ২৩ বছর ধরে ভ্যান সার্ভিসের মাধ্যমে ময়লা বাসাবাড়ির ময়লা অপসারণ করে আসছেন এ টু জেড মিডিয়া অ্যান্ড সোশ্যাল সার্ভিস সেন্টার। এই প্রতিষ্ঠানের মালিক নাজমুল হক পান্না অভিযোগ করে জানান, গত কয়েক মাস ধরে স্থানীয় কাউন্সিলর ফোরকান হোসেনের লোক মনির হোসেন এবং আয়নাল তার সার্ভিসটি দখল করে নেওয়ার চেষ্টা করে। বিভিন্ন সময় তার ভ্যান সার্ভিস আটক করে রাখে। আমি কিছু বললে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। বিষয়টি নিয়ে তিনি শেরেবাংলা নগর থাকায় অভিযোগ করলেও পুলিশ তা আমলে নেয়নি। অভিযোগের বিষয়ে জানান জন্য বারবার চেষ্টা করলেও কাউন্সিলরের ব্যবহৃত নাম্বার বন্ধ পাওয়া যায়। বিষয়টি উল্লেখ করে খুদে বার্তা পাঠালেও তিনি কোনও সাড়া দেননি।
সবই দখল, তবুও মুখ খুলতে রাজি নন!
ডিএনসিসি ৫৩ নং ওয়ার্ডে ২০ বছর ধরে ভ্যান সার্ভিসের কাজ করতে মো. শহীদ। তার ভ্যান সার্ভিস সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি এখন এই কাজ করছি না। ছেলে মেয়েদের নিয়ে অনেক কষ্টে আছি। কেন করছেন না সে বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, সে কথা বললে এলাকায়ও থাকতে পারবো না।
তবে তার প্রতিষ্ঠানের একজন পরিচ্ছন্নতাকর্মী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, কাউন্সিলর নাছির উদ্দিনের ছেলে স্বপন ও নাতি তারেক তাদের সার্ভিস দখল করে নিয়েছে। আগে তারা প্রতি মাসে ময়লার টাকা থেকে ২০ হাজার টাকা করে চাঁদা দিতেন। পরে সেটা বাড়াতে বাড়তে এক লাখ টাকায় দাঁড় করিয়েছেন। কিন্তু ১০ জন কর্মীর বেতন ও ভ্যান গাড়ির পেছনে খরচ দিয়ে যে অর্থ উঠে তার থেকে আর চাঁদা দেওয়ার কিছু থাকে না। সে কারণে এখন আর সেই কাজ করতে পারছেন না। বিষয়টি সম্পর্কে কথা বলার জন্য একাধিকবার ফোন করলেও কাউন্সিলর নাছির উদ্দিন ফোন ধরেননি। বিষয়টি উল্লেখ করে খুদে বার্তা পাঠালেও সাড়া দেননি।
দখল হয়েছে ১৮টি ওয়ার্ড
ডিএনসিসিতে ভ্যান সার্ভিসের মাধ্যমে ময়লা সংগ্রহকারীদের সমন্বয়ে গঠিত পিডব্লিউসিএসপি’র সভাপতি নাহিদ আক্তার লাকী অভিযোগ করেন, এরই মধ্যে বিভিন্ন ওয়ার্ডে তাদের কাজ দখল করে নিয়েছেন কাউন্সিলরদের লোকেরা। ডিএনসিসি মেয়রকে দেওয়ার এক আবেদনে তিনি বলেন, সম্প্রতি ডিএনসিসির বিভিন্ন ওয়ার্ডে আমাদের কর্মরত ভ্যান চালকরা কাউন্সিলরদের লোকের দ্বারা বর্জ্য সংগ্রহে বাধা পাচ্ছেন। কোনও কোনও কাউন্সিলররা হস্তক্ষেপ করছেন। ফলে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কাজে ধারাবাহিকতা রক্ষা করে সুচারুভাবে কাজ সম্পন্ন করা যাচ্ছে না। এরই মধ্যে ১৮টি ওয়ার্ডের কয়েকটির কাউন্সিলরদের লোকজন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কাজে জোরপূর্বক বাধা প্রদান করছে। তিনি বলেন, মেয়র আতিকুল ইসলাম বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কাজের জন্য পিডব্লিউসিএসপি’র প্রত্যয়ন বাধ্যতামূলক করেছিলেন। কিন্তু বর্তমান প্রশাসন সেটি বন্ধ করে দেওয়ার কারণেই এমন পরিবেশ দেখা দিয়েছে।