তরুণদের অভাবনীয় অংশগ্রহণে দেশব্যাপী ডিজিটাল ম্যাপিং সম্পন্ন

কালের কণ্ঠ প্রকাশিত: ২২ জুন ২০২০, ১৩:৫১

বাংলাদেশে করোনাভাইরাস (কভিড-১৯) মহামারির শুরুর দিকে দেশব্যাপী ডিজিটাল ম্যাপিং এর লক্ষ্যে পরিচালিত ‘বাংলাদেশ চ্যালেঞ্জ’ নামক ক্যাম্পেইনে তরুণদের অভাবনীয় অংশগ্রহণে এক লাখ ১০ হাজার লোকেশন গুগল ম্যাপ ও ওপেন স্ট্রিট ম্যাপে যুক্ত করা হয়েছে।  তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন এবং ইউএনডিপি এর সহায়তায় পরিচালিত এটুআই এবং গুগল-এর সমন্বয়ে বেসরকারি টেলিকম অপারেটর কোম্পানি গ্রামীণফোন এর উদ্যোগে আয়োজিত এই ক্যাম্পেইন ২১ জুন এক অনলাইনে সমাপনী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্‌মেদ পলক এমপি। ‘বাংলাদেশ চ্যালেঞ্জ’ উদ্যোগের মাধ্যমে সারাদেশের তরুণরা ঘরে বসে গুগল ম্যাপ এবং ওপেন স্ট্রিট ম্যাপে তাদের আশেপাশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোর পিনপয়েন্ট করার সুযোগ পেয়েছে। বর্তমান সংকটকালীন পরিস্থিতিতে প্রতিটি দেশের ভৌগলিক ম্যাপিং হালনাগাদ করা খুবই জরুরি। কারণ হাসপাতাল, স্থানীয় পণ্যের বাজার, রিচার্জ পয়েন্ট, নগদ/বিকাশ পয়েন্ট এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলো ম্যাপে পয়েন্ট করা জরুরি।

ঢাকার বাইরে যারা জরুরি সেবা প্রদানের সাথে জড়িত তাদের জন্য এটি আরো বেশি গুরুত্বপূর্ণ। পূর্বে শহর অঞ্চলের বাইরের গুগল ম্যাপে পয়েন্ট করা ছিল না বলে নাগরিকদের বিভিন্ন স্থান সনাক্ত করতে সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছিল। ডিজিটাল ম্যাপ হালনাগাদ করার কারণে এ জাতীয় সমস্যা সমাধানে সহায়তা করবে। অনলাইনে আয়োজিত সমাপনী অনুষ্ঠানে আইসিটি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জনাব জুনাইদ আহ্‌মেদ পলক এমপি বলেন, ‘আমাদের ম্যাপিং- এর ধারণায় আমূল পরিবর্তন নিয়ে এসেছে গুগল ম্যাপ।

স্মার্টফোন দিয়ে জিপিএস ব্যবহার, পৃথিবীকে আমাদের হাতের মুঠোয় নিয়ে এসেছে। তবে, এর সাথে আমাদের ভাবতে হবে, যেনো প্রযুক্তি আমাদের মধ্যে বৈষম্য তৈরি না করে। বিশেষ করে, বর্তমানের এ প্রতিকূল সময়ে যখন জরুরি সেবা ঘরে পৌঁছে দেয়ার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। আমরা আইসিটি বিভাগ থেকে পাঁচটি কন্টিনিউটি পরিকল্পনা করেছিলাম এ সঙ্কটের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে। সেখানে আমাদের অন্যতম কৌশল ছিলো সরকারের সাথে সকল বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, উদ্যোক্তা এবং বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানকে যুক্ত করা। এক্ষেত্রে, প্রযুক্তি সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি আমরা। তারি ধারাবাহিকতায় আমরা লক্ষ্য করেছি, শহরের ক্ষেত্রে হাসপাতাল সহ নানা জরুরি স্থাপনা গুগুল ম্যাপে রয়েছে, কিন্তু সে তুলনায় গ্রামে জরুরি স্থাপনা চিহ্নিত করা নেই। আর এ সমস্যা সমাধানে এটুআই, গ্রামীণফোন, বাংলাদেশ স্কাউটস ও প্রেনিউর ল্যাবসহ সবাই মিলে বাংলাদেশ চ্যালেঞ্জ উদ্যোগ নিয়ে এসেছে, যেখানে দেশের তরুণরাই ঘরে বসেই পথ দেখাতে পারে।

আমরা আনন্দিত যে এ চ্যালেঞ্জ সবাইকে আলোড়িত করেছে।’ এখন পর্যন্ত এ কার্যক্রমে প্রায় ৩১,০০০ রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে এক লাখ ১০ হাজার ম্যাপ পোস্ট পাওয়া গেছে। অন্যদিকে ফেসবুকে ৮.৫ মিলিয়নের বেশি রিচ এবং ৯৬.৭ মিলিয়নের বেশি ইমপ্রেশন পাওয়া গেছে। তরুণরা তাদের বাড়িতে অবস্থান করে সামাজিক দূরত্বের বিধি মেনেই এই পুরো ম্যাপিং প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে সক্ষম হয়েছে। উক্ত ম্যাপিং কার্যক্রমে অবদানকারী শীর্ষ ১০০ জন তরুণকে গ্রামীণফোনের পক্ষ থেকে ২ মাসের জন্য ১০ জিবি (৫জিবি ৩০ দিন+ ৫জিবি ৩০ দিন) ইন্টারনেট প্রদান করা হয়েছে। অনলাইন সমাপনী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আইসিটি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জনাব জুনাইদ আহ্‌মেদ পলক ক্রেস্ট প্রাপ্ত শীর্ষ ১০০ জন ম্যাপারের নাম ঘোষণা করেন।

অন্যদিকে শীর্ষ ২০০ জন ম্যাপার এটুআই-এর ‘একশপ’ প্ল্যাটফর্মের সাথে কাজ করার সুযোগ প্রাপ্ত হবে। তাঁরা সুপার স্টোর, মুদি দোকান, ফার্মেসি, কুরিয়ার সার্ভিস, পাবলিক টয়লেট এবং দেশের পর্যটন স্থানগুলোর ভৌগলিক ম্যাপিং করার কাজে সহযোগিতা করবে যা জেলা-ব্রান্ডিং কার্যক্রমকেও এগিয়ে নিয়ে যাবে। সেই সাথে ৩১ হাজার রেজিস্টার্ড ম্যাপারের সবাইকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের পক্ষ থেকে ই-সার্টিফিকেট প্রদান করা হবে। গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়াসির আজমান বলেন, ‘কভিড-১৯ এর বৈশ্বিক মহামারি আমাদের নতুন স্বাভাবিকতায় অভ্যস্ত করে তুলছে।

কানেক্টিভিটির কারণেই এ অভুতপূর্ব সময়ে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জরুরি সেবাদান কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছে। এটুআই, আইসিটি বিভাগ ও প্রযুক্তিপ্রেমী তরুণ ম্যাপারদের সাথে এ উদ্যোগের অংশ হতে পেরে আমরা আনন্দিত। তিনি বলেন, আমার বিশ্বাস, দেশজুড়ে গুগল এবং ওপেন স্ট্রিট ম্যাপ ব্যবহার করে ফার্মেসি, রিচার্জ পয়েন্ট, হাসপাতাল, স্কুলসহ জরুরি স্থান ও স্থাপনা চিহ্নিতে আমাদের এ প্রচেষ্টা সহায়তা করেছে।

যেসব অংশগ্রহণকারী ম্যাপ অন্তর্ভুক্তিকরণে কাজ করেছেন তাদের ধন্যবাদ। আপনাদের এ সহায়তা যেকোনো সময় বড় পরিবর্তন নিয়ে আসতে পারে। আসুন, আমরা ধারাবাহিকভাবে এমন উদ্যোগ নিয়ে কাজ করার মাধ্যমে সমাজের পাশে দাঁড়াই।’ এটুআই’র পলিসি অ্যাডভাইজর আনীর চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের বর্তমান সঙ্কটে হাসপাতাল, ফার্মেসি, মুদি দোকানসহ জরুরি স্থাপনা সহজে খুঁজে বের করতে আমাদের তরুণ প্রজন্ম কীভাবে সহায়তা করতে পারে সে ধারণা থেকেই বাংলাদেশ চ্যালেঞ্জ উদ্যোগের যাত্রা শুরু। এক্ষেত্রে, গ্রামীণফোন, প্রেনিউর ল্যাব, গুগল এগিয়ে আসে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

এই সম্পর্কিত

আরও