হিমালয়ের ‘বাস অযোগ্য’ উপত্যকা নিয়ে কেন বারবার লড়ছে চীন-ভারত?

বাংলা ট্রিবিউন প্রকাশিত: ১৯ জুন ২০২০, ২১:৪৭

ভারত ও চীনের মধ্যকার সীমান্ত বিরোধ নতুন কিছু নয়। কিন্তু ১৯৬২ সালের পর সীমান্তে উভয় দেশের মধ্যে কোনও সংঘাত এতোটা প্রাণঘাতী হয়নি, যা ঘটেছে সোমবার রাতে (১৫ জুন) । ওই সময় এলাকাটি নিয়ে ভারত ও চীন যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। দুই পক্ষেরই বিপুল প্রাণহানি হয়েছিল। কিন্তু সোমবার কোনও গুলি বিনিময় ছাড়াই কিল-ঘুষি, পাথর, ব্যাটন ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে প্রায় চার ঘণ্টার সংঘর্ষে অন্তত ২০ ভারতীয় সেনা নিহত ও ৭৬ জন আহত হয়েছে। অথচ হিমালয়ের বিরোধপূর্ণ এলাকাটি অবস্থান ও তাপমাত্রার নিরিখে মানুষের বসবাস উপযোগী নয়। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন-এর একটি বিশ্লেষণধর্মী প্রতিবেদনে আকসাই চীন এলাকাটি কেন এতো গুরুত্বপূর্ণ- তা অনুসন্ধানের চেষ্টা করা হয়েছে।

চার দশকেরও বেশি সময় পর সোমবার (১৫ জুন) থেকে আবারও প্রাণঘাতী রূপ নিয়েছে ভারত-চীন সীমান্ত বিবাদ। সোমবার রাতে চীন নিয়ন্ত্রিত কিন্তু ভারতের দাবিকৃত আকসাই চীনের কাছাকাছি গালওয়ান উপত্যকায় উভয় দেশের সেনাদের সংঘাতে অন্তত ২০ জন ভারতীয় সেনা নিহত হয়েছে। চীনের কোনও বা কতজন সেনা নিহত হয়েছে কিনা তা জানা যায়নি। উভয় দেশই একে অপরের বিরুদ্ধে সীমান্তে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলএসি) অতিক্রম করার অভিযোগ তুলছে। সংঘর্ষের বিস্তারিত যেটুকু জানা গেছে তা এখনও বিভ্রান্তিকর এবং হয়ত কখনোই পুরোপুরি স্পষ্ট হবে না।

পারমাণবিক শক্তিধর দুটি প্রতিবেশী এখন দ্রুত উত্তেজনা প্রশমনের চেষ্টা করছে। যদিও উভয় দেশেরই পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে কট্টর জাতীয়তাবাদী ও যুদ্ধবাজ কণ্ঠস্বরের কিছু মানুষ বৃহত্তর দ্বন্দ্ব ও আগ্রাসনের আহ্বান জানাচ্ছে। এক্ষেত্রে চীন ওই এলাকায় বিপুল সংখ্যক সেনা মোতায়েন করেছে এবং ভারতও নিজেদের অবস্থান মজবুত করেছে। যদিও ওখানকার সামরিক শক্তি নিয়ে নয়া দিল্লির কণ্ঠে তেমন জোর নেই।

আকসাই চীন এলাকাটিকে জিনজিয়াং এর অংশ বলে দাবি করে থাকে চীন। আর ভারত দাবি করে এটি লাদাখের অংশ। এলাকাটি ঠাণ্ডা ও সেখানে বসবাস করা কঠিন। এমন কী গ্রীষ্মকালেও এলাকাটি তুষারে ঢাকা থাকে। তাছাড়া এটি হিমালয় অঞ্চলের অত্যন্ত উঁচুতে অবস্থিত, এর গড় উচ্চতা ১ হাজার ৪০০ ফুট। যে উচ্চতায় বসবাস করতে গেলে মানুষ অসুস্থ হতে পারে অর্থাৎ প্রচণ্ড মাথা ব্যথা, ক্লান্তি, বমিভাব কিংবা অবসাদ দেখা দিতে পারে তার চেয়েও দ্বিগুণ উচ্চতায় অবস্থিত এই আকসাই চীন।

সিএনএন-এর বিশ্লেষণে বলা হয়, এলাকাটির উঁচুতে অবস্থান ও শীতল তাপমাত্রা সোমবারের (১৫ জুন) সংঘর্ষে প্রাণহানির ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখে থাকতে পারে। ভারতীয় সেনাবাহিনী প্রথমে তাদের তিন সেনা নিহত হওয়ার কথা জানিয়েছিল। পরে তারা জানায়, অতি উচ্চতায় অবস্থিত ওই এলাকায় হিমাঙ্কের নিচের তাপমাত্রার কারণে আহত হওয়া আরও ১৭ সেনার মৃত্যু হয়েছে।

ব্রিটিশ ইতিহাসবিদ নেভিল ম্যাক্সওয়েল তার লেখা “ইন্ডিয়া’স চায়না ওয়ার” নামক বইয়ে আকসাই চীন এলাকাকে উল্লেখ করেছেন, “‘নো ম্যানস ল্যান্ড’ যেখানে কিছুই উৎপাদিত হয় না, কেউ বসবাস করে না”। বইটিতে ম্যাক্সওয়েল লিখেছেন, আকসাই চীন অঞ্চলের সার্বভৌমত্ব সবসময়ই বিভ্রান্তিমুলক। ১৮০০ শতকের বেশিরভাগ সময় ধরে রাশিয়া, ব্রিটেন ও চীন- এ তিন সাম্রাজ্যের সামরিক ও রাজনৈতিক কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছিল হিমালয় অঞ্চল। এ তিন দেশই হিমালয় অঞ্চলের বিভিন্ন অংশের মালিকানা দাবি করে আসছিল। উপনিবেশিক শাসন থেকে মুক্তির পর এ এলাকার মালিকানা নিয়ে আরও বেশি করে বিভ্রান্তি ও বিদ্বেষ তৈরি হলো; বিশেষ করে ভারত-পাকিস্তান বিভক্ত হওয়ার পর। আকসাই চীন বৃহত্তর কাশ্মিরের অংশ। তবে ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে দুই দেশ আলাদা হয়ে গেলেও চীন ও ভারতের মধ্যকার সীমানার প্রশ্নটি ভালোভাবে মীমাংসিত হয়নি।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও