সড়ক-মহাসড়কে বেপরোয়া চাঁদাবাজি

ডয়েচ ভেল (জার্মানী) প্রকাশিত: ১৮ জুন ২০২০, ১৯:০০

পরিবহন চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে এবার পুলিশ কঠোর৷ মালিক ও শ্রমিক সংগঠনগুলো চাঁদাবাজি বন্ধে চিঠি দিয়েছে৷ তারপরও সড়ক-মহাসড়কে বাস-ট্রাকে থামছে না চাঁদাবাজি৷ এই করোনার মধ্যেও কৌশল পাল্টে বেপরোয়া চাঁদাবাজেরা৷

৫৯ দিন বন্ধ থাকার পর চলতি মাসের শুরুতে সারাদেশে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাস-মিনিবাস- ট্রাক চালুর সময় চাঁদাবাজি বন্ধের দাবি ওঠে৷ বলা হয়, চাঁদাবজি বন্ধ হলে যাত্রী ভাড়া বাড়ানোর প্রয়োজন পড়বে না৷ কিন্তু বাস্তবে তা ঘটেনি৷ গণপরিবহন চালুর প্রথম দিন থেকেই চাঁদাবাজেরা তৎপর ৷ চাঁদাবাজি বন্ধে পুলিশের আইজির কঠোর হুশিয়ারির পরও তারা থামছেনা৷ কিছু কৌশল পরিবর্তন করেছে মাত্র৷

যে কৌশলে এখন চাঁদা আদায় হয়:
পরিবহন সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, শ্রমিক এবং মালিক সংগঠনের নামে এখন সরাসরি বাস টার্মিনাল থেকে চাঁদা আদায় বন্ধ আছে৷ তবে এখন চাঁদা আদায় হচ্ছে বিভিন্ন পরিবহন কোম্পানির নামে, বাস টার্মিনালের বাইরে৷ যেমন ‘যাত্রী সেবা’ একটি পরিবহন কোম্পানি৷ তাদের অধীনে বিভিন্ন মালিকের পাঁচশ' বাস চলে ঢাকা থেকে দেশের বিভন্ন রুটে৷ এরমধ্যে ঢাকা-চাটখিল রুটে লাকসাম, মনোহরগঞ্জ, বিপুরা চর, নাসের পেটুয়া স্পটে প্রতিবাস থেকে ৪২০ টাকা করে চাঁদা তোলা হয় প্রতিদিন৷ এই চারটি স্পটের যেকোনো সুবিধাজনক স্পট থেকে চাঁদা নেয়া হয়৷

এরকম আরেকটি পরিবহন কোম্পনি হলো ‘তিষা’৷ তাদের অধীনে বাসগুলো ঢাকা-কুমিল্লা- লাকসাম রুটে চলাচল করে৷ কোম্পানির নামে লাকসামে প্রতি গাড়ি থেকে ৫২০ টাকা চাঁদা তোলা হয়৷ তবে তারা পরিস্থিতি বুঝে চাঁদা তোলার জায়গা পরিবর্তন করে৷ দেশের অন্যান্য রুটেও একই কৌশলে চাঁদা আদায় হচ্ছে৷

ঢাকা শহরের মধ্যে বাসগুলোও বিভিন্ন পরিবহন কোম্পানির ব্যানারে চলাচল করে৷ কোম্পানিগুলোর মধ্যে রয়েছে সালসাবিল, বৈশাখী, তুরাগ, অনাবিল প্রভৃতি৷ এই কোম্পানিগুলো এখন প্রতিটি বাস থেকে দিনে ৮২০ টাকা করে এখন চাঁদা নেয়৷ জানা গেছে, চাঁদাবাজির এই নতুন কৌশলকে বলা হচ্ছে ‘সম্মিলিত চাঁদা’৷ এখান থেকে মালিক ও শ্রমিক নেতারা ভাগ নিচ্ছেন৷

ঢাকা শহরের ভিতরে বিভিন্ন রুটে চলাচলকারী হিউম্যান হলার থেকেও নতুন কৌশলে চাঁদা নেয়া হচেছ ৫০০-৮০০ টাকা৷ এই চাঁদা অবশ্য শ্রমিক ইউনিয়নের নামে নেয়া হচ্ছে৷ তারাও স্ট্যান্ড থেকে না নিয়ে নির্ধারিত নতুন জায়গা থেকে নিচ্ছে৷ আর এই চাঁদা না দিয়ে উপায় নেই৷ কারণ ‘দিন সব সময় একই রকম থাকবে না' বলে আশঙ্কা৷

পরিবহন নেতারা চাঁদাবাজদের নাম জানেন
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক লীগের সভাপতি মো. হানিফ খোকন বলেন, ‘‘পুলিশ তো সব কিছু ধরতে পারে না৷ চাঁদাবাজির কৌশলে যে পরিবর্তন এসেছে তারা সেটা হয়তো এখনো বুঝে উঠতে পারেনি৷ আর ২৪ ঘণ্টাতো পুলিশের পক্ষে পাহারা দেয়া সম্ভব নয়৷ চাঁদাবাজির ব্যানার পরিবর্তন হয়েছে৷ জায়গা বদল হয়েছে৷ মালিক সমিতির লোকজন তো এইসব চাঁদাবাজদের চেনেন৷ তারা তালিকা দিলেই কিন্তু চাঁদাবাজদের ধরা যায়৷’’

মালিক সমিতি দাবি করছে, পরিবহনে চাঁদাবাজি ৯০ ভাগ কমে এসেছে৷ তারা সারাদেশে চাঁদাবাজি বন্ধে চিঠি দিয়েছেন, পুলিশকে তথ্য দিচ্ছেন৷ নিয়মিত নজরদারি করছেন৷ তবে তারপরও চাঁদাবাজি যে হচেছ তা স্বীকার করেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ ৷ তিনি ব্যানার পরিবর্তন করে পরিবহন কোম্পানির নামে চাঁদাবাজির অভিযোগের কথাও স্বীকার করেন৷ তিনি বলেন, ‘‘আমরা অভিযোগ পাওয়ার সাথে সাথে পুলিশকে জানাই৷ তবে চাঁদাবাজির সঙ্গে তো শুধু পরিবহনের লোকই জড়িত না, স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা-কর্মী ও প্রভাবশালীরাও জড়িত৷ তাদের তো আমার চিনি না৷ তাদের তালিকা দেব কীভাবে?’’

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

এই সম্পর্কিত

আরও