বিদেশিরা শুল্কমুক্ত সুবিধা পান, দেশিরা টেন্ডারও পান না
ঢাকা: দেশে স্টিল দিয়ে অফিস শিল্প কারখানাসহ বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণ বেড়েছে। ফলে দেশেই গড়ে উঠেছে এ শিল্পের কারখানা। বিদেশ থেকে কাঁচামাল আমদানি করে দেশেই তৈরি করা হচ্ছে স্টিলের অবকাঠামো নির্মাণের প্রায় যাবতীয় সরঞ্জাম।কিন্তু দেশীয় শিল্পোদ্যোক্তারা বলছেন, সরকারের নীতির কারণে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। কারণ দেশি শিল্পোদ্যোক্তারা যখন ২৫ শতাংশ শুল্ক পরিশোধ করে স্টিল বিল্ডিং শিল্পের কাঁচামাল আমদানি করছেন, তখন বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো বিনা শুল্কে স্টিল বিল্ডিংয়ের তৈরি পণ্য আমদানির সুযোগ পাচ্ছে।
এ অবস্থায় স্টিল বিল্ডিং ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের নেতারা দাবি করেছেন, স্টিল বিল্ডিংয়ের তৈরি পণ্য আমাদানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা বাতিল করতে হবে। একইসঙ্গে আমদানি নিরুৎসাহিত করতে হবে।
তাদের অভিযোগ, যোগ্যতা থাকলেও স্টিল বিল্ডিংয়ে দেশীয় কোনো প্রতিষ্ঠান সরকারি টেন্ডারে অংশ নিতে পারে না। সরকারি টেন্ডারে অংশগ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি করতে তারা সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনেও এসব দাবি তুলে ধরেছেন দেশের স্টিল ব্যবসায়ীরা।
তারা বলেছেন, প্রি-ফেব্রিকেটেড স্টিল বিল্ডিং শিল্পে শুল্কমুক্ত সুবিধায় তৈরি পণ্য আমদানির সুযোগ থাকলে দেশীয় স্টিল শিল্প ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এতে করে এ শিল্প থেকে শত শত শ্রমিক বেকার হয়ে পড়বে, যা দেশের অর্থনীতির জন্য হুমকি। শুধু তাই নয়, স্টিল ব্যবসার সঙ্গে সঙ্গে এর নেতিবাচক প্রভাব সিমেন্ট শিল্পের ব্যবসায়ও পড়বে বলে মনে করেন তারা।
সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী সংগঠন ও উদ্যোক্তারা বিনিয়োগ, উৎপাদন সক্ষমতা ও কর্মসংস্থান ধরে রাখতে দেশি প্রি-ফেব্রিকেটেড স্টিল বিল্ডিং শিল্পকে বাজেটে সুরক্ষা দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে স্টিল বিল্ডিং ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (এসবিএমএ) সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান বলেন, বৈশ্বিক মহামারি করোনার প্রভাবে গত ডিসেম্বর থেকে এ পর্যন্ত এ শিল্পের ২৩০টি প্রতিষ্ঠানে ১০ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। প্রত্যক্ষভাবে ২ লাখ, পরোক্ষভাবে ৮ লাখ মানুষ এবং ১ লাখ শ্রমিকের ভাগ্য জড়িত এ শিল্পের সঙ্গে।
তিনি বলেন, শিল্পের ‘আঁতুড়ঘর’ হিসেবে পরিচিত প্রি-ফেব্রিকেটেড স্টিল বিল্ডিং শিল্প। দ্রুত অকাঠামো নির্মাণ কাজ সম্পন্ন ও নিরাপদ হওয়ায় দেশের ৯৯ শতাংশ ফ্যাক্টরি শেড বিল্ডিং বর্তমানে প্রি-ফেব্রিকেটেড স্টিল দিয়ে তৈরি করছেন উদ্যোক্তারা। প্রি-ফেব্রিকেটেড স্টিল বিল্ডিং সাশ্রয়ী, ভূমিকম্প সহনশীল। অ্যাকর্ড-অ্যালায়েন্স ও কমপ্লায়েন্স মেনে ব্যয় সাশ্রয়ী এবং স্বল্প সময়ে স্থাপনযোগ্য। এ শিল্পের কাঁচামালের ৯৫ শতাংশ চীন থেকে আমদানি হয়ে থাকে। এর জন্য কাস্টম ডিউটি দিতে হয় প্রায় ২৫ শতাংশ। এর বিপরীতে যারা তৈরি প্রি-ফেব্রিকেটেড স্টিল বিল্ডিং পণ্য আমদানি করছে, তাদের শুল্কমুক্ত সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। ফলে অসম প্রতিযোগিতার মুখে পড়তে হচ্ছে দেশি শিল্পগুলোকে।