বিশ্বজয়ী বাঙালি বীরকে মনে রেখেছে ফিলিস্তিনিরা, মৃত্যুতে শোক বিশ্বব্যপী
“লিভিং ঈগলের” খ্যাত বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর গ্রুপ ক্যাপ্টেন (অবঃ) সাইফুল আজমের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন ফিলিস্তিনের নাগরিকরা। ফিলিস্তিনের প্রকৃত বন্ধু উল্লেখ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেন তারা। ফিলিস্তিনের ইতিহাসবিদ ওসামা আল আশকার সাইফুল আজমকে অসাধারণ প্রতিভাধর বিমান সেনা উল্লেখ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লিখেন, 'বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের ইয়েরা আল-আকসা মসজিদকে প্রতিরোধ ও প্রতিরোধে আমাদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ রেখে লড়াই করেছেন।' ফিলিস্তিনের অধ্যাপক নাজি শাউকরি টুইটারে সাইফুল আজমের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেন। তিনি লেখেন,"সাইফুল আজম ফিলিস্তিনকে ভালোবাসতেন এবং জেরুজালেমের স্বার্থে লড়াই করেছিলেন"। এছাড়া ফিলিস্তিনের খ্যাতনামা সাংবাদিক তামের আল-মিশাল সাইফুল আজমকে 'আকাশের ঈগল' বলে উল্লেখ করেছেন।
উল্লেখ্য সাইফুল আজম ছিলেন, পৃথিবীর ২২ জন “লিভিং ঈগলের” মধ্যে তিনি ছিলেন অন্যতম। নিজ জীবদ্দশায় তিনি চারটি দেশের (জর্ডান, ইরাক, পাকিস্তান, বাংলাদেশ) পাইলট হয়ে আকাশে রাজত্ব করেছেন, ভূপতিত করেছেন সর্বোচ্চ সংখ্যক ইজরায়েলি ফাইটার! ভারত এবং ইজরায়েলে পাইলটদের চোখে তিনি ছিলেন এক মূর্তিমান আতঙ্ক! পাকিস্তান বিমানবাহিনীতে কর্মরত অবস্থায় ১৯৬৭ সালের জুন মাসে তৃতীয় আরব-ইসরাইল যুদ্ধ শুরু হয়। যুদ্ধে অংশ নিতে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে ইরাকি বিমানবাহিনীতে বদলি হন সাইফুল আজম। পশ্চিম ইরাকে অবস্থান নিয়ে ইসরাইলিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছিলেন তিনি। যুদ্ধ শুরু হওয়ার মাত্র ৫ দিনের মাথায় গাজা এবং সিনাইয়ের কর্তৃত্ব নিয়েছিল ইসরাইল।
জুনের ৫ তারিখে সিরিয় বিমানবাহিনীর দুই-তৃতীয়াংশ শক্তি ধ্বংস করে দেয় ইসরাইলি বিমান সেনারা। তেমন কোনো প্রতিরোধ ছাড়াই ইসরাইল পশ্চিম তীর এবং জেরুজালেম তারা দখল করেছিল। দখল করেছিল সিরিয়ার গোলান মালভূমিও। তাদের সামনে বিন্দুমাত্র প্রতিরোধ তৈরি করতে পারেনি মধ্যপ্রাচ্যের কোনো দেশ। এ সময় ইসরাইলিদের যমদূত হয়ে জর্ডানে যান সাইফুল আজম। ৬ জুন আকাশ থেকে প্রচণ্ড আক্রমণে মিসরীয় বিমানবাহিনীর যুদ্ধ-সরঞ্জাম গুঁড়িয়ে দেয় ইসরাইলি বাহিনী। একই দিন বেলা ১২টা ৪৮ মিনিটে চারটি ইসরাইলি সুপারসনিক ‘ডাসল্ট সুপার মিস্টেরে’ জঙ্গি বিমান ধেয়ে আসে জর্ডানের মাফরাক বিমান ঘাঁটির দিকে। এবার তাদের লক্ষ্য জর্ডানের ছোট্ট বিমানবাহিনীকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়া। সে সময় ইসরাইলি সুপারসনিকের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার মতো সমকক্ষ বিমান আরবীয়দের ছিল না। তবু ইসরাইলিদের ঠেকাতে মাফরাক বিমান ঘাঁটি থেকে 'হকার হান্টার’ জঙ্গি বিমান নিয়ে বুক চিতিয়ে উড়াল দেন সাইফুল আজম।
- ট্যাগ:
- বাংলাদেশ
- শোক প্রকাশ
- বীর
- ফেসবুক
- ঢাকা