আমেরিকার নির্বাচন ও সরকারব্যবস্থায় যা জানা দরকার
আমেরিকায় থাকেন যাঁরা বাঙালি, তাঁরা অনেকেই মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ইলেকশনের ওপর আমেরিকার সব কিছু নির্ভর করে। জিনিসটা মোটেই সেই রকম না। আসছে নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ইলেকশন। কিন্তু এই ইলেকশন কতটুকু আমাদের প্রবাসী বাঙালিদের আশা–আকাঙ্ক্ষা পূরণ করবে? আর আমেরিকান-বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবে ইলেকশন কী কাজে লাগবে, তা নিচে ছোট করে তুলে ধরলাম। আমেরিকার একজন নাগরিক দুটি সরকারের আওতাধীন। ফেডারেল গভর্নমেন্ট এবং স্টেট গভর্নমেন্ট।
নিচে দুই সরকারের কাজ এবং ইলেকশনগুলো তুলে ধরলাম ১. ফেডারেল গভর্নমেন্ট (Federal Government) বা জাতীয় সরকার এই সরকার পুরো আমেরিকার অর্থাৎ ৫০ স্টেট এবং আমেরিকান টেরিটরির সরকার। এ সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন কয়েকটি বিষয় হলো: -অভিবাসন আইন প্রণয়ন এবং মূল্যায়ন -যুদ্ধ ঘোষণার ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্টকে অনুমতি দেওয়া -সামাজিক সুরক্ষা (সোশ্যাল সিকিউরিটি) রিটায়ারমেন্ট বেনিফিট -মেডিকেয়ার (বয়স্কদের জন্য স্বাস্থ্যবিমা) -এফোর্ডেবল কেয়ার অ্যাক্ট/ ওবামা কেয়ার (মধ্যম আয়ের নাগরিকদের স্বাস্থ্যবিমা) -মুদ্রা ছাপানো এই ফেডারেল গভর্নমেন্ট সংসদ হলো কংগ্রেস। যেখানে দুই কক্ষ: সিনেট এবং হাউস।
এই সিনেটে প্রতি স্টেট থেকে ২ জন নির্বাচিত হন এবং হাউসে প্রতিটি স্টেট থেকে ওই স্টেটের আয়তন এবং জনসংখ্যার অনুপাতে এলাকাভিত্তিক প্রয়োজনীয় প্রতিনিধি নির্বাচিত হন। সিনেটের ইলেকশন ৬ বছর পরপর এবং হাউসের ইলেকশন ২ বছর পরপর হয়, যা অনেক সময় প্রেসিডেন্ট ইলেকশনের সাথে কিংবা মিডটার্ম ইলেকশনের (দ্বিবার্ষিকীয় নির্বাচন) সাথে নেওয়া হয়। সুতরাং আপনি যদি অভিবাসন, প্রেসিডেন্টের যুদ্ধ ঘোষণা, সোশ্যাল সিকিউরিটি কিংবা মেডিকেয়ার- এসব বিষয়ে পরিবর্তন চান, তাহলে আপনাকে শুধু প্রেসিডেন্ট ইলেকশনেই ভোট দিলে কোনো লাভ হবে না।
আপনাকে ফেডারেল গভর্নমেন্টে আপনার স্টেট থেকে সিনেট কিংবা হাউসের সদস্যদের নির্বাচিত করার নির্বাচনে ভোট দিতে হবে। এখন ধরেন আপনি মেডিকেড (নিম্ন আয়ের মানুষদের জন্য স্বাস্থ্যবিমা) কিংবা আনএমপ্লয়মেন্ট (বেকার ভাতা), এসব আইনের পরিবর্তন চান, তাহলে প্রেসিডেন্ট কিংবা ফেডারেল ইলেকশনের ভোটের মাধ্যমে আপনি কোনো পরিবর্তন আশা করতে পারবেন না। কারণ এসব বিষয় দেখে স্টেট গভর্নমেন্ট। যা নিচে দিলাম- ২. স্টেট গভর্নমেন্ট (State Government) বা রাজ্য সরকার আমেরিকায় ৫০টি রাজ্য রয়েছে। এই ৫০টি রাজ্যের আলাদা সরকার রয়েছে। এসব সরকারের আলাদা আলাদা আইন রয়েছে। অর্থাৎ একজন লোক ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের লোক হলে উনি ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যের নাগরিক অর্থাৎ তাঁকে ক্যালিফোর্নিয়া সরকারের আইন মেনে চলতে হবে কিন্তু তিনি যেহেতু মিশিগান রাজ্যের নাগরিক নন, তাই মিশিগান রাজ্য সরকারের আইন তাঁর ওপর প্রয়োগ হবে না।