মার্কিনি যুদ্ধাপরাধের তদন্ত ঠেকাতে আইসিসির ওপর নিষেধাজ্ঞা ট্রাম্পের
আফগানিস্তানে তালেবানবিরোধী লড়াইয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের মিত্রদের হাতে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধ তদন্তের উদ্যোগ নিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)। আইসিসি’র এই তদন্ত ঠেকাতে এবার খোদ আইসিসির ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বৃহস্পতিবার (১১ জুন) ট্রাম্প এ নিষেধাজ্ঞা অনুমোদন করেছেন বলে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল সিএনএন তাদের অনলাইন ভার্সনে এ খবরে জানিয়েছে।
সিএনএন বলছে, আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের মিত্রদের হাতে ঘটে যাওয়া যুদ্ধাপরাধ তদন্তে একমাস আগে সিদ্ধান্ত নিয়েছে আন্তর্জাতিক আদালত। ওই তদন্ত যেন না চলে এজন্য আইসিসি’র সঙ্গে কাজ করছে এমন সকল ব্যক্তির ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, আফগানিস্তান যুদ্ধে তাদের মিত্র ছিল এমন দেশের বিরুদ্ধে তদন্ত করতে চাইলে এই নিষেধাজ্ঞা সমানভাবে কার্যকর হবে বলে হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। অন্যদিকে ইসরায়েলের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্য দৈনিক হারেৎজ জানিয়েছে, যুদ্ধাপরাধ তদন্তের বিষয়ে ইসরায়েলের সঙ্গে সমন্বয় করে যুক্তরাষ্ট্র এ নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
নিষেধাজ্ঞায় বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক আদালতের কোনো ব্যক্তি যুদ্ধাপরাধ তদন্তের উদ্দেশ্যে যুক্তরাষ্ট্র বা আফগানিস্তানের দেশটির কোনো মিত্রদেশে ওই দেশের অনুমতি ছাড়া তদন্ত, গ্রেপ্তার, আটক, বা মামলা করার উদ্দেশ্যে ওই দেশে যাওয়ার ভিসা পাবে না। যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতি বিষয়ক সাময়ীকি পলিটিকো এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, হোয়াইট হাউসের এ সিদ্ধান্তের বিষয়টি উল্লেখ করে এবং আইসিসি’কে কটাক্ষ করে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের কোনো নাগরিককে কোনো ‘ক্যাঙ্গারু আদালত’ (আইসিসি) আদালতের হুমকির মুখে পড়তে দেয়া হবে না। মাইক পম্পেও আইসিসিকে দুর্নীতিগ্রস্ত, অকার্যকর, রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান মন্তব্য করে বলেন, এই প্রতিষ্ঠানটি আদর্শগতভাবে মার্কিন বিরোধী।
এদিকে ট্রাম্পের এমন সিদ্ধান্তের পর এ ঘটনাকে আইসিসি তাদের ওপর ধারাবাহিক অগ্রহণযোগ্য আক্রমণ বলে উল্লেখ করেছে। আইসিসির প্রধান ফাতৌ বেনসৌদা বলেছেনে, এই নিষেধাজ্ঞা আইনের শাসন এবং আদালতের বিচার কার্যক্রমে হস্তক্ষেপ। এছাড়া এটি আইসিসির অস্তিত্বের বিষয়। বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্টের নির্বাহী আদেশ আসায় আইসিসির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের যুক্তরাষ্ট্রে থাকা সম্পদ বাজেয়াপ্ত করতে পারবে ওয়াশিংটন।