জীবনব্যাপী মানবের যত আয়োজন, সে কেবল সুখের জন্যই। সুখের জন্যই দু’জন মানুষ বিয়ের পিঁড়িতে বসে। নীড় রচনা করে। সংসার শুরু করে। সন্তানাদি হয়। অনেকেই সুখ-দুঃখ মিলিয়ে একে অপরের হাত ধরে জীবন কাটিয়ে দেয়। কিন্ত কখনো কখনো অনাকাঙ্ক্ষিতভাবেই কারো সুখের সংসারে কালো মেঘ জমে। দুজনের সম্পর্কে প্রবেশ করে তৃতীয় আরেকজন। স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের দুর্বলতার কোনো এক ফাঁকে এই অবাঞ্ছিত সম্পর্কের বীজ বপিত হয়। এটি সমাজ কর্তৃক ঘৃণ্য একটি মর্যাদাহীন সম্পর্ক। মানব-মানবীর এই নিষিদ্ধ সম্পর্কের নামই হলো ‘পরকীয়া’। ‘পরকীয়া’ অনগ্রসর সমাজ কর্তৃক আরোপিত একটি নেতিবাচক শব্দ। পরকীয়ার বিপক্ষে কথা বললে তথাকথিত নৈতিকতার খোলসে আবদ্ধ সমাজ আমোদে ফেটে পড়ে। বিশেষ করে রক্ষণশীল, ধর্মান্ধ, গোঁড়া, কূপমণ্ডুক একটি শ্রেণি ব্যাপারটা চরমভাবে লুফে নেয়। তারা মনে করে, যে পরকীয়ায় লিপ্ত সে পাপিষ্ঠ। সে সমাজ বহির্ভুত ও ধর্ম বহির্ভুত কাজ করছে। তাদের দৃষ্টিতে পরকীয়ায় লিপ্ত নারী-পুরুষ সবাই ঘৃণ্য। সভ্যতার ক্রমবিকাশের এই পর্যায়ে এসেও আমাদের সমাজ বিবাহ-বহির্ভুত সম্পর্কের ব্যাপারে ধর্ম ও সামাজিক ঘেরাটোপ থেকে বের হতে পারেনি। এই সম্পর্ক সমাজ কর্তৃক এখনো স্বীকৃত নয়।
এখানে পরকীয়া একটি অনাকাঙ্ক্ষিত-অবাঞ্ছিত সম্পর্ক। আবার পরকীয়ার পক্ষে কথা বললে সাথে সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে সমাজ টানা-হেঁচড়া শুরু করে। মানুষটিকে চরিত্রহীনসহ আরও কদর্য বাক্যবাণে অপদস্থ করে। আর তিনি যদি হন একজন লেখক তাহলে তো আক্রমণের তোড় আরও বেগবান হয়। অথচ একজন লেখক সবসময় সামাজিক গভীর মনস্তত্ত্বের বিশ্লেষণের মাধ্যমে কঠিন সত্যকে উন্মোচন করেন। তিনি কখনো সমাজ ও মানুষকে নিয়ে সাধারণের ন্যায় দ্বৈত ভূমিকায় অবতীর্ণ হন না। তিনি গোপন স্বভাব গোপন রেখে লোক দেখানো ন্যায়, সত্য ও ধর্মের বুলি আওড়ে নিজেকে সাধু জাহির করার চেষ্টায় লিপ্ত থাকেন না।
প্রকৃত লেখক এসব দোষে দুষ্ট নন। তার কলমের বলিষ্ঠ লেখনিতে তিনি সমাজকে খুঁড়ে মানব চরিত্রের সত্যটাকে তুলে আনেন। তিনি মানব-মানবীর সম্পর্ককে উদারতা, মানবিকতা, সংবেদনশীলতা ও যৌক্তিকতার নিরিখে দেখতে ভালোবাসেন। অথচ এই সমাজে ‘পরকীয়া’ শব্দটির পুরোটা জুড়েই অপবাদ ও নেতিবাচকতার নিনাদ ফুটে ওঠে। এই শব্দ দ্বারা সমাজ গোপন প্রেম ও ভালোবাসাকে ছিন্নমূলের ন্যায় উপড়ে ফেলতে চায়। এই শব্দ দ্বারা সমাজ অনাহূত সম্পর্কের সত্যটাকে নিমেষে নিক্ষেপ করে আস্তাকুঁড়ে। তারপরও এই সম্পর্কের মাঝে থাকে শাশ্বত একটি ভালোবাসার গল্প। এই প্রেম যতই গোপন হোক না কেন, তা মানব-মানবীর জৈবিক সম্পর্কের বলিষ্ঠতার ইঙ্গিতবহ।
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
We use cookies to ensure you get the best experience on our website.