ট্রাম্প হারলে জার্মানি ‘জিতবে’

ডয়েচ ভেল (জার্মানী) প্রকাশিত: ০৯ জুন ২০২০, ২০:২২

জার্মানি কি নিজের স্বার্থ অনুযায়ী কাজ করতে পারে? এই প্রশ্নে ওয়াশিংটনের জবাবটা মনে হয় খুব স্পষ্ট আর তা হলো, যুক্তরাষ্ট্র সরকারের আশীর্বাদ থাকলেই শুধু তা পারে৷ নর্ড স্ট্রিম টু পাইপলাইনের কাজে জড়িত থাকায় ইউরোপীয় কোম্পানিগুলোর ওপর অবরোধ আরোপের হুমকি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র৷ শতকরা ৯৬ ভাগ কাজ শেষ হয়ে যাওয়া পাইপলাইনটি তৈরি করা হচ্ছে রাশিয়া থেকে জার্মানিতে এবং জার্মানি থেকে ইইউভুক্ত দেশগুলোতে প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহ করার লক্ষ্যে৷ রপ্তানিনির্ভর অর্থনীতির দেশ জার্মানির শিল্পের জন্য জ্বালানি নিরাপত্তা দরকার৷

এ কারণে জার্মানির ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো এবং সরকার পাইপলাইন তৈরিতে জোর দিচ্ছে৷ ট্রাম্প ও ‘শয়তানের অবতার’-এর বিরোধিতা তবে ডনাল্ড ট্রাম্প পাইপলাইনটির কাজ বন্ধ করতে বদ্ধপরিকর৷ জার্মানি বা ইইউভুক্ত দেশগুলোর স্বার্থের গুরুত্বই দিচ্ছে না হোয়াইট হাউজ৷ দু' দেশের সম্পর্কের অবনতিতে ভূমিকা রেখে গত ১ জুন বার্লিনে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে দেশে ফিরেছেন রিচার্ড গ্রেনেল৷ পাইপলাইনটির বিষয়ে ট্রাম্পকে সক্রিয় করার ক্ষেত্রেও এই অকূটনীতিক কূটনীতিবিদের ভূমিকা রয়েছে৷ এছাড়া টেক্সাসের চরম ডানপন্থি রিপাবলিকান সেনেটর টেড ক্রুজও পাইপলাইনটির বিরোধিতা করছেন স্পষ্ট ভাষায়৷

সতীর্থদের অনেকে তাকে ডাকেন ‘শয়তানের অবতার’ নামে৷ লোকটি সম্পর্কে দলের অন্যরা বলে থাকেন, কংগ্রেসে তিনি যদি কোনো কারণে ভয়ানক আহতও হন, কেউ তার জন্য ৯১১-এ সাহায্য চেয়ে ফোন করবে না৷ গত কয়েক বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রর হতাশাগ্রস্থ শিল্পের আনুকুল্য পেয়ে আসছেন ক্রুজ৷ এর বিনিময়ে ইউরোপে গ্যাস বিক্রির সুযোগ আশা করছেন শিল্পোদ্যাক্তারা৷ কিন্তু সমস্যা হলো, যুক্তরাষ্ট্রের গ্যাসের উৎপাদনমূল্য খুব বেশি, ফলে রাশিয়ার গ্যাসের চেয়েও এর দামও বেশি৷ যুক্তরাষ্ট্রের স্ববিরোধিতা অতীতে মুক্তবাজার অর্থনীতির পক্ষে গলা ফাটালেও এ ক্ষেত্রে ওয়াশিংটনের অবস্থান উল্টো৷ প্রতিযোগিতা এড়াতে উদগ্রীব তারা৷

তাছাড়া ট্রাম্পের রাজনীতির মূল কথাই যেখানে ‘অ্যামেরিকা ফার্স্ট' সেখানে অবরোধ আরোপরে হুমকি দেয়াও সহজ৷ তা করতে গিয়ে তিনি সবচেয়ে অনুগত মিত্রের সঙ্গে সম্পর্ককে এখন ঝুঁকিতে ফেলছেন৷ প্রকাশ্যে জার্মান চ্যান্সেলরের প্রশংসা করেন ট্রাম্প৷ তবে গণমাধ্যম এবং সরকারের প্রতিনিধিরা যে ইঙ্গিত দিচ্ছেন তাতে এটা স্পষ্ট যে, তাদের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ও হয়েছে৷ জার্মান চ্যান্সেলর এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট সম্পূর্ণ অন্য ধাতের মানুষ৷ ম্যার্কেল আচরণে শীতল হলেও ট্রাম্প চাইলেই সব মেনে নেবেন এমন মানুষ নন৷ বিরোধের আসল কারণ ম্যার্কেলকে শাস্তি দিতে ১০ হাজার সৈন্য ফিরিয়ে নিতে চেয়েছেন ট্রাম্প৷

সবচেয়ে বড় কথা হলো, যুক্তরাষ্ট্র ইরাক আর আফগানিস্তানে তাদের সব মিশন নিয়ন্ত্রণ করে জার্মানি থেকে৷ তাই নিজের এবং ন্যাটোর স্বার্থে এখানে সৈন্য রাখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র৷ জার্মানি থেকে যথেষ্ট সৈন্য সরিয়ে নিলে ইউরোপ থেকেও কিছুটা বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে যুক্তরাষ্ট্র৷ মিওদ্রাগ সোরিচ, ডয়চে ভেলে এর ফলে উপকৃত হবে চীন৷ পশ্চিমা বিশ্বের যে কোনো বিরোধই ওয়াশিংটনের বিরুদ্ধে বেইজিংয়ের হাতকে শক্তিশালী করে৷ আর যুক্তরাষ্ট্র যে আচরণ করছে তাতে চীনের সঙ্গে তাদের বাণিজ্যবিরোধে ইইউ-কে পাশে পাওয়ার সম্ভাবনা মোটেই বাড়ছে না৷ আগামী জুলাই থেকে ইউরোপীয় কাউন্সিলের সভাপতির দায়িত্ব আনুষ্ঠানিকভাবে নিতে চলেছে বার্লিন৷

এ অবস্থাতেই কোনো এক সময়ে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংয়ের সঙ্গে ইইউভুক্ত দেশগুলোর প্রধানদের নিয়ে বৈঠকে বসতে চান ম্যার্কেল৷ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে এমন বৈঠক ট্রাম্প প্রশাসনকে মোটেই স্বস্তি দেবে না৷ সভায় ট্রাম্প আমন্ত্রিত নন৷ একজন পর্যবেক্ষক হিসেবে বড়জোর দূর থেকে সভা নিয়ে টুইট করতে পারবেন তিনি৷ সবার চোখ তিন নভেম্বরের দিকে আগামী তিন নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন৷ নির্বাচনে ট্রাম্প হেরে গেলে যুক্তরাষ্ট্র আর জার্মানির সম্পর্ক আবার স্বাভাবিক হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল৷

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

এই সম্পর্কিত

আরও