জার্মানির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের আরও অবনতি?
জার্মানি থেকে সাড়ে ৯ হাজার মার্কিন সেনাকে দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। অন্যদিকে জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাইকো মাস বলেছেন, ট্রাম্প প্রশাসন জার্মানি থেকে সেনা ফেরানোর সিদ্ধান্ত নিলে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ওপর তার প্রভাব পড়বে।জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের সঙ্গে ট্রাম্পকে কখনও সেভাবে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করতে দেখা যায়নি। এমনকি জার্মান নেতা সম্পর্কে কটু কথাও বলতে ছাড়েননি মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তার এবারের ক্ষোভের কারণ আপাতদৃষ্টিতে তুচ্ছ মনে হলেও ট্রাম্পের কাছে তা যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। করোনা সংকট সত্ত্বেও তিনি ওয়াশিংটনে জি-সেভেন শীর্ষ সম্মেলনে সশরীরে নেতাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। ম্যার্কেল সেই আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করায় বেজায় চটেছেন ট্রাম্প।সেই ক্রোধের বশে জার্মানিতে মোতায়েন মার্কিন সেনাদের একটা উল্লেখযোগ্য অংশ দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার কথা বলছেন ট্রাম্প।
মৌখিক বক্তব্যের বাইরে সরকারিভাবে অবশ্য এখনও পর্যন্ত এমন কোনও সিদ্ধান্তের কথা জানা যায়নি। তা সত্ত্বেও জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাইকো মাস বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন।‘বিল্ড আম সনটাগ’ সংবাদপত্রকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ট্রাম্পের আমলে আটলান্টিকের দুই প্রান্তের মধ্যে সম্পর্ক জটিল হয়ে পড়লেও নিবিড় সহযোগিতার ফলে আখেরে দুই দেশেরই লাভ হচ্ছে। তার মতে, বেশ কয়েক দশক ধরে এই সম্পর্ক তিলে তিলে গড়ে উঠেছে। শীতল যুদ্ধের সময় থেকে ইউরোপে সবচেয়ে বেশি মার্কিন সেনা জার্মানিতেই মোতায়েন করা হয়েছে।
জার্মানির সঙ্গে ট্রাম্প প্রশাসনের সম্পর্কের অবনতির কথাও স্বীকার করেন হাইকো মাস। ম্যার্কেলের দফতরে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের দায়িত্বপ্রাপ্ত সমন্বয়ক পেটার বায়ার বলেন, ট্রাম্প সত্যিই একতরফাভাবে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার করলে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ওপর এর গভীর প্রভাব পড়বে।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নালসহ বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, পেন্টাগনকে জার্মানিতে মার্কিন সামরিক উপস্থিতি কমানোর নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাম্প।বর্তমানে জার্মানিতে ৩৪ হাজার ৫০০ মার্কিন সেনা মোতায়েন রয়েছে। এর মধ্যে সাড়ে ৯ হাজার জনকে দেশে ফেরাতে চান ট্রাম্প। ভবিষ্যতে জার্মানিতে সর্বোচ্চ ২৫ হাজার মার্কিন সেনা রাখতে চান ট্রাম্প। এই সিদ্ধান্ত সত্যি কার্যকর হলে ন্যাটোর ছত্রছায়ায় ইউরোপের প্রতিরক্ষার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের অবদান কমে যাবে।শেষ পর্যন্ত জার্মানি থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার করা হলে আখেরে রাশিয়া ও চীনের মতো দেশের লাভ হবে হবে বলে মনে করছেন অনেক সামরিক বিশেষজ্ঞ। সংবাদমাধ্যমগুলোকে তারা বলেছেন, জার্মানিকে কেন্দ্র করে মার্কিন সেনারা শুধু ন্যাটো দেশগুলোর সুরক্ষাই নিশ্চিত করে না; বরং ইউরোপ, আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন স্বার্থরক্ষার ক্ষেত্রেও মূল ঘাঁটি হিসেবে জার্মানির বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে।