দীর্ঘ হচ্ছে বিএনপির শীর্ষ নেতাদের পদত্যাগের তালিকা
গত কয়েক বছর ধরে বিএনপির রাজনীতির ছেড়েছেন মোসাদ্দেক আলী ফালু, আলী আজগর, শমসের মুবিন চৌধুরী, ইনাম আহমেদ চৌধুরী, পারটেক্স গ্রুপের এম এ হাশেমসহ অনেকেই। ফলে দিন দিন দীর্ঘ হচ্ছে বিএনপি থেকে শীর্ষ নেতাদের পদত্যাগের তালিকা। দলটির শীর্ষ নেতাদের মধ্যে শুধু ইনাম আহমেদ চৌধুরীর পদত্যাগপত্র স্বীকৃত হয়েছে। কারণ তিনি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন। কিন্তু বাকিদের পদত্যাগপত্র এখনো পড়ে আছে সিদ্ধান্তের অপেক্ষায়। তাছাড়া সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোরশেদ খান, স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জে (অবঃ) মাহবুবুর রহমান ও সিলেটের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর বিএনপি থেকে পদত্যাগের বিষয়টি এখনো বেশ আলোচিত। তাদের মধ্যে দু’জন ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেছেন। তবে আরিফুল হকসহ সিলেটের চার নেতা যুবদলের কমিটি গঠন নিয়ে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের অনুসারীদের কাছে হেরে গিয়ে পদত্যাগপত্র জমা দেন। মাহবুবুর রহমান তার স্পষ্টবাদিতার কারণে বিএনপির শীর্ষ নেতাদের বিরাগভাজন হন। দলের হাইকমান্ড থেকে তাকে অবস্থান পরিবর্তন করার কথা বলা হলেও তাতে রাজি না হয়ে তিনি পদত্যাগ করেন বলে ঘনিষ্ঠজনরা জানান। আর মোরশেদ খান পদত্যাগ করেছেন তার ব্যবসা-বাণিজ্যের স্বার্থে।
এসব শীর্ষ নেতাদের কারো পদত্যাগপত্র নিয়ে বিএনপি আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি। বিএনপির দায়িত্বশীল সূত্র থেকে জানা গেছে, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোরশেদ খানের পদত্যাগ দলটির সহজভাবে মেনে নেয়নি। আর মাহবুবুর রহমান যদি পদত্যাগ করে চুপচাপ থাকেন তাহলে কোন আপত্তি নেই। কারণ ওয়ান ইলেভেনের সময় তিনি সংস্কারপন্থী ছিলেন এবং দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের একক সিদ্ধান্তের তিনি বিরোধী। এ ছাড়া বর্তমানে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান, মেজর (অবঃ) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, শাহ মোয়াজ্জেম হোসেনসহ আরো কিছু নেতা আছেন, যারা আজ নিষ্ক্রিয় তালিকায়। কেননা দলের নীতিনির্ধারকরা মনে করেন, আব্দুল্লাহ আল নোমানকে কোনো দায়িত্ব দেয়া হলে তা তিনি পালন করেন। তবে নিজে উদ্যোগী হয়ে কিছুই করেন না। আর বাকি দু’জনকে কাজ দেয়া হলেও তারা করেন না। তাই তাদের নিষ্ক্রিয় নেতা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
দলের নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিএনপিতে এখন এই পদত্যাগী ও নিস্ক্রিয় বা অবসরপ্রাপ্তদের ঝুলিয়ে রাখার কৌশল নেয়া হয়েছে। কারণ দলে তাদের অতীতের অবদান এবং ভবিষ্যতে যদি কখনো সক্রিয় হন সেই আশায়। তাই দুই একজন ছাড়া আর কারো পদত্যাগপত্র গ্রহণ করছে না বিএনপি।