নতুন মা হয়েছেন? ফিট থাকুন সন্তানের স্বার্থে
সাধারণত সন্তানের জন্মের পর মায়ের শরীর দুর্বল থাকে। তাই এই সময় বাড়তি যত্নের প্রয়োজন। জানা উচিৎ, আপনার ছোট্ট বাবুকে দেখভালের স্বার্থেই আপনাকে ফিট থাকতে হবে। তাই বলে ডেলিভারির কিছু দিন পর থেকেই প্রচুর এক্সারসাইজ আর কম খাওয়ার কথা ভুলেও ভাববেন না। মা হওয়ার সময়ে শরীর যেমন ধাপে ধাপে বদলায়, ঠিক সে ভাবেই ধীরে ধীরে আপনি আগের মতো চেহারা ফিরে পাবেন। ওজন কমিয়ে রোগা হওয়ার চেয়ে জোর দিন ফিটনেসে। বাচ্চাকে দেখাশোনা করার জন্য মায়ের ফিট থাকা অত্যন্ত জরুরি।
যেভাবে শারীরচর্চ করবেন
শরীরের উপর নির্ভর করে স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে সন্তান হওয়ার পরের দিন থেকেই অল্প হাঁটাচলা করুন। চিকিৎসকের কথা মেনে চলুন। নর্মাল ডেলিভারি হলে স্বাভাবিক ছন্দে ফেরাটা সহজ হয়। সিজারিয়ান ডেলিভারির ক্ষেত্রে মায়ের শরীর একটু হলেও দুর্বল থাকে। তবে সন্তান প্রসবের পর থেকে প্রত্যেক দিনই একটু হাঁটাহাঁটি করবেন। ধীরে ধীরে হাঁটার সময় বাড়াতে হবে। নবজাতককে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার পর থেকেই আসল চ্যালেঞ্জ। সময় মতো ব্রেস্ট ফিডিং, বাচ্চাকে ঘুম পাড়ানো, ন্যাপি বদলানো, কাপড় কাচা ইত্যাদি চলতেই থাকবে। আছে ঘুম নিয়ে। তাই বাচ্চা যখন ঘুমোবে আপনিও একটু ঘুমিয়ে নিন।
ভারতীয় ফিটনেস বিশেষজ্ঞ সৌমেন দাস জানান,
হাঁটাহাঁটি করাটা এই সময়ের জন্য সবচেয়ে জরুরি ব্যায়াম। প্রত্যেক দিন তিন-চার বেলা হাঁটুন। ছাদ, বারান্দা থাকলে ভাল, নয়তো ঘরের মধ্যেই পায়চারি করুন। ঘুম থেকে উঠে, বিকেলে এবং ভারী খাওয়ার পরে হাঁটাহাঁটি করলে শরীর ফিট থাকবে। করোনার কারণে পার্ক, রাস্তায় হাঁটা এড়িয়ে চলুন। ছাদ, বারান্দা বা বাড়ির সামনের অংশে হাঁটতে থাকুন। আস্তে আস্তে হাঁটার পরিমাণ বাড়ান।
সন্তান জন্মের পর মায়েরা পেট নিয়ে চিন্তিত থাকেন। দু’টি এক্সারসাইজ পেটের জন্য আদর্শ। ক্রাঞ্চেস এবং লেগ রাইজ হোল্ডিং। প্রথমে দিনে দশটি করে ক্রাঞ্চেস দিয়ে শুরু করুন। পরে তা বাড়াবেন। লেগ রাইজের ক্ষেত্রে প্রথম দিকে অন্তত দশ সেকেন্ড পা হোল্ড করার চেষ্টা করুন। দিনে দু’বেলা এই ব্যায়াম করতে পারেন। ওয়াল পুশ আপ করুন ১০-১২ বার করে তিন সেট। স্কোয়াট করতে পারেন, ১০টা করে তিন সেট। এক সপ্তাহের গ্যাপে টার্গেট বাড়ান।
সব ধরনের স্ট্রেচিং এ সময়ে করা সম্ভব নয়। দেওয়ালের দিকে পিঠ রেখে দাঁড়িয়ে, দু’হাত সোজা উপরে তুলে দিন। এ বার শরীরটা স্ট্রেচ করতে থাকুন। পায়ের টো-এর উপরে ভর দিয়ে শরীর উপরের দিকে স্ট্রেচ করুন। এ অবস্থায় ২০ কাউন্ট করুন। এই এক্সারসাইজটি দিনে বার চারেক করতে পারেন।
ফুসফুস ভাল রাখার জন্য ডিপ ব্রিদিংয়ের পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। নাক দিয়ে শ্বাস টেনে মুখ দিয়ে ছাড়ুন। ১০ বার করে দিনে বেশ কয়েক বার এটা করতে পারেন।
ডায়েটে যে বিষয় খেয়াল করবেন
সন্তান জন্মের মাস তিনেক পর পর্যন্ত কিছু ভিটামিন খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। আয়রন, ফলিক অ্যাসিড ইত্যাদি। তবে ডাক্তারের সঙ্গে আলোচনা করেই সে সব ওষুধ খাবেন। আর ওজন বেড়ে গিয়েছে বলে খাওয়া কমাবেন না। ব্রেস্ট ফিডিং এবং দুর্বল শরীরের কারণে প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, ফ্যাট সব কিছুরই প্রয়োজন একজন মায়ের। সেই সঙ্গে প্রচুর পরিমাণে পানি। ডেলিভারির মাস তিন-চার পর থেকে ডায়েটের বিষয়ে চিন্তাভাবনা করুন। সন্তান ব্রেস্ট ফিড করলে মায়ের বাইরের খাবার খাওয়া একেবারেই উচিত নয়। তার সঙ্গে মিষ্টি ও ফ্যাট জাতীয় খাবারও বুঝেশুনে খেতে হবে। সবুজ আনাজপাতি, ফল, যে কোনও একটি প্রোটিন রাখুন রোজকার খাদ্য তালিকায়। ডায়াটিশিয়ানের পরামর্শ মেনে শরীর বুঝে চার্ট বানান।
- ট্যাগ:
- লাইফ
- মা হওয়া
- ফিটনেস ভিডিও