বাম্পার ফলনের পরও লোকসানের মুখে তিস্তার চরের মিষ্টি কুমড়া চাষিরা
তিস্তার চরাঞ্চলে ক্ষতিকর তামাকের বিকল্প হিসেবে মিষ্টি কুমড়ার চাষ করেও মধ্যস্বত্বভোগী ফড়িয়াদের কারণে ন্যায্যমূল্য থেকে বরাবরই বঞ্চিত হন কুমড়া চাষিরা। পাইকারদের সঙ্গে সরাসরি ব্যবসায়িক সংযোগ গড়ে না ওঠার কারণে কুমড়ার প্রকৃত দাম পান না তারা। এছাড়া কুমড়া সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় উৎপাদন মৌসুমে পুরো ফসল বাধ্য হয়ে কম দামেই বিক্রি করে দিতে হয় কৃষকদের। তার ওপর এ বছর করোনা মহামারির কারণে লোকসানের মুখে পড়েছেন কুমড়া চাষিরা। অথচ কৃষকের উৎপাদিত সেই মিষ্টি কুমড়া মধ্যস্বত্বভোগী ফড়িয়ারা পানির দরে কিনে তিন থেকে চারগুণ বেশি দামে বিক্রি করছেন বিভিন্ন বাজারে।
বর্ষা মৌসুম শেষে তিস্তায় চর জাগে। এরপর ৬ মাস শুকনো থাকে নদী। পড়ে থাকা বালুচরকে চাষ উপযোগী করতে কঠোর ঘাম ঝরায় নদীভাঙনের শিকার বাঁধে আশ্রিত ভূমিহীনরা। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে রবি মৌসুমে ধু-ধু বালুচরে তারা ফলান মিষ্টি কুমড়া। খাঁ খাঁ রোদে বালুচরে কুমড়া গাছে পানি দেন কৃষক। কয়েক বছর ধরে তিস্তার বালুচরে মিষ্টি কুমড়া চাষের ফলে কমেছে ক্ষতিকর তামাকের আবাদ। কিন্তু কৃষকরা হাড়ভাঙা খাটুনির পর উৎপাদিত ফসল বিক্রি করে প্রকৃত মুনাফা পান না। পাশাপাশি দেশি পদ্ধতিতে তারা বাড়িতে মাচা করেও বেশিদিন কুমড়া সংরক্ষণ করতে পারেন না। উৎপাদন মৌসুমে একসঙ্গে সব কুমড়া বাজারে ওঠায় দামও পড়ে যায়। তাই সংরক্ষণাগারের অভাবে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এছাড়া কৃষকদের সঙ্গে সরাসরি বাজারজাত ব্যবস্থাপনা গড়ে না ওঠায় ফায়দা লুটছেন মধ্যস্বত্বভোগী ফড়িয়ারা। লাভের সিংহভাগই চলে যায় তাদের পকেটে। সরাসরি বাজারজাত করার ব্যবস্থা থাকলে কৃষকের কাছে সোনা হয়ে ধরা দিত তামাকের বিকল্প এই মিষ্টি কুমড়া।
- ট্যাগ:
- বাংলাদেশ
- লোকসান
- কুমড়া চাষ
- রংপুর জেলা