সিন্ডিকেটের স্বার্থ না দেখায় সরে যেতে হয়েছে: শহীদউল্লাহ
কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের (সিএমএসডি) সদ্যবিদায়ী পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মোহাম্মদ শহীদউল্লাহ বলেছেন, করোনাভাইরাস মোকাবিলায় যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম কেনাকাটায় সিন্ডিকেটের স্বার্থ বাস্তবায়ন না করায় তাকে সরে যেতে হয়েছে। কেনাকাটার বিষয়ে ‘উচ্চ পর্যায়ের’ অনুরোধ না রাখা কাল হয়েছে তার। বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল যমুনা টিভির সঙ্গে আলাপে তিনি এ দাবি করেন।
সোমবার স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আদেশে পরিচালক পদ থেকে শহীদউল্লাহকে দায়িত্ব থেকে অবমুক্ত করা হয়। নতুন পরিচালকের কাছে তাকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে বলা হয়। এর আগে গত ২২ মে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের আদেশে অতিরিক্ত সচিব আবু হেনা মোরশেদ জামানকে সিএমএসডির পরিচালক পদে নিয়োগ দেয় সরকার।
বেসরকারি ওই টিভি চ্যানেলের প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও তার ছেলের পছন্দের প্রতিষ্ঠান থেকে কেনাকাটা করার জন্য অনুরোধ আসে সদ্যবিদায়ী পরিচালকের কাছে। তিনি তা আমলে নেননি বলেই তাকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেন।
ডা. শহীদউল্লাহ বলেন, এন৯৫ মাস্ক সরবরাহের ক্ষেত্রে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের কাছে ব্যাখ্যা না চেয়ে একপাক্ষিকভাবে সিএমএসডির কাছে দোষ চাপানো হয়েছে। তাহলে এর দায় কার? জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি বলব যে সম্পূর্ণ সেই প্রতিষ্ঠানের (জেএমআই) ওপর বর্তায়। যখন আমাদের নজরে আসে বিষয়টি, হাসপাতাল থেকে সাথে সাথে সেগুলো তুলে নিই।’
এই সেনা কর্মকর্তা বলেন, ‘জেএমআইকে আমরা সাথে সাথে চিঠি দিই। জানতে চাই কেন এই মাস্ক তারা সরবরাহ করেছে। তখন তারা ভুল স্বীকার করে। সাথে সাথে আমরা বিষয়গুলো জানিয়ে মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিই, তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য।’
কোভিড-১৯ সংক্রমণ রোধে হাসপাতালের যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম কেনাকাটার দায়িত্ব সিএমএসডির। শুরুতেই এন৯৫ মাস্ক নিয়ে আলোচনায় আসে প্রতিষ্ঠানটি। ব্যাখ্যা পাল্টা ব্যাখ্যার পর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে জমা পড়ে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন। ফলাফল হিসেবে প্রতিষ্ঠানের পরিচালকের বদলি করা হয় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
চিকিৎসকদের শীর্ষ সংগঠনগুলো মনে করে প্রথাভঙ্গ করে সেনাবাহিনীর মেডিকেল কোরের একজনকে সরিয়ে প্রতিষ্ঠানটিতে একজন অতিরিক্ত সচিবকে বসানো হয়। যার বিরোধিতা করে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) এবং ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদও (স্বাচিপ)।
গত ২৩ মে জনপ্রশাসন সচিবকে লেখা যৌথ চিঠিতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন ও স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ অবগত হয়েছে যে, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে প্রশাসন ক্যাডারের একজন অতিরিক্ত সচিবকে পরিচালক, কেন্দ্রীয় ঔষধাগার (সিএমএসডি), স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ পদে প্রেষণে নিয়োগ করা হয়েছে। বিষয়টি অত্যন্ত উদ্বেগের। কারণ প্রশাসন ক্যাডারের একজন কর্মকর্তা স্বাস্থ্য ব্যবস্থার যাবতীয় চিকিৎসা সামগ্রী ক্রয়ের সাথে কোনোভাবেই সম্পৃক্ত নন। আমাদের জানামতে আজ পর্যন্ত উক্ত পদে চিকিৎসক কর্মকর্তা ব্যতীত কখনোই কাউকে পদায়িত করা হয় নাই।’