১১ সপ্তাহ পর স্পেনে জুম্মার নামাজ
দীর্ঘ আড়াই মাস ধরে ইউরোপের অন্যতম বৃহৎ দেশ স্পেনে চলছে জরুরি অবস্থা। করোনাভাইরাসের প্রকোপে নাজেহাল দেশটিতে এত দিন বন্ধ রাখা হয়েছিল সামাজিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয়সহ সব রকমের জনসমাগম। আর সে জন্য ১৩ মার্চ থেকে জারি হয়েছিল লকডাউন। এ কারণে এত দিন মুসলমানদের মসজিদে নামাজ পড়ার নিষেধাজ্ঞা ছিল।
২০ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসলমান পুরো ১১ সপ্তাহ ধরে বঞ্চিত ছিলেন জুমাসহ মসজিদে জামাতে নামাজ পড়া থেকে। গেল সপ্তাহে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতরের নামাজ সবাইকে পড়তে হয়েছে নিজ নিজ ঘরে। দেশটির মুসলমানেরা মসজিদের দরজা খুলে দেওয়ার প্রত্যাশায় ছিলেন।
অবশেষে সীমিত পরিসরে হলেও এ দেশের মুসলমানদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে দেশটির কিছু অঞ্চলের নির্দিষ্ট কিছু মসজিদ। কঠোর নিরাপত্তা বিধান বজায় রেখে ১১ সপ্তাহ পর দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলে মসজিদে মসজিদে আদায় হয়েছে গতকাল শুক্রবার জুমার নামাজ। গত ২ সপ্তাহ থেকে ক্রমাগত স্পেনের করোনা–পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে।
মৃত্যুর হার কমার পাশাপাশি উল্লেখযোগ্য হারে কমছে আক্রান্তের সংখ্যা। আর সে জন্যই দেশটির সরকার বিভিন্ন অঞ্চলভেদে শিথিল করছে জরুরি অবস্থা, যা ভাগ করা হয়েছে চারটি ভিন্ন ধাপে। গত বৃহস্পতিবার সরকারের পক্ষ থেকে বিবৃতিতে বলা হয়েছে আগামী সপ্তাহের শুরুর দিন, অর্থাৎ সোমবার থেকে দেশটির ৭০ ভাগ অঞ্চল চলে আসবে দ্বিতীয় ধাপে।
আর সে কারণেই দেশটির মুসলিম জনগোষ্ঠী সীমিত পরিসরে অল্প কিছু অঞ্চলে অনুমতি পেয়েছেন মসজিদে গিয়ে সালাত আদায়ের। গতকাল শুক্রবার দেশটির দ্বিতীয় বৃহৎ শহর ও পর্যটন নগরী বার্সেলোনায় বিভিন্ন মসজিদ ঘুরে দেখা যায় শান্তিপূর্ণ এবং পর্যাপ্ত নিরাপত্তা বিধান মেনেই পড়া হয়েছে পবিত্র জুমার নামাজ।
মসজিদ কর্তৃপক্ষ আগেই নির্দেশনা দিয়েছিল সবাইকে মাস্ক পরে আসার জন্য, অন্যথায় ভিতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। সঙ্গে সঙ্গে সবাইকে নিজ নিজ জায়নামাজ নিয়ে আসার জন্য উৎসাহিত করা হয়েছিল। শহরটির বেশির ভাগ মসজিদে অজুখানা বন্ধ রাখা হয়েছিল, সবাইকে বাসা থেকে অজু করে আসার কথা বলা হয় আগেই।
দেশটির বেশির ভাগ মসজিদ মরক্কো, পাকিস্তানি ও বাংলাদেশিদের দ্বারা পরিচালিত। বার্সেলোনায় অবস্থিত এ রকম বেশ কিছু মসজিদে খবর নিয়ে জানা যায়, এখনকার বেশির ভাগ মসজিদে একাধিক জামাত অনুষ্ঠিত হয়, কোনো কোনো মসজিদে তিন থেকে চারটি জামাত অনুষ্ঠিত হওয়ার খবরও পাওয়া যায়।
মূলত স্বল্প পরিসরে মানুষ ভেতরে প্রবেশ করানোর জন্য এ রকম ছোট ছোট করে জামাত আয়োজন করা হয়। একেকটা জামাতে মসজিদভেদে ২৫ থেকে সর্বোচ্চ ৫০ জন মুসল্লি অংশগ্রহণ করতে পেরেছেন। বাকিদের বাইরে দাঁড়িয়ে পরবর্তী জামাতের জন্য অপেক্ষা করতে দেখা যায়।