ইতিহাসের কাঠগড়ায় জিয়াউর রহমান

প্রথম আলো মারুফ মল্লিক প্রকাশিত: ৩০ মে ২০২০, ১২:০৩

জিয়াউর রহমান দেশের ইতিহাসে আলোচিত শাসকের নাম। একই সঙ্গে তিনি নিন্দিত ও নন্দিত। আজ ৩০ মে এই সাবেক রাষ্ট্রপতির ৩৯তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৮১ সালের এই দিনে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে সেনাবাহিনীর কিছু বিপথগামী সদস্যের হাতে তিনি নিহত হন। জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সেক্টর কমান্ডার ও জেড ফোর্সের অধিনায়ক ছিলেন।

রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে মোটাদাগে বড় অভিযোগ দুইটি। স্বাধীনতা বিরোধীদের রাজনীতির সুযোগ দেওয়া এবং রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নিষ্ঠুরভাবে দমন করা। এসব অভিযোগ ও সমালোচনা থাকার পরও দেশের অন্যতম জনপ্রিয় এক শাসক তিনি। বিএনপিও অন্যতম প্রধান দল। দলটির তেমন সাংগঠনিক দক্ষতা ও শক্তি বর্তমানে নেই। কিন্তু নানা জুলুম, নির্যাতন ও চাপের মুখেও দলটি এখনো টিকে আছে। জনসাধারণের বড় একটি অংশই দলটিকে সমর্থন করে।

রাজনীতির এক জটিল ও চরম অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে জিয়াউর রহমান ক্ষমতার দৃশ্যপটে চলে আসেন। তখন একটি বড় প্রশ্ন ছিল যে তিনি পরিস্থিতি সামাল দিতে পারবেন কিনা। ১৯৭৬ সালে নিউজিল্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল রিভিউতে প্রকাশিত এক প্রবন্ধে ঐতিহাসিক গওহর আলী মন্তব্য করেছিলেন, জিয়া সবকিছু নিয়ন্ত্রণে নিলেও শেষ পর্যন্ত কুলিয়ে উঠতে পারবেন না। ওই প্রবন্ধে তিনি বলেছিলেন, সামরিক বাহিনী মূলত চার ভাগে বিভক্ত ছিল। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অনুসারী ও রক্ষীবাহিনী থেকে আসা অংশ, জিয়ার অনুসারী, পাকিস্তান প্রত্যাগত অংশ ও জাসদপন্থী দল। সব সামলে জিয়া এক ধরনের স্থিতিশীলতা এনেছিলেন।

এ রকম নানা ধারণা, প্রশ্ন, সমালোচনা, প্রতিপক্ষের ষড়যন্ত্র সবকিছু সামলে নিয়েই প্রায় পাঁচ বছর দেশ শাসন করেছেন জিয়াউর রহমান। জিয়াউর রহমানের শাসনামলকে দুইভাবে বিশ্লেষণ করা যায়। প্রথমত, ৭০ দশকের আর দশজন সামরিক শাসকের মতোই তিনি কঠোর ও কৌশলী। প্রথম দিকে প্রতিপক্ষকে কঠোরভাবে দমন করেন। সামরিক বাহিনীর অনেক সদস্যকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় তাঁর সময়। এর পাশাপাশি তিনি কিছু গণমুখী সামাজিক ও অর্থনৈতিক কর্মসূচি গ্রহণ করেন যা জনসাধারণকে আকৃষ্ট করেছিল। খাল খনন কর্মসূচি এর অন্যতম। ওই সময় তিনি দেড় হাজারের বেশি খাল খনন ও পুনঃখনন করেছিলেন। যার অর্থনৈতিক সুফল জনসাধারণ পেয়েছে। ১৯৭৭-৭৮ সালে খাদ্য শস্য রেকর্ড পরিমাণ উৎপাদিত হয়। প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৬ দশমিক ৪ শতাংশ। এ ছাড়া গণশিক্ষা কার্যক্রম, গ্রাম সরকার, গ্রাম প্রতিরক্ষাবাহিনী গঠনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেন। তিনি জনসাধারণকে ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করেন, রাষ্ট্র পরিচালনায় তাদেরও শরিকানা আছে। তৃণমূলকে জাগিয়ে তুলতে পেরেছিলেন তিনি। তিনি পোশাক রপ্তানির উদ্যোগ নিয়েছিলেন। মধ্যপ্রাচ্যে শ্রমিক পাঠানোরও উদ্যোগ জিয়া সরকারের আমলেই নেওয়া হয়। পরিবার পরিকল্পনা কর্মসূচি তার আমলেই শুরু হয়।

সামরিক শাসকদের খুবই সাধারণ প্রবণতা হচ্ছে ক্ষমতা দখলের পরই চটকদার কিছু কর্মসূচি বা উন্নয়ন কর্মকাণ্ড চালিয়ে শুরু জনসাধারণকে গণতন্ত্রের দাবি থেকে সরিয়ে রাখা। কিন্তু জিয়াউর রহমান এখান থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন। তার সময়ে নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ প্রকৃতপক্ষেই জনসাধারণের জন্য সুফল এনেছিল। এখন দেশে বৃহৎ ওয়াটার রিজার্ভার বা পানি সংরক্ষণাগারের কথা বলা হয়। খাল খনন এই ওয়াটার রিজার্ভারেরই ৭০ দশকের রূপ।

তিনি অনেককেই প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কাছে টানতে পেরেছিলেন। গবেষক মহিউদ্দিন আহমেদের ‘বিএনপির সময় অসময়’ (প্রথমা প্রকাশনী) বই থেকে জানা যায়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শামসুল হক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সৈয়দ আলী আহসান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মুজাফফর আহমেদ বিভিন্ন সময় জিয়াউর রহমানের সঙ্গে কাজ করেছেন। দেশের প্রধান বাম দল সিপিবি খাল খনন কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছে। সাবেক মন্ত্রী ও সচিব মহিউদ্দিন খান আলমগীরের পিএইচডির অভিসন্দর্ভ খাল খনন কর্মসূচি নিয়ে করা। ড. ইউনুসকে ক্ষুদ্র ঋণ কর্মসূচি শুরু করতে সহায়তা করেছিলেন জিয়া। আইসিডিডিআরবি প্রতিষ্ঠিত হয় সেসময়।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

এই সম্পর্কিত

আরও