বিশ্বজুড়ে চলছে মহামারী, যা ঠেকানোর জন্য বিশ্ব শাসকগোষ্ঠী ব্যর্থ হওয়ার পাশাপাশি সঠিক দিকনির্দেশনাও দিতে পারছে না। এর মূল কারণ, বিজ্ঞানীদের মতে, প্রাণঘাতী করোনা এমন একটি ভাইরাস যা সময়ে সময়ে তার চরিত্র পাল্টে ফেলে। দ্বিতীয়ত, পৃথিবী যখন অমার্জনীয় পাপ, জুলুম, অত্যাচার, মিথ্যাচার, অশ্লীলতা, নির্যাতন, অবিচার, দুঃশাসনে নিমজ্জিত হয়ে পড়ে তখনই এ ধরনের মহামারীর উৎপত্তি হয়। করোনা একটি ব্যতিক্রমধর্মী ভাইরাস, যা নির্দিষ্ট কোনো রাষ্ট্র বা এলাকায় আবির্ভূত হয়নি বরং একই সময়ে প্রকাশ পেয়েছে গোটা বিশ্বে। ভাইরাস প্রতিরোধে ব্যর্থ হয়ে বিশ্বের নেতারা একে অন্যকে দোষারোপ করছেন।
সর্দি, হাঁচি, কাশি বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে কোনো কঠিন রোগ হিসেবে বিবেচিত হতো না। যেমন ক্যান্সার, যক্ষ্মা, ডায়াবেটিস, হার্ট প্রবলেম, কিডনি, গ্যাস্ট্রিক, প্রেসার প্রভৃতিকে মানুষ জটিল রোগ হিসেবে বিবেচনা করে চিকিৎসক বা হাসপাতালের শরণাপন্ন হয়। ‘ব্যাঙের আবার সর্দি!’ এটা বাঙালির একটি জনপ্রিয় প্রবাদ। অর্থাৎ ব্যাঙ যেমন পানিতে বাস করে, ঠিক তেমনি বাঙালিকে বন্যা, বৃষ্টির পানিতে ডুবে থেকেই কৃষিকাজসহ অন্যান্য কাজ করতে হয়। সর্দি, কাশি বা গলাব্যথা হলে গরম পানিতে গড়গড়া করার উপদেশ চিকিৎসকরা এতকাল দিয়েছেন। সর্দি হলে, দাদী বলতেন, শরীর নতুন-পুরান হয়, হাঁচি দিলে শরীর পাতলা হয় এবং কারো হাঁচির আওয়াজ শোনার সাথে সাথে বলতেন ‘আলহামদুলিল্লাহ’। অথচ সেই হাঁচি, কাশিই হলো মরণব্যাধির প্রধান হাতিয়ার, যা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছেÑ সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে হবে, অর্থাৎ কেউ কারো সংস্পর্শে বা কাছে যেতে পারবে না, নাক মুখ ঢেকে চলাফেরা করতে হবে।
পরীক্ষা করে করোনা নিগেটিভ হলেও নিজ স্ত্রী দূরত্ব রক্ষা করে চলে, মরলে আত্মীয়-স্বজন তো পরের কথা স্ত্রী, সন্তানরাও কাছে আসে না। এ উপলক্ষে মানুষ কয়েকটি শব্দের সাথে পরিচিত হলো, যেমন- লকডাউন, আইসোলেশন, সেলফ কোয়ারেন্টিন, প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন। আরো অভ্যস্ত হলো মাস্ক ব্যবহারে, যা পরে থাকা রীতিমতো অস্বস্তিকর। অন্য দিকে আছে সুন্দর চেহেরা ঢেকে রাখার মনোবেদনা। তবুও বাঁচার তাগিদে এই অস্বাভাবিকতাকেও মানুষ মেনে নিতে বাধ্য হচ্ছে।
কোনো রাজা, বাদশাহ, শাসনকর্তা, দলীয় প্রধান, অফিসের বস এককথায় বলতে গেলে কোনো সরকারই সমালোচনা পছন্দ করা তো দূরের কথা, সহ্যই করে না। তবে আগের চেয়ে অসহিষ্ণুতার মাত্রা দিন দিন অনেক বৃদ্ধি পেয়ে প্রকট আকার ধারণ করেছে। ফলে সৃষ্টি হচ্ছে নতুন নতুন নিবর্তণমূলক ডিজিটাল আইন। করোনা মোকাবেলায় সরকারি ব্যর্থতাকে ঢাকা দেয়ার উদ্দেশ্যে মিডিয়াকে সুকৌশলে আরো নিয়ন্ত্রিত রাখার জন্য গত ৭ মে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ‘সরকারি প্রতিষ্ঠানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার নির্দেশনা, ২০১৯ (পরিমার্জিত সংস্করণ)’ প্রণয়ন করে নিষেধাজ্ঞাসহ কিছু নির্দেশনা জারি করেছে। ওই নির্দেশাবলির মধ্যে একটি নির্দেশ রয়েছে যা কার্যত যাই হোক না কেন, শুনতে ভালো লাগে, বাস্তবায়িত হলে জাতীয় পরিবেশ আরো সুন্দর ও জাতি সমৃৃদ্ধশালী হওয়ার কথা। নির্দেশনাটি হলোÑ ‘জাতীয় ঐক্য ও চেতনার পরিপন্থী কোনো রকম তথ্য-উপাত্ত প্রকাশ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।’ আশার কথা, এ জন্য বলছি, নির্দেশিকায় ‘জাতীয় ঐক্য ও চেতনার’ প্রতি সরকার গুরুত্ব দিয়েছে বলে প্রতীয়মান। এখন প্রশ্ন হলো, ‘জাতীয় ঐক্যের’ প্রয়োজনীয়তা কি সরকার উপলব্ধি করে? বিরোধী দলের সাথে সরকারের পূর্বাপর ব্যবহার ও মন্ত্রীদের বক্তব্য পর্যালোচনা করলে ‘ঐক্যের’ প্রশ্নে সরকারের মতলব কি পজিটিভ না নিগেটিভ? মন্ত্রণালয়ের ওই প্রজ্ঞাপনের নির্দেশিকা ও মন্ত্রীদের চটকদার বক্তব্য কি একই সুরে বাজছে, নাকি এখানে উল্টো সুর রয়েছে?
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
We use cookies to ensure you get the best experience on our website.