শুধু করোনা-ঘূর্ণিঝড় নয়, একদিনও আমাদের এলাকায় আসেননি এমপি
কখনও মাথায় মাটির ঝুড়ি আবার কখনও চাল মুরগি কিনে অসহায় মানুষের বাড়িতে হাজির উপকূলীয় এলাকা সাতক্ষীরা-৪ আসনের সংসদ সদস্য এসএম জগলুল হায়দার। কখনও শ্রমিকদের সঙ্গে কোদাল হাতে মাটি কেটে ফেসবুকে ভাইরাল। এসব কাজে বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছেন তিনি।
তবে সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দেখা যায়নি এই এমপিকে। এ নিয়ে চরম ক্ষোভ উপকূলীয় বাসিন্দাদের। তাদের অভিমত, তিনি শুধু ফেসবুকেই সীমাবদ্ধ; বাস্তবে মানবসেবায় নেই।শ্যামনগর উপজেলার বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ভবতোষ কুমার মন্ডল বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের পর আমার ইউনিয়নের অবস্থার উন্নতি হয়নি। সবকিছু ভেসে গেছে। এলাকাবাসী স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধ সংস্কার করেছেন। জোয়ার এসে সেটিও নিয়ে গেছে। এমপি এসে দেখে গেছেন।
উপকূলীয় গাবুরা ইউনিয়নের লেবুগুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা রাফিজা বেগম বলেন, আমরা বাঁধ চাই, ত্রাণ চাই না। এমপি একদিনও এলাকায় আসেননি। এসব লোককে ভোট দিয়ে লাভ নেই। ভোট দিয়ে আমাদের কি হবে? কোনো কাজে আসে না এমপি।
একই গ্রামের বাসিন্দা করিমন বেগম। বর্তমানে লেবুগুনিয়া এলাকায় একটি উঁচু রাস্তার ওপর বসবাস করছেন তিনি। বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়ে গেছে গোটা এলাকা। ঘূর্ণিঝড়ে ভেঙে গেছে ঘরবাড়ি।
করিমন বেগম বলেন, করোনা গেল, ঘূর্ণিঝড় গেল। এতকিছুর পরও এমপির দেখা নেই। বছর বছর নদী ভাঙে, কেউ দেখে না। রাস্তার ওপর থাকি। বাথরুমের সমস্যা। খাওয়া-দাওয়ার সমস্যা। কেউ দেখে না এসব কষ্ট। আমরা খুব কষ্টে আছি। খাবার পানিও নেই আমাদের।
শ্যামনগর উপজেলার উপকূলীয় পদ্মপুকুর ইউনিয়নের বন্যতলা গ্রামের বাসিন্দা আকবার হোসেন বলেন, আমরা জানি না এমপি কেন এলাকায় আসেন না। ওনার কি শুধু ভোটের দরকার। এমপি, উপজেলা চেয়ারম্যান কেউ আমাদের পাশে দাঁড়ালেন না। পথ চেয়ে বসে আছি; তারা কখন আসবেন। আমাদের সমস্যা কবে সমাধান করবেন তারা?
একই এলাকার বাসিন্দা ফজিলা বেগম বলেন, করোনা এবং ঘূর্ণিঝড়ের পর দুর্দিনে পড়ে আছি আমরা। রাস্তার ওপর বাস করছি এখন। কেউ আমাদের খবর নেয় না। শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আ.ন.ম আবুজর গিফারী বলেন, এমপি (জগলুল হায়দার) ফোনে সবসময় দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন। তিনি এলাকার খোঁজখবর রাখছেন।