শুরুতেই বলা যায়, নিলুফার মঞ্জুর ছিলেন বাংলাদেশে মানসম্পন্ন স্কুল শিক্ষার একজন পথপ্রদর্শক। সানবিমস স্কুল প্রতিষ্ঠার পেছনে ব্যবসার কোনো উদ্দেশ্য ছিল না তার। শুধু প্রধান লক্ষ্য ছিল, যুদ্ধ-বিধ্বস্ত একটি দেশে মানসম্পন্ন শিক্ষার প্রচলন করা। তাই তো ১৯৭৩ সালে শিক্ষা ব্যবস্থাকে এগিয়ে নিতে কিছু করার স্বপ্ন দেখেছিলেন তিনি। সেই স্বপ্ন পূরণের জন্য ব্যাংকের দ্বারস্থ হতে হয় তাকে। ১৯৭৪ সালে জনতা ব্যাংক থেকে ১০ হাজার টাকা ঋণ নেন। সেই ঋণের টাকায় ১০টি ডেস্ক ও বেঞ্চ কেনেন। তখন মাত্র ১৫ জন শিক্ষার্থী নিয়ে সানবিমসের শুরুটা ছিল নিলুফার মঞ্জুরের নিজের বাসায়। শিক্ষার্থীদের বয়স ছিল ৪ থেকে ৮ বছরের মধ্যে। লাল রঙের ডেস্ক ও বেঞ্চ নিয়ে ১৯৭৪ সালের ১৫ জানুয়ারি সকাল ৮টায় সানবিমসে প্রথম ঘণ্টা বাজে। স্বামী সৈয়দ মঞ্জুর এলাহী অফিসে গেলে বাসায়ই শিক্ষার্থীদের ক্লাস নেওয়ার ব্যবস্থা করতেন নিলুফা। তখন তার সহকর্মী ছিলেন প্রয়াত ফরিদা তাহের ও মুস্তারি খান।
তারা লিভিং রুমের আসবাব সরিয়ে সেখানে বেঞ্চ বসাতেন। ক্লাস শেষে আবার তারা বেঞ্চ সরিয়ে আসবাব সাজিয়ে রাখতেন। এভাবে অনেক প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে এগিয়ে যেতে থাকে সানবিমস। সেই সানবিমসের শিক্ষার্থীর সংখ্যা এখন ১ হাজার ১০০ জনেরও বেশি। শিক্ষকের সংখ্যা ১৬১ জন। নিলুফার মঞ্জুর শুরু থেকেই সানবিমসের সব কিছুর সঙ্গে জড়িত ছিলেন। সেখানে তিনি ‘হেড অব স্কুল’ পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। তার বাবা ড. মফিজ আলী চৌধুরী ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১৯৭২ সালের মন্ত্রিসভার সদস্য।
ফলে দেশপ্রেম মিশে ছিল তার রক্তে। নিলুফার স্বামী সৈয়দ মঞ্জুর এলাহী সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ছিলেন। নিজের প্রতিষ্ঠিত অ্যাপেক্স ফুটওয়্যারের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এ ছাড়া ছেলে সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর, মেয়ে মুনিজে মঞ্জুর, নাতি-নাতনি, ভাই-বোনরা সব সময়ই তার পাশে ছিলেন। উৎসাহ ও অনুপ্রেরণা দিয়ে গেছেন। তার স্বপ্নের সানবিমস ১৯৯৬ সালে জিসিই অর্ডিনারি লেভেল কোর্স চালু করে।
তাদের প্রথম ‘ও’ লেভেল ব্যাচ পাস করে ১৯৯৮ সালে। ২০০৭ সালে সানবিমস উত্তরায় ২ একর আয়তনের নিজস্ব ক্যাম্পাসে যায়। ২০০৮ সালে তাদের প্রথম ব্যাচ ‘এ’ লেভেল শেষ করে। যা এখন দেশের অন্যতম সেরা ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত। নিজের ঘরে শুরু করা সেই সানবিমসের বর্তমানে দু’টি ক্যাম্পাস। একটি ধানমন্ডি ও অপরটি উত্তরায়। কিন্তু নেই সেই দুঃসাহসী উদ্যোক্তা নিলুফার মঞ্জুর। করোনাভাইরাস তাকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দিলো নির্মমভাবে। সত্যিই অতুলনীয় সেই আপার অভাব কোনো দিন পূরণ হবে না। পূরণ হওয়ারও নয়। কর্মচারীরা যাকে ‘ম্যাডাম’ ডাকতে পারতেন না। বরং তিনি ‘আপা’ ডাকতে বলতেন।
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
We use cookies to ensure you get the best experience on our website.